ঢাকা: কর্মক্ষেত্র এবং সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন হয়রানি বন্ধ করতে আইন প্রণয়ন ও আইএলও কনভেনশন-১৯০ অনুসাক্ষরসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) নারী কমিটি।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টস ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে ‘সবার মাঝে ঐক্য গড়ি, নারী নির্যাতন বন্ধ করি’ স্লোগানে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।
বর্তমানে নারীর প্রতি সহিংসতা বেশ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে উল্লেখ করে আইবিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, গত দুই বছরে (২০২০-২১) ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মোট ঘটনা ছিল ২১ হাজার ৭৮৯টি। যা এর আগের বছরে ছিল ১৮ হাজার ৫০২টি। সে হিসাবে করোনা মহামারীতে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। বৈষম্যের কারণেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
লিখিত বক্তব্য পাঠকালে আইবিসির নারী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালমা আক্তার বলেন, দেশে ৭৪ দশমিক ৭ শতাংশ নারীকে রাতের শিফটে কাজ করতে হয়। কর্মস্থলে ডে কেয়ার সেন্টার ও বিশ্রামের জায়গা না থাকায় রাতে কাজের সময় নিরাপত্তা সংকটে থাকে বেশির ভাগ নারী। তবে বাংলাদেশ শ্রম আইনে রাত দশটার পরে কোনো নারীকে না রাখার নির্দেশনা আছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তাদেরকে মধ্যরাত অবধি কাজ করতে বাধ্য করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনো রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা যানবাহন ছাড়াই তাদের ছুটি দেয়া হয়। ফলে বাড়ি ফেরার পথে ধর্ষণ, সংঘবদ্ধধর্ষণ এমনকি হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।
নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আইএলও সনদ ১৯০ অনুসাক্ষর করার দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারীর উপর সহিংসতা ও হয়রানি বন্ধ করতে আইএলও সনদ ১৯০ গৃহীত হয়। ২০১৯ সালের ২১ জুন, জেনেভায় আইএলও-এর একশ আটতম অধিবেশনে গৃহীত এই সনদটিতে বাংলাদেশ এখনও অনুসাক্ষর করেনি। অবিলম্বে আইএলও কনভেনশন-১৯০ সনদে অনুসাক্ষর করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় আইবিসি নারী কমিটি কিছু সুপারিশ ও দাবি পেশ করে। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আইবিসি নারী কমিটির সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সালমা আক্তার। বক্তব্য রাখেন আইবিসির নারী বিষয়ক সম্পাদক চায়না রহমান, লাভলী ইয়াসমিন ও তাহমিনা রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২২
ইএসএস/এসআইএ