মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ হাসানুল সিরাজীর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদ ও শিক্ষক-কর্মচারীদের ২৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতাদির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, 'কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের সুনাম শুনে আমাদের সন্তানদের ভর্তি করেছি। কিন্তু এখন দেখি সেখানে নানা ধরণের অব্যবস্থাপনা। আমরা সন্তানদের একটি প্রত্যয়নপত্র বা কোন কাগজপত্র আনতে গেলে অধ্যক্ষ স্যার দিনের পর দিন ঘুরান এবং বিভিন্ন ধরণের জটিলতা তৈরি করেন। আমরা তার কাছে অভিভাবক হিসেবে তেমন কোন সম্মানও পাই না। তার অব্যবস্থাপনার কারণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। অধ্যক্ষ আসলে শিক্ষার্থীবান্ধব নন, তার অপসারণ দরকার। '
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন,' করোনার সময়ে শিক্ষার্থীরা বেতনসহ অন্যান্য সকল ফি প্রদান করেছে কিন্তু এই সময়ে কলেজের কোন প্রকার উন্নয়ন হয়নি এবং উক্ত সময়ের আগে থেকেই শিক্ষক-কর্মচারীদের ২৪ মাসের বেতন-ভাতাদি বকেয়া রয়েছে। তাহলে সে সময়ের আয়ের অর্থ কোথায় গেল? কলেজের অভ্যন্তরীণ হিসাব নিরীক্ষার জন্য দুটি কমিটি গঠন করা হলেও অধ্যক্ষের অসহযোগিতার কারণে অডিট করা সম্ভব হয় নাই। অধ্যক্ষের আর্থিক দুর্নীতি প্রকাশ পাবে বিধায় তিনি অডিট করতে বাঁধা দেন । অবিলম্বে এ অধ্যক্ষের অপসারণ করে কলেজটিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা ও ২৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতাদি প্রদানের দাবি জানান। '
কলেজের প্রভাষক আজিজুল ইসলাম বলেন, 'কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে মো. হাসানুল সিরাজী যোগদানের পরই কলেজের ধ্বংস শুরু হয়েছে। তিনি কলেজে এসেই শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করেন এবং একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি কলেজে যোগদান করার সময় বিশাল অংকের কলেজ ফান্ড ছিল। তিনি এসেই তার বাসভবন সংস্কারের, শিক্ষক মিলনায়তন সংস্কারসহ বিভিন্ন কাজের অজুহাতে লাখ লাখ টাকা আত্মাসাৎ করেছেন। '
কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, 'হাসানুল সিরাজী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় গত ২০২০ সালের ২২ মার্চ থেকে প্রায় ৪ মাস বাগেরহাট জেলার কাজি আজাহার আলী কলেজ কর্মরত ছিলেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন পাবলিক ও অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় একাই সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যার ফলে পরীক্ষায় বিভিন্ন অনিয়ম ও জটিলতা দেখা যায়। এসব অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে স্থানীয় প্রশাসন ও বোর্ড কর্তৃক তাকে একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করায় কলেজটির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। আমরা অধ্যক্ষের তদন্তপূর্বক অবিলম্বে অপসারণ ও ২৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা দাবি করছি। '
মানববন্ধনে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
এসএম