ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জোয়ার না হলে লঞ্চ আসে না ঘাটে

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
জোয়ার না হলে লঞ্চ আসে না ঘাটে

বরগুনা: বরগুনা-ঢাকা ও আমতলী-ঢাকা নৌ-রুটে ডুবোচর এবং নাব্য সংকটের কারণে এবার লঞ্চ চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। নাব্য সংকটে বরগুনা নদীবন্দর (লঞ্চঘাট) থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে চর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় লঞ্চ।

ফলে পন্টুন না থাকায় লঞ্চে উঠতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। এরপরও তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয় ঘাটের টিকিটের ১০ টাকা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। রোববার (২০ নভেম্বর) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে ঘুরে ও ঘাট সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল ৯টার দিকে জোয়ারে খাকদন নদীতে পানি বাড়লে বরগুনা-ঢাকা রুটের লঞ্চগুলো যাত্রী নিয়ে বরগুনা নদীবন্দরে আসতে পারে। দুপুর ১২টার দিকে জোয়ার চলে গেলে ফের বন্ধ হয় লঞ্চ চলাচল। তাই দুপুর ১২টার আগে নদীবন্দর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ঢলুয়া ইউনিয়নের খাকদন নদীর চরে নোঙর করা হয়। সেখান থেকেই যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় লঞ্চ। এভাবে নাব্য সংকটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এই নৌপথে লঞ্চ চলাচল। এখন নির্ভর করছে জোয়ার-ভাটার ওপর। সব মিলিয়ে এই নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীরা এখন মহাদুর্ভোগে পড়েছেন। ঢাকাগামী যাত্রীদের অভিযোগ নদী বন্দরের সুবিধা না দিয়েই তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ১০ টাকা মূল্যের ঘাট টিকিটের দাম রাখা হচ্ছে।

কিন্তু নদীতে পানি কম থাকায় আধা ডুব অবস্থায় আটকে যায় লঞ্চ। এ সমস্যায় গত দুই দিন ধরে এই নৌপথে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। সকাল ৯টার দিকে জোয়ারে নদতে পানি বাড়লে কয়েক ঘণ্টার জন্য লঞ্চ বন্দরে আসে পণ্য খালাস করতে। তবে দুপুর ১২টার দিকে জোয়ার চলে গেলে লঞ্চ চলাচল আবারও বন্ধ হয়ে যায়। তাই এই সময়ের আগেই লঞ্চ সরিয়ে নেওয়া হয় বন্দর থেকে।

পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, সরকারের নির্ধারিত ঘাট ছাড়া টিকিট নেওয়া ঠিক নয়। যাত্রীদের সেবা নিশ্চিতের জন্য ঘাটের ব্যবস্থা না করে এবং নির্ধারিত পন্টুন ছাড়া অন্য কোথাও টিকিট নেওয়া হলে এটা কর্তৃপক্ষের অন্যায় কাজ। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

যাত্রীদের অভিযোগ, একে লঞ্চে উঠতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে, আবার ঘাটের টাকাও দিতে হয়েছে।

পূবালী লঞ্চের মাস্টার জহিরুল ইসলাম বলেন, বরিশালের পর বরগুনা পর্যন্ত ঝালকাঠির গাবখান মোহনা ছাড়া আর কোথাও নৌ-সংকেত নেই। ভরা মৌসুমে এ রুটে লঞ্চ চালাতে বেশ বেগ পেতে হয়। বিআইডব্লিউটিএও নৌ সঙ্কেতের জন্য কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বরগুনার সহকারী বন্দর কর্মকর্তা নিয়াজ মোহাম্মদ খান বলেন, নাব্য সংকটের কারণে লঞ্চ বরগুনা ঘাটে নোঙর করতে না পারায় পোটকাখালী থেকে যাত্রী উঠিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

পোটকাখালী অস্থায়ী ঘাটে টিকিট নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে বাংলানিউজকে বলেন, নাব্য সংকট সমাধানের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।   আর টিকিটের বিষয়ে  তিনি বলেন, যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত ও নির্ধারিত টার্মিনালের বাইরে ঘাটটিকিট নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেবা না দিয়ে টাকা নেওয়া অপরাধ। আমি খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।