ঢাকা: ইউনিসেফ কক্সবাজারের ২২টি স্কুলে ১১০টি শ্রেণিকক্ষ বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে। ওই ১১০টি শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ৭৬টি নতুন নির্মিত ও ৩৬টি সংস্কার করা হয়েছে।
এটি কক্সবাজারে বাংলাদেশি শিশুদের সহযোগিতায় ইউনিসেফের উদ্যোগের একটি অংশ। কক্সবাজার মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার চাপ মোকাবিলা করছে। ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারকে অনুদান দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষাদান ও শিক্ষাগ্রহণ শক্তিশালী করতে সহায়তা করছে, যার মাধ্যমে কক্সবাজারের ৬৫৭টি স্কুল উপকৃত হয়েছে। ‘স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্ল্যান’ শীর্ষক ওই অনুদান কর্মসূচি স্কুলগুলোকে তাদের প্রয়োজনীয় চাহিদা শনাক্ত ও তা সমাধানের সুযোগ করে দেয়।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেছেন, শিশুরা তাদের জেগে থাকা সময়ের একটি বড় অংশ কাটায় শ্রেণিকক্ষে। সত্যিকার অর্থেই শ্রেণিকক্ষ তাদের কাছে দ্বিতীয় বাড়ির মতো মনে হওয়া উচিত। গবেষণায় দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষ যখন শিশুবান্ধব ও নিরাপদ হয় তখন শিশুরা শিখতে অনুপ্রাণিত হয়। তাদের স্কুলে ভর্তি ও উপস্থিতি বেড়ে যায়। একইসঙ্গে স্কুল শেষ করার হারও বাড়ে।
শ্রেণিকক্ষগুলো নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর অ্যাডুকেশনের সহায়তায়। এগুলো শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য ডেস্ক, বেঞ্চ ও চেয়ার দিয়ে সম্পূর্ণভাবে সজ্জিত। ইউনিসেফ ওইসব স্কুলে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য র্যাম্প ও শিশুবান্ধব স্যানিটেশন সুবিধাও নিশ্চিত করেছে।
নির্মাণকাজের আগে ইউনিসেফ কক্সবাজারের ১০০টি স্কুলের প্রয়োজনীয়তা বিশদভাবে মূল্যায়ন করে এবং সেখান থেকে শিশুবান্ধব শ্রেণিকক্ষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এমন ২২টি স্কুল চিহ্নিত করা হয়। নতুন নির্মিত ও সংস্কার করা ওই ১১০টি শিশুবান্ধব শ্রেণিকক্ষ ইউনিসেফের পক্ষ থেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেছেন, কক্সবাজারের আট উপজেলার স্কুলগুলোতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর বিষয়টি ছিল শিশুদের জন্য একটি সমস্যা। এ স্কুলগুলো এখন আমাদের শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ প্রদান সম্ভব করেছে, যা কোভিড-১৯ এর সংকট থেকে পুনরুদ্ধারের পথে শিশুদের লেখাপড়ার জন্য অপরিহার্য।
স্কুলে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর চাপ গোটা দেশেই রয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলে, দেশে এক হাজার ৬০০টির বেশি সরকারি স্কুলে মাত্রাতিরিক্ত শিক্ষার্থী রয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে গড়ে প্রতি শ্রেণিকক্ষে ৪০ জনের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। যদিও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মান অনুযায়ী প্রতি শ্রেণিকক্ষে ৪০ জন বা তার কম শিক্ষার্থী থাকা উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২২
টিআর/আরবি