ঢাকা: রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ শ্রমিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে একশনএইড বাংলাদেশ পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বর্তমান জরিপে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে যাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে তারা কোমর, মাথা, হাত-পা ও পিঠে ব্যথাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) একশনএইড বাংলাদেশ রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে বেঁচে যাওয়া ২০০ জনের মধ্যে পরিচালিত এক জরিপে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
জরিপে বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী বছরগুলোতে পরিচালিত জরিপে দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের শারীরিক স্বাস্থ্যের পর্যায়ক্রমে উন্নতি পরিলক্ষিত হলেও এ বছর অবনতি ঘটেছে। ৩৩ শতাংশের অবস্থা প্রায় স্থিতিশীল ও ১০ দশমিক ৫ শতাংশের অবস্থা সম্পূর্ণ স্থিতিশীল রয়েছে। গত বছর যেখানে মানসিক ট্রমায় আক্রান্ত ছিলেন ১২ দশমিক ৫ শতাংশ, এ বছর সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশে। ৩১ শতাংশ বলেছেন তাদের মানসিক অবস্থা প্রায় স্থিতিশীল ও ২০ দশমিক ৫ শতাংশ সম্পূর্ণ স্থিতিশীল।
এছাড়া রানা প্লাজায় দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৫৩ শতাংশ ও ৪৭ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থানে নিযুক্ত রয়েছেন। এদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ বলেছেন শারীরিক অক্ষমতার কারণে তারা কাজ করতে পারেন না ও ১০ শতাংশ এখনও মানসিক যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। আহত শ্রমিকদের মধ্যে ঘন ঘন কাজ পরিবর্তন করার প্রবণতা দেখা গেছে, যার কারণ হিসেবে শারীরিক সীমাবদ্ধতার জন্য দীর্ঘ সময় একই ধরনের কাজ করার অক্ষমতার বিষয়টি উঠে আসে জরিপে।
জরিপ অনুসারে, ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ তাদের আদি পেশা গার্মেন্টসে ফিরে গেছেন এবং আরও ৮ শতাংশ টেইলারিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছেন। অনেকেই তাদের পেশা বদলে গৃহকর্ম, দিনমজুরি, কৃষিকাজ, বিক্রয় ও গাড়ি চালানোর মতো পেশায় নিযুক্ত হয়েছেন।
জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগের আয় করোনা মহামারির প্রভাবে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন যে, মহামারি চলাকালীন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার মতো পর্যাপ্ত অর্থ তাদের কাছে ছিল না। ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন তারা নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করতে পারেননি এবং ২২ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন তারা সন্তানের সঠিক যত্ন নিতে পারেননি। ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশকে মহামারি চলাকালীন তাদের পরিবারের খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য ঋণ করতে হয়েছে।
জরিপ থেকে পাওয়া তথ্য মতে, দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ৩৬ শতাংশের পারিবারিক আয় ৫ হাজার টাকার কম এবং ৩৪ শতাংশের ১০ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পারিবারিক আয় রয়েছে। ৩৫ শতাংশ বলেছেন যে তাদের মাসিক খরচ ১০ হাজার টাকার বেশি এবং ৩০ শতাংশের ১৫ হাজার টাকারও বেশি যার অধিকাংশই খরচ হয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়, বাসা ভাড়া, সন্তানের শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২২
জিসিজি/আরবি