ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সেই নবজাতককে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল পুলিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
সেই নবজাতককে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল পুলিশ

রাজশাহী: অবশেষে বিক্রি করা ১০ দিনের নবজাতককে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। বর্তমানে ওই শিশুকে বিক্রির কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

এ ঘটনায় ওই নবজাতকের বাবাসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে, রাজশাহীতে নবজাতককে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাবা।

অভিযুক্ত বাবার নাম রহিদুল ইসলাম। রোববার (২০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় পুলিশকে ফোন করে অভিযোগ করেন শিশুর মা জান্নাতুন বেগম। খবর পেয়ে রাজপাড়া থানা পুলিশ দুপুরে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট থেকে ১০ দিনের নবজাতককে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। যদিও শিশুটির বাবার দাবি, ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে না পেরে তিনি সন্তানকে বিক্রি করেছিলেন।

এ ঘটনায় স্বামী রহিদুল ইসলামকে আসামি করে শিশুর মা জান্নাতুল বেগম মহানগরীর রাজপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন স্ত্রী জান্নাতুন বেগম।

রহিদুল ইসলাম নওগাঁ জেলার সদর উপজেলার হানাইগাড়ি গ্রামের লক্ষ্মীন শাহীদার ছেলে। তিনি স্ত্রী জান্নাতুনকে নিয়ে রাজশাহী মহানগরীর সিলিন্দা এলাকায় বাস করতেন।

এ ঘটনায় পুলিশ রহিদুলসহ তিনজনকে আটক করছে। আটক অন্য দুইজন হলেন- কাঁকনহাট পৌর এলাকার বিউটি বেগম ও মহাগরীর দাশপুকুর এলাকার অয়েজ উদ্দিনের ছেলে তরিকুল।  

নবজাতক শিশুটির মা জান্নাতুন বেগম জানান, ১০ নভেম্বর মহানগরীর কেয়ার নার্সিং হোমে তিনি একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন।  চিকিৎসার কথা বলে তার কোল থেকে ওই শিশুটিকে নিয়ে যান রহিদুল। এরপর রহিদুল তাকে বলেন শিশুটি মারা গেছে। জান্নাতুন ক্লিনিক থেকে বাড়ি ফেরার পর শিশুর কবর দেখাতে বললে রহিদুল কবর দেখাননি। এ নিয়ে ক্লিনিক থেকে ফেরার পর থেকে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ লেগেই ছিল। রোববার সকালে জান্নাতুনের আত্মীয়-স্বজন এবং স্থানীয় লোকজন রহিদুলকে জেরা করলে তিনি স্বীকার করেন শিশুটি বিক্রি করে দিয়েছেন। পরে তিনি পুলিশকে জানান।

জানতে চাইলে রাজপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজল নন্দি বলেন, রোববার সকালে তাদেরকে ফোনে বিষয়টি জানানো হয়। পরে তারা গিয়ে শিশুটির বাবা রহিদুলকে আটক করে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে, জন্মের পরের দিনই তিনি মহানগরীর দাশপুকুর এলাকার অয়েজ উদ্দিনের ছেলে তরিকুলের কাছে ৩০ হাজার টাকায় নবজাতক শিশুকে বিক্রি করে দিয়েছেন। এরপর তরিকুলকে আটক করা হয়। আটকের পর তিনি জানান গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট এলাকার সিরাজুল ইসলাম নামে তার এক পূর্বপরিচিত লোকের কাছে শিশুটিকে দিয়েছেন। তার কাছেই শিশুটি আছে। পরে পুলিশের একটি দল গিয়ে ওই শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত রহিদুল, তরিকুল ও সিরাজের স্ত্রী বিউটি বেগমকে আটক করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রহিদুল দিনমজুরের কাজ করে পাশাপাশি কবিরাজি করেন। থানায় জিজ্ঞাসাবাদে রহিদুল জানিয়েছেন, নার্সিং হোমে তার স্ত্রীর সন্তান প্রসব হওয়াতে গিয়ে প্রায় ২৪ হাজার টাকা বিল হয়েছিল। এই টাকা তার কাছে ছিল না। এজন্যই সন্তান বিক্রি করা টাকা দিয়ে তিনি স্ত্রীকে নার্সিং হোম থেকে বাড়ি নিয়ে গেছেন। তাই তারা পুরো বিষয়টি এখন খতিয়ে দেখছেন বলে উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।