ঢাকা: বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার যে সম্পর্ক, তা কেবল দুদেশের সরকারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং এ সম্পর্ক নিজ নিজ সরকারের গণ্ডি ছাড়িয়ে দুদেশের জনগণ, সুশীল সমাজ এবং সর্বোপরি পারস্পরিক বন্ধুত্বের মধ্যে বিস্তৃত বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী সচিব নিশা দেশাই বিসওয়াল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশের ৪৩তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দিনটি উপলক্ষে ২৬ মার্চ দূতাবাসে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী সচিব নিশা দেশাই বিসওয়াল সংবর্ধনায় মার্কিন সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন।
নিশা দেশাই বিসওয়াল এ সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষে জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে অভিনন্দন জানান।
সংবর্ধনায় আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও কংগ্রেসের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, সুশীল সমাজ ও সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা।
এ ছাড়া বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের, মাদাম আকরামুল কাদের এবং দূতাবাসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অতিথিদের স্বাগত জানান।
দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এ সংবর্ধনায় বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সংবর্ধনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের ও সহকারী সচিব নিশা দেশাই বিসওয়াল।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে প্রথমেই স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও চার জাতীয় নেতাকে তাদের অসাধারণ নেতৃত্বের জন্য।
তিনি ১৯৭১-এ যে সব মুক্তিযোদ্ধা জীবন দিয়ে এবং যে সব নারী তাদের জীবন ও সম্ভ্রম দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
যে সব মার্কিন নাগরিক বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সমর্থন যুগিয়েছিলেন রাষ্ট্রদূত কাদের তাদের প্রতিও গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বহুমুখী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত কাদের বলেন, সম্প্রতি টিকফা সইয়ের মধ্যে দিয়ে দুদেশের মধ্যকার নিয়মিত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংযোগের ক্ষেত্র আরো প্রসারিত হয়েছে।
তিনি দুই দেশের বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্ককে আরো সম্প্রসারণের স্বার্থে বাংলাদেশকে নির্দিষ্ট কিছু বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে অনুরোধ জানান।
রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ়তর করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সংকল্পের কথা আবারও ব্যক্ত করেন।
এর আগে সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
এরপর দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
সংবর্ধনায় প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক অতিথি অংশগ্রহণ করেন। অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার পরিবেশন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৪