ঢাকা: রাজধানীর পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর, বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতরে হত্যাযজ্ঞের মামলা হাইকোর্টে নিষ্পত্তির পর এবার আপিল বিভাগে চূড়ান্ত আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা আশা করছেন, চলতি বছরেই এ মামলায় আপিল শুনানি হবে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায় বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা। সেই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান।
এ ঘটনায় করা দুটি মামলার মধ্যে হত্যাযজ্ঞের মামলার বিচার কাজ হাইকোর্ট বিভাগে সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলা এখনও নিম্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
হত্যাযজ্ঞের মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় দেন বিচারিক আদালত।
এতে ১৫২ জনের ফাঁসি, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ১৬০ জনের। ১০ বছরসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজা হয় ২৫৬ জনের। খালাস পান ২৭৮ জন।
নিয়ম অনুসরে ডেথ রেফারেন্স আসে হাইকোর্টে। আপিল করেন আসামিরা। খালাসপ্রাপ্ত কয়েকজনের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষও।
হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর রায় দেওয়া হয়। রায়ে ফাঁসি বহাল হয় ১৩৯ জনের। যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া ১৮৫ জনকে। ২২৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। খালাস পান ৪৫ জন।
ওই রায়ের ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত বছরের ৮ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে ১১ হাজার ৪০৭ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন বিচারপতি মো. শওকত হোসেন। ১৬ হাজার ৫৫২ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী। আর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার লিখেছেন ১ হাজার ১০০ পৃষ্ঠার রায়।
এদিকে উচ্চ আদালতে খালাস পাওয়া ও সাজা কমা ৮৩ জনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের করেছে।
আসামিপক্ষেও লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়েছে আপিল বিভাগে।
রায়ের পৃষ্ঠা বেশি হওয়ায় একটি আপিলের পৃষ্ঠা সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৫৬২৩। এতে আপিল করতে অর্থকষ্টে পড়েন আবেদনকারীরা। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পেপারবুক ছাড়া আপিল করতে প্রধান বিচারপতি প্রশাসনিক আদেশ দেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ২০২১ সালে একটা সিপি (লিভ টু আপিল) ফাইল করেছি। আসামিদের পক্ষেও ফাইল করেছে। আমরা অপর্যাপ্ত শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করেছি। যাদের খালাস দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে করেছি। যারা মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন বা অন্যান্যও শাস্তি পেয়েছেন তারাও আপিল করেছেন। সবগুলো আপিল শুনানি হবে। সে ক্ষেত্রে আশা করা যাচ্ছে এ বছরই শুনানি হবে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের আকুল আবেদন হলো সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে থাকা মামলা এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের করা আপিলগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করা হোক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২
ইএস