পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ২ নম্বর আলীপুরা ইউনিয়নে কাজী (নিকাহ্ রেজিস্ট্রার) নিয়োগে আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম শাহজাদা ও উপজেলার সাব রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে।
রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদে এ নিয়োগ পরীক্ষার ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে অবৈধভাবে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া করায় বিবাহ ও নিকাহ্ রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ প্রত্যাশী ১৫ জন আবেদনকারীর মধ্যে মাত্র পাঁচজন আবেদনকারী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এই পাঁচজনের মধ্যে চারজনই আপন ভাই এবং একজন তাদের মেয়ে জামাই।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ এর ৬(১) ধারার বিধান মোতাবেক উল্লেখ আছে যে, ‘নতুন কোনো অধিক্ষেত্র সৃষ্টির তারিখ থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা রেজিস্ট্রার বা সাব রেজিস্ট্রারকে অবহিত করবে।
উপবিধি (২)১ এ বলা হয়েছে, নতুন অধিক্ষেত্র সৃষ্টির তথ্য অবহিত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা রেজিস্ট্রার বা সাব রেজিস্ট্রার নিকাহ রেজিস্ট্রার লাইসেন্স দেওয়ার উদ্দেশে পনের দিন সময় দিয়ে আগ্রহী প্রার্থীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করবেন।
কিন্তু উল্লেখিত কোনো বিধি অনুসরণ না করে বিধি বহির্ভূতভাবে ২০১৯ সালের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বর্তমানে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কাজী (নিকাহ্ রেজিস্ট্রার) পদে আবেদনকারী মো. মাহতাব হোসেন বলেন, এটা ২০১৯ সালের বিজ্ঞপ্তি কিন্তু এর পর সাব রেজিস্ট্রার ফজলে রাব্বি, কার্তিক ঘোষ, এর পর এক নারী এবং বর্তমান সাব রেজিস্ট্রার মোবারক হোসেন এসেছেন। বিগত সাব রেজিস্ট্রাররা কেউ নিয়োগ দিতে পারেনি।
তবে বর্তমানে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করেই, অবৈধভাবে ২০১৯ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে সাইফুল ইসলাম নামে একজনের কাছ থেকে এমপির লোক নাইম বশির সাত লাখ টাকা নিয়েছেন। আর সাইফুলের আপন চার ভাই এবং তাদের ভাইজি জামাই ছাড়া আজ কেউ পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
এ বিষয়ে আমরা আদালতে মামলাও করেছি, আদালত তাদের শোকজ নোটিশ দিয়েছেন কিন্তু তারা উত্তর দিচ্ছেন না। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই, এবং এই অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে পটুয়াখালী ৩ আসনের সংসদ সদস্য নিয়োগ পরীক্ষা কমিটির সভাপতি এস এম শাহজাদার ঘনিষ্ট জন হিসেবে পরিচিত জনৈক নাইম বশির বলেন, ‘এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আপনার এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং প্রমাণ পেলে নিউজ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা বলেন, ‘আর্থিক লেনদেন করার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না, অভিযোগটি সঠিক নয়। তবে এই নিয়োগ কমিটির পাঁচজন সদস্য সবাই আমরা উপস্থিত রয়েছি। কমিটির সদস্য সচিব সাব রেজিস্ট্রার মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছেন এবং তাদের অনুমতি নিয়েই ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটলে সেটি মন্ত্রণালয় বিবেচনা করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দশমিনা উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার মোবারক হোসেন বলেন, যেহেতু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয় সে কারণ বিবেচনায় এখন নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। এখানে আইনের ব্যত্যয় ঘটার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
আরএ