ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাটি কাটার কাজে দুস্থদের বদলে স্বাবলম্বীর নাম!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২
মাটি কাটার কাজে দুস্থদের বদলে স্বাবলম্বীর নাম!

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরের বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে সরকারের ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এ কাজে দুস্থদের নাম কেটে স্বাবলম্বী ব্যক্তিদের নাম দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে।

 

ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য দায়িত্ব নেওয়া ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রুমানা বেগম এ কাজটি করেছেন।  

অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাখুলী নলছাপাড়ায় গেলে দেখা যায়, ওই এলাকার বাসিন্দা ও পার্শ্ববর্তী জিয়ার বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান তার ছাদ পেটানো একতলা পাকা বাড়ির সামনে তিনটি গরুকে খাবার দিচ্ছেন।  

এসময় তিনি বলেন, মহিলা মেম্বার রুমানা বেগম তাকে মাটি কাটার কাজের জন্য একজনের নাম দিতে বলেন। তিনি ছোট বোন তাহেরা বেগম দরিদ্র হওয়ায় তার নাম দেন। কিন্তু বোনের নামে কার্ড করে দিতে পারেনি মহিলা মেম্বার। বোনের বাড়ি ৯ নম্বর ওয়ার্ডে হওয়ায় সম্ভব হয়নি বলে জানান।

এমতাবস্থায় মহিলা মেম্বার জানান, ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার হাসানুর চৌধুরী তাকে একটা কার্ড দিয়েছে। তবে ৮ নম্বর ওয়ার্ডেরই কোনো মানুষের নাম দিতে হবে। যার নামে কার্ড হবে সে জানবেও না, কাজও করা লাগবেনা এবং টাকাও পাবেনা। এই কার্ডের টাকা তিনিই (মহিলা মেম্বার) তুলে খাবেন।

আব্দুল মান্নান আরও বলেন, মহিলা মেম্বারের বিনিময়ে ভবিষ্যতে বোনের কার্ড করে দেয়াসহ আমার মাধ্যমে লোক নেওয়া হবে এমন সুবিধা দিবেন বলে কথা দেন। এই শর্তের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক ভেবে অন্য কারো এনআইডি কার্ডের ফটোকপি না দিয়ে মহিলা মেম্বারকে নিজ স্ত্রীরটা দিয়ে সহযোগীতা করেছি। আমার স্ত্রী নুর বেগম নীলফামারী উত্তরা ইপিজেড'র কর্মী।  

সৈয়দপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবু হাসনাত সরকার বলেন, অনিয়ম তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লটারির মাধ্যমে তালিকায় স্থান পাওয়া কোন হতদরিদ্র বাদ পড়ে থাকলে তাদের পুনর্বহাল করা হবে। স্বচ্ছল ব্যক্তিদের বাদ দেয়া হবে।  

জানা যায়, বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৩৯ জন করে হতদরিদ্রকে ৪০ দিনের কর্মসূচির জন্য লটারির মাধ্যমে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এই তালিকা থেকে প্রায় ১২৫ জনকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান মেম্বাররা নিজেদের পছন্দের লোককে ঢুকিয়েছে। অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নিয়ে তারা স্বচ্ছল ব্যক্তিকে কাজ দেয়াসহ এরকম ভুয়া নাম দিয়ে জনপ্রতি দৈনিক ৪০০ টাকা হারে ১৬ হাজার টাকা নিজেদের পকেটস্থ করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। এ কারণে ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মাটিকাটার কাজ উদ্বোধনকালে এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে পড়েন মেম্বার চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসন।

এ ব্যাপারে ইউনিয়নবাসী সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।