নিউইয়র্ক: ‘ব্লাড টেলিগ্রাম’ বই এর উদ্ধৃতি দিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. একে মোমেন বলেছেন, নিক্সন-কিসিঞ্জার একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আইন লংঘন করে পাকিস্তানিদের গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছিলেন।
‘নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ’ল সোসাইটির নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
এছাড়া গ্লোবাল ওয়ার্মিং এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোর ‘রুল অব ল’ মেনে চলার বিষয়ে আমেরিকান আইনজীবীদের ভুমিকা রাখারও অনুরোধ জানান তিনি। পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে তাদের সম্পৃক্ত হবারও আহবান জানান রাষ্ট্রদূত।
রোববার উডসাইডের গুলশান টেরেসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে টোরো ’ল কলেজের ডীন ডেনিয়েল ডার্বি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক কারনে স্টিফেন র্যাপ কিছু ‘নয়েজ’ (উচ্চবাচ্য) করেছেন, কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে কোন অভিযোগই আনতে পারেনি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে।
ড. আব্দুল মোমেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের আন্তরিকতা ও বিভিন্ন কার্যকর উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে ভাল আইন রয়েছে। কিন্তু এর যথার্থ প্রয়োগের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে ৭১’ এর মানবতাবিরোধী আপরাধের বিচারের স্বচ্ছতায় বাংলাদেশ বিশ্বে নজিরর সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ রাখা হয়েছে। এমনকি সিভিল কোর্টে শরনাপন্ন হবার অধিকারও তাদের রয়েছে। অথচ নুরেমবার্গসহ বিভিন্ন দেশে এমন নজির নেই। এছাড়াও এশিয়ার মধ্যে আইসসি সনদে স্বাক্ষরে ফিলিপাইনের পরেই বাংলাদেশ দ্বিতীয়।
ড. আব্দুল মোমেন আরো বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বর্তমান বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশে প্রতিবছর ৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন মামলা নিষ্পত্তির জন্য আদালতের হাতে থাকে তথ্য দিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, এসব মামলা নিস্পত্তিতে বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে বিচার ব্যবস্থাকে গ্রাম পর্যায়ে মানুষের কাছে নিতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
বিশেষ অতিথির ভাষনে টোরো ’ল কলেজের ডীন ডেনিয়েল ডার্বি নবাগত বাংলাদেশি আইনজীবীদের যুক্তরাষ্ট্রে আইন বিষয়ে পড়ালেখার সুয়োগে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ ’ল সোসাইটির অভিষেক অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত সভাপতি আলী বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমীনের হাতে সংগঠনের দায়িত্ব তুলে দেন বিদায়ী সভাপতি এটর্নি মাহবুব তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান।
অনুষ্ঠানে আইনজীবী পেরি ডি সিলভা, এটর্নি মঈন চৌধুরী, এটর্নি মাহফুজুর রহমান, এটর্নি এম আজিজ, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, অ্যাডভোকেট ওয়াজিউল্লাহ, অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াহেদসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সংগঠনের নবনির্বাচিত অন্য সদস্যরা হলেন- সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, অ্যাডভোকেট মুর্শেদা জামান, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল রশিদ, কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট ফরিদা বেগম শিখা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাহীন খান, প্রচার সম্পাদক আরিফ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির, আপ্যায়ন সম্পাদক সিরাজুল হক ও সদস্য আসলাম খান, মিহির পাল এবং এস এম জুয়েল। শেষ পর্বে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। নৈশভোজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শেষ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৪