ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জয়পুরহাটে কিডনি বেচাকেনা চক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৬ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২২
জয়পুরহাটে কিডনি বেচাকেনা চক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার

জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের কালাই ও পাঁচবিবি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে কিডনি বেচাকেনা চক্রের সঙ্গে জড়িত ৭ দালালকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ।  

শনিবার (১৪ মে) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানিয়েছেন জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা।

 

গ্রেফতার দালাল চক্রের সদস্যরা হলেন- কালাই উপজেলার থল গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে সাহারুল ইসলাম (৩৮), একই উপজেলার উলিপুর গ্রামের ফরিদুল ইসলামের ছেলে ফরহাদ হোসেন ওরফে চপল (৩১), জয়পুর বহুতি গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে মোশারফ হোসেন (৫৪), ভেরেন্ডি গ্রামের জাহান আলীর ছেলে শাহারুল ইসলাম (৩৫), জয়পুর বহুতি গ্রামের মৃত মোবারক হোসেনের ছেলে মোকাররম হোসেন (৫৩), দূর্গাপুর গ্রামের মৃত বছির উদ্দিন ফকিরের ছেলে সাইদুল ইসলাম ফকির (৪৫) ও পাঁচবিবি উপজেলার গোড়না আবাসনের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৪০)।  
  
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার রাতে জয়পুরহাটের কালাই ও পাঁচবিবি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।  

তিনি বলেন, দালালরা দীর্ঘদিন ধরে জয়পুরহাটের মাত্রাই ও উদয়পুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার নিরীহ, ঋণগ্রস্ত ও হতদরিদ্র মানুষদের ফুসলিয়ে টাকার লোভ এবং অল্প সময়ে বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে নারী এবং পুরুষদের কিডনি বিক্রি করাতেন। এসব নিরীহ মানুষরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দালালদের খপ্পরে পরে প্রথমে ৪-৫ লাখ টাকার চুক্তিতে তাদের মূল্যবান কিডনি বিক্রি করে দেন। পরে ভারত ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে তাদের কিডনি দিয়ে নামমাত্র চিকিৎসা নিয়ে যখন দেশে ফেরেন, তখন দালালরা বিমান বন্দরেই তাদের হাতে ১-২ লাখ টাকা ধরিয়ে দিয়ে সেখান থেকে বিদায় করেন।

পরবর্তীকালে কিডনি দাতারা নিজের অঙ্গ বিক্রি করে ঝুঁকি নিয়ে জীবন অতিবাহিত করলেও লাভবান হচ্ছেন এসব দালালরা। আবার নিজের কিডনি বিক্রি করে প্রতারিত হয়ে নতুন করে দালাল বনে যাচ্ছেন কোনো কোনো কিডনি দাতারা।  

তিনি আরও জানান, গ্রেফতার দালালরা কিডনি বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবদে স্বীকার করেছেন। কিডনি বেচাকেনা প্রতিরোধে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।  

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, সদর সার্কেল মোসফেকুর রহমান, পাঁচবিবি সার্কেল ইশতিয়াক আলমসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা।

জানা যায়, বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫শ জনেরও বেশি অভাবী মানুষ তাদের শরীরের একটি করে কিডনি বিক্রি করেছেন। আর এসব ঘটনায় ১৫টি মামলায় এ পর্যন্ত ১২১ জনকে আসামি করা হলেও গ্রেফতার হয়েছে মাত্র ৪৭ জন।   

বাংলাদেশ সময়: ০১২৮ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।