সিরাজগঞ্জ: শ্রমিক সংকটের মধ্যে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষকদের মধ্যে আশার আলো হয়ে এসেছে অত্যাধুনিক ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মেশিন কম্বাইন্ড হারভেস্টার।
চলতি বোরো মৌসুমে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হলেও অতিবৃষ্টি আর শ্রমিক সংকটে বিপাকে পড়েন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
জানা গেছে, প্রতিবছর ইরি ও বোরো ধান কাটার মৌসুমে রায়গঞ্জের তাড়াশ অঞ্চলে শ্রমিকের চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদার পাশাপাশি বেড়ে যায় পারিশ্রমিকও। এতে বোরো ধান উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এজন্য কৃষকের দুশ্চিন্তা লাঘবে রায়গঞ্জে আনা হয়েছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন।
মেশিনটি অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ধান কাটা ও মাড়াই করতে পারে। শুধু রোদে শুকিয়ে ধান ঘরে তুলতে হয়।
কম্বাইন্ড হারভেস্টার চালক কামরুল ইসলাম বলেন, এ মেশিন দিয়ে খুব সহজেই এখন ধান ঘরে তুলতে পারছেন কৃষকরা। প্রতি ঘণ্টায় দুই থেকে তিন বিঘা জমির ধান কাটা যাচ্ছে। এতে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ লিটার তেল খরচ হচ্ছে।
দুই বিঘা জমির ধান কাটতে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা খরচ হয়। অথচ শ্রমিক দিয়ে ধান কাটালে পাঁচ থেকে সাতজন শ্রমিক সারা দিনে এক বিঘা জমির ধান কাটতে পারেন। তাতে বিঘা প্রতি খরচ হয় তিন থেকে চার হাজার টাকা।
রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় ১২টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মেশিনের দাম ৩০-৩২ লাখ টাকা। সরকার প্রতিটি মেশিনের ওপর ১৪ লাখ টাকা ভর্তুকি দিয়েছে।
মেশিনের সাহায্যে ধান কেটে ও মাড়াই করে শুধুমাত্র রোদে শুকিয়ে ঘরে তুলতে হয়। চালক অভিজ্ঞ হলে ঘণ্টায় এক একর জমির ধানও কাটা সম্ভব। কিন্তু রায়গঞ্জে এখনও অভিজ্ঞ চালক না থাকায় ঘণ্টায় দেড় থেকে দুই বিঘা জমির ধান কাটতে পারছেন কৃষকরা। এছাড়া জমিগুলো সমতল হলে আরও বেশি ধান কাটা যেত।
প্রতিবছরই বোরো ধান কাটার সময় শ্রমিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। এ কারণে সময় মতো ধান ঘরে তুলতে না পেরে বৃষ্টি ও অকাল বন্যাতে কৃষকের ধান নষ্ট হয়ে যায়। এখন কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে স্বল্প খরচে ধান ঘরে তোলা যাচ্ছে। এছাড়া আরও পাঁচটি রিপার মেশিন আনার চেষ্টা চলছে। তবে ওই মেশিন দিয়ে ধান কাটা যাবে কিন্তু মাড়াই করতে শ্রমিক লাগবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২২
এফআর/আরবি