নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে আকৃষ্ট করতে সার্বিক ভিসা ব্যবস্থা সহজে ব্যপক পদক্ষেপ নিয়েছে ওবামা প্রশাসন। আগামী ২০২১ সালের শেষ নাগাদ প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে দর্শনার্থীর সংখ্যা ১শ’ মিলিয়নে উত্তীর্ণ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম স্ট্রাটেজি নির্দেশনার অগ্রগতির বিষয়ে হোয়াইট হাউজের প্রকাশিত প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।
নতুন ‘ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম স্ট্রাটেজি’তে সারাবিশ্ব থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরো বাড়াতে ভিসা আবেদন, এন্ট্রি প্রোসেসের উন্নয়ন সাধন, রিসোর্স বাড়ানো এবং দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা তৈরিতে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১২ সালে নির্বাহী আদেশ দেন। ওবামার ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম স্ট্রাটেজি নির্দেশনার সেই নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ে শনিবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউজ।
ভ্রমণ ও পর্যটনের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ওবামার দেয়া ‘ভিসা’ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং তারও উপরের লক্ষ্যে পৌঁছুতে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টেট ডিপার্টমেন্টের গৃহীত পদক্ষেপে ইতিমধ্যেই বিদেশি দর্শনার্থীরা এর সুফলও ভোগ করতে শুরু করেছে। ২০১৩ সালে রেকর্ড পরিমাণ ৭০ মিলিয়ন দর্শনার্থী যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণকালে দর্শনার্থীরা এযাবত কালের সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ ১শ’ ৮০ দশমিক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এছাড়া ট্রাভেল ও ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রির ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন চাকরির মধ্যে ১শ’ ৩০ মিলিয়ন মার্কিন চাকরিতে অর্থনৈতিকভাবে অবদান রেখেছে।
নিরাপত্তার বিষয়টিতে কোন রকম ছাড় না দিয়ে যতটা সম্ভব ভিসার আবেদন সহজ, স্বচ্ছ এবং আবেদনকারিকেন্দ্রিক করতে যেকোন সময়ের চেয়ে আরো অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট। ২০১৩ সালে ২২৪টি দূতাবাসের কনস্যুলার কর্মকর্তা এবং কনস্যুলেট মিলে প্রায় ৯ দশমিক ২ মিলিয়ন ননইমিগ্রান্ট ভিসা ইস্যু করেছে। যার সংখ্যা ২০১০ সালে ছিল সাড়ে ৬ মিলিয়ন। সীমান্ত নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ মানে রেখেই কেবল গত ৩ বছরেই এই ভিসা বৃদ্ধিও হার শতকরা ৪২ ভাগ। ভিসা দেয়ার সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি আবেদন গ্রহণ ও এপয়েন্টমেন্ট নির্দিষ্ট করা, আবেদন প্রক্রিয়া পুনঃবিন্যাসে বিশ্ব মান’ এর প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন এবং রিসোর্স বাড়ানোর মাধ্যমে ভিসা ইন্টারভিউয়ের গড় অপেক্ষার সময় কমিয়ে আনা হয়েছে।
২০১২ সাল থেকে বিশ্বব্যপী আবেদনের মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যেই শতকরা ৮০ ভাগ আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার নেয়ার লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। ২০১৩ সালের জন্য এই সময়ের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার শেষ করা হয়েছে।
২০১৩ সালের সমস্ত ননইমিগ্র্যান্ট ভিসার প্রায় অর্ধেক ভিসা দেয়ার ৪টি বৃহত্তম স্থান ব্রাজিল, চীন, ভারত ও মেক্সিকোতে অপেক্ষার সময় মাত্র ১ সপ্তাহেরও কম সময়ে স্থিতিশীল রয়েছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলার অফিসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং আরো নতুন কনস্যুলার শাখা খোলা হচ্ছে, যেমনটি আগামী ২০১৬ সালে পোর্টো এলেগ্রে এবং বেলো হরিজোন্টে তে নতুন কনস্যুলেট খোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভ্রমণে সুবিধাদি বৃদ্ধিতে নতুন কয়েক হাজার কনস্যুলেট স্টাফ নিয়োগসহ কর্মদক্ষতার উন্নয়ন করা হয়েছে। যদিও প্রতিবছর ভিসা দেয়ার সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। সীমান্ত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোন ধরনেরই অনিশ্চয়তা নেই।
প্রতিবেদনে অরো বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ রাখতে জাতীয় নিরাপত্তার আওতায় প্র্রত্যেক দেশের নাগরিকদের আবেদনপত্রই অব্যাহতভাবে বাছাই করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকারক ও হুমকিস্বরপ প্রত্যেককে চিহ্নিত করতে ও তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পথ বন্ধ করতে প্রতিনিয়তই আবেদন প্রক্রিয়াতে আধুনিকতম কারিগরি প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হচ্ছে।
বিদেশিদের বৈধ ভ্রমণ সহজতর করতে যোগ্য আবেদনকারীদের ভিসা দিতে স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৪