খাগড়াছড়ি: মাল্টা সুস্বাদু ফলের মধ্যে অন্যতম। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলটির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের আবহাওয়া ও জলবায়ু অনুকূল।
সুস্বাদু ফল মাল্টা কমলার একটি উন্নত জাত। পাহাড়ে বাণিজ্যিক পর্যায়ে মাল্টার চাষাবাদ ঢের বেড়েছে আগের তুলনায়। খাগড়াছড়ির সব উপজেলায় মাল্টার চাষাবাদ করছেন সাধারণ কৃষকরা। অনেকের বাড়ির আঙ্গিনায়ও হচ্ছে মাল্টার চাষ।
অনেকে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করে দেখেছেন লাভের মুখ। বিশেষ করে মংচিংউ মারমা, বিভূতি রঞ্জন চাকমা ও বাবু মারমার মত শতশত কৃষক মাল্টা ফলের বাগান করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। শুধু তা নয়; এখন আর বিদেশি মাল্টা দেখা যায় না খাগড়াছড়িতে। উল্টো জেলার বাইরের ক্রেতারা আসেন মাল্টা কিনতে।
মাল্টা চাষী মংচিংউ মারমা বলেন, আমার বাড়ির পাশে এক কানী জায়গায় ৯১টি মাল্টা চারা লাগিয়ে ছিলাম। ইতোমধ্যে মাল্টা বিক্রি করে এক লাখ টাকার মত আয় করেছি। আশা করি, এই মৌসুমে দুই লাখ টাকা আয় ছাড়িয়ে যাবে।
স্থানীয় ফল বিক্রেতা জমির উদ্দিন বলেন, বারি মাল্টা-১ বেশ সুস্বাদু। ক্রেতারা এর বেশ প্রশংসা করে। যেহেতু কোন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার হয় না তাই বিক্রি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
খাগড়াছড়ির উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গায়েত্রী খীসা বলেন, আমরা চাষীদের সাথে যোগাযোগ রাখছি। তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করছি। মাল্টা চাষ করে অধিকাংশ কৃষকের ভাগ্য বদলেছে।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক বাছিরুল আলম বলেন, খাগড়াছড়িতে মাল্টা চাষ বাণিজ্যিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুরুতে অনেকে শখের বসে বাড়ীর আঙ্গিনায় এক দুইটি গাছ লাগালে ফলন ভালো হয়। পরে তারা বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করছে। যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষিবিদরা জানিয়েছেন, জেলার মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় এ ফলটি এই অঞ্চলে খুবই সম্ভাবনাময়। ফলে কৃষকদের কাছে বারি মাল্টা-১ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ২০০৬ সালে খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে কৃষি বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছিলেন মাল্টার উন্নত জাত বারি মাল্টা-১। অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে মাল্টা ফল হার্বেস্টের উপযুক্ত সময় হলেও পাহাড়ে দুই সপ্তাহ আগেই মাল্টা ফল উত্তোলন শুরু হয়।
এ বছর খাগড়াছড়িতে প্রায় ৫২৫ হেক্টর জমিতে মাল্টার বাণিজ্যিক বাগান গড়ে উঠেছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৩৯৮ মেট্রিক টন। বাজারজাত সুবিধা বাড়ানো গেলে পাহাড়ে মাল্টা চাষের মাধ্যমে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশাবাদ কৃষি বিজ্ঞানীদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, ২০ নভেম্বর, ২০২২
এডি/এসআইএ