খুলনা: ভূমিকম্প নেই, ভূমিধস নেই তবুও আপনা আপনি ৫-৬ ইঞ্চি হেলে পড়েছে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় নির্মাণাধীন পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন।
এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের পার মাদারতলা এলাকায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের বাস্তবায়নে ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন ‘নির্বাচিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহে উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ২ কোটি ৯০ লাখ ৮০ হাজার ৯০৭ টাকা ব্যয়ে জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার পার মাদার তলা এলাকার পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজের জন্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। খুলনার দৌলতপুরের এম এস রৈতি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পান। ১৮ মাসে কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দিয়ে ৮-০৪-২০১৯ তারিখে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
অথচ অভিযোগ উঠেছে কাজ সম্পন্ন করার নির্ধারিত সময়ের দ্বিগুণ সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত ভবনের মাত্র ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে নির্মাণাধীন ভবনের পেছনের (উত্তর) পাশ দেবে গিয়ে কিছুটা হেলে পড়েছে।
ভবন নির্মাণে বিদ্যালয়ের মাঠের সীমানার উত্তর পাশের জলাশয় ভরা জায়গা বাদ রেখে স্থান নির্ধারণ করে মাটি পরীক্ষা করা হয়। যা পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ইচ্ছায় নির্ধারিত স্থান থেকে একটু পিছিয়ে ডোবার জায়গা নির্ধারণ করা হয়। ওই স্থানে মাটি পরীক্ষা ছাড়াই পাইলিং শুরু হলে তা বেঁকে ও মাটির গভীরে চলে যায়। ক্রেন এনে পাইলিংয়ের যন্ত্র তোলার কারণে প্রায় পাঁচ মাস কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরুর পর তিনতলা পর্যন্ত করা হয়। একপর্যায়ে ভবন দেবে গেলে উত্তর দিকে হেলে পড়ে। ঠিকাদার আবারও ক্রেন দিয়ে ঠেলে ধরে ভবনের নিচে বালু ও ঢালাইয়ের ব্যবস্থা করেন। তারপর চারতলার ছাদ ঢালাই করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্কুল এরিয়ার উত্তর পাশে বড় ধরনের জলাশয় (পুকুর) ছিল। যেখানে মাছ চাষ হতো। বছর পাঁচেক আগে জলাশয়টি বালু দিয়ে ভরাট করা হয়। প্রথমে পিলার (পাইলিং) পোঁতার সময় তখন তা হেলে পড়ে ছিল। যারা কাজ করছিলেন তারা রাগ করে চলে গিয়েছিলেন। পরে আবার বালু দিয়ে কাজ শুরু করে। এখন তো স্কুলে হেলে পড়েছে।
পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাষ মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, স্কুল ভবনটি উত্তর দিকে একটু দেবে গিয়ে হেলে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট সবাই ভবন পরিদর্শন করেছেন। দেবে যাওয়ার বিষয়টির রিপোর্ট তারা ঢাকার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠাবেন।
কাজের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদার টিপু হাওলাদার বাংলানিউজকে, স্কুল ভবনটি মাটিতে সমস্যা থাকার কারণে ৫-৬ ইঞ্চি দেবে গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে, সিদ্ধান্ত দেবে তা আমি মেনে নেবো। সেই অনুযায়ী কাজ করবো। আপাতত মুজাহিক, টাইলস ও রঙের কাজ চলছে। তবে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২
এমআরএম/এএটি