ঝালকাঠি: ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল, জেলা প্রশাসক ভবন এলাকা, কলেজ মোড় বাস স্টেশন এলাকা, কুমারপট্টি রোড এলাকা, শিল্প বা বিসিক এলাকায় শব্দের মাত্রা চিহ্নিতকরণে জরিপ করা হবে।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সবার সমন্বিত উদ্যোগে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করলে শব্দদূষণ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) প্রশাসক কার্যালয়ের হলরুমে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প’র আওতায় জেলা সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভায় বক্তারা একথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ডিজিটাল প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে শব্দদূষণের ক্ষতিকারক দিক, শব্দদূষণের কারণ, উচ্চ শব্দের হর্ন, শব্দদূষণের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড, এলাকাভিত্তিক নিরব এলাকা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের বিদ্যমান আইন ও বিধিমালা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে উপস্থিত সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শহর জীবনে স্বাস্থ্য ঝুঁকির একটি অন্যতম কারণ শব্দদূষণ। মানুষ ও প্রাণীর শ্রবণ সীমা অতিক্রম করে এবং শ্রবণ শক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, সেটাই শব্দ দূষণ। ২০ ডেসিবেল শব্দের মাত্রা হলেই আমরা সেটি শুনতে পাই। এর কম হলে পারি না। ২০ থেকে ২০ হাজার ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ আমরা শুনতে পারব। এর চেয়ে বেশি হলে আমাদের শ্রবণ শক্তি তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নির্মাণকাজ, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদির কারণে এ সমস্যা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শব্দদূষণের ফলে অনেকেই বৃদ্ধাবস্থায় শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলছেন। যারা চালক বা বাহিরে কাজ করেন তারা এ শব্দদূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। এছাড়া শব্দদূষণের প্রভাবে দুশ্চিন্তা, অবসাদ, উদ্বিগ্নতা, নিদ্রাহীনতা, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিত উদ্যোগের আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, নিজস্ব কাজের পাশাপাশি সবাই যদি শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তাহলে সমাজে কার্যকর প্রভাব পড়বে। শব্দদূষণের জন্য মূলত গাড়ির হর্ন সবচেয়ে বেশি দায়ী। হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো থেকে চালকদের বিরত থাকতে হবে। যতটুকু মাত্রায় হর্ন ব্যবহার করলে মানুষের ক্ষতি বা শব্দদূষণ হবে না, ততটুকু মাত্রায় হর্ন বাজাতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- সদর হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. এইচএম জহিরুল ইসলাম, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইমাম হোসেন জুয়েল, সিনিয়র পুলিশ পরিদর্শক আমজাদ হোসাইন, সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান, শহর পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) আনিচুর রহমান, সাবেক জিপি ও আখড়াবাড়ি মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট তপন কুমার রায় চৌধুরী, সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক আশীষ হালদার, সহকারী শিক্ষা খাদিজা আক্তার, বাস মালিক সতিমির সহ সভাপতি মাহবুবুল হক দুলাল, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা দিলীপ হালদার, নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের পক্ষে সাংবাদিক আতিকুর রহমান, বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিক নেতা আব্দুর রাজ্জাক রনি, স্কুল শিক্ষার্থী মাহিরা জান্নাত, হাসান খন্দকার।
ডিজিটাল প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তথ্যপত্র উপস্থাপন করেন ইকিউএম কনসাল্টিং লিমিটেডের পরামর্শক মাসুম রাজা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজনে ইকিউএম কনসাল্টিং লিমিটেড এবং বায়ুমণ্ডলীর দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর বাস্তবায়ন করে। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো- জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ উন্নয়নে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ বাস্তবায়নে অংশীজনদের দক্ষতা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে দূষণের মাত্রা, উৎস এবং এর প্রভাব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে কার্যকরী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২২
আরএ