ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

উপেক্ষিত পর্বতমালার সৌন্দর্যও অজানা!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৬
উপেক্ষিত পর্বতমালার সৌন্দর্যও অজানা!

আমেরিকার বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে রয়েছে পর্বতমালা। অথচ লোকচক্ষুর প্রায় অন্তরালেই রয়ে গেছে দেশটির রকিস্, অ্যাপালেচিয়ান, ওজার্ক ও ওইয়াচিতা পর্বতমালা।

৪ মিলিয়ন বর্গমাইলের বিশাল এই পাহাড়ি অঞ্চলটি অবিশ্বাস্যভাবে রাষ্ট্রীয়ভাবেও উপেক্ষিত।

ফলে ভূ-তাত্ত্বিক বিস্ময় ও রাজকীয় এ পর্বতমালার উজ্জ্বল পাথুরে সৌন্দর্য ও বেশ কয়েকটি শৃঙ্গ সম্পর্কে খুব কম লোকই জানেন। অঞ্চলটি সম্পর্কে জনমনে আগ্রহও খুব সামান্যই। এর মধ্যবর্তী এলাকাকে সমতল ও বিরক্তিকর কৃষিজমি বলে ধারণা করেন অধিকাংশ মানুষই।

সমতলের পশ্চিম সীমানা চিহ্নিত করেছে  রকিস্‌ পর্বতমালা। আর অ্যাপালেচিয়ান পর্বতমালা যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি পূর্ব রাজ্যকে ছুঁয়ে গেছে।

রকিস্‌ পর্বতমালা উত্তর আমেরিকারও প্রধান পার্বত্য অঞ্চল। এটি উত্তর কানাডার ইওকোন টেরিটরি থেকে মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত পর্যন্ত প্রসারিত। মহাদ্বীপীয় সীমানা ভাগকারী এ পর্বতমালাটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল থেকে গ্রেট সমতলকে আলাদা করেছে। ৪ হাজার ৩০০ থেকে ৪ হাজার ৩৯৯ মিটার উচ্চতার বেশ কয়েকটি পর্বতশৃঙ্গ রয়েছে এখানে, যার সর্বোচ্চটি হচ্ছে মাউন্ট অ্যালবার্ট।

ওজার্ক ও ওইয়াচিতা পর্বতমালা একটি অরক্ষিত ওয়ান্ডারল্যান্ড, যা সম্মিলিতভাবে ‘অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি অঞ্চল’ নামে পরিচিত। অঞ্চলটি দক্ষিণ মিসৌরির উত্তর আরকানসাস থেকে পূর্ব ওকলাহোমা পর্যন্ত প্রসারিত। এর মধ্যে ওইয়াচিতা আরকানসাস্‌ ও ওকলাহোমা রাজ্যের সীমানাকে দুই ভাগ করে অভ্যন্তরীণ পার্বত্য অঞ্চলের দক্ষিণতম অংশ দিয়ে চলে গেছে।

একটি বিশাল অঞ্চলে এটি সমতল ভূমি হিসেবে উঠে গেছে, যার পাহাড়ি বৈশিষ্ট্য ভাঙন ও জলপথ দ্বারা খোদাই করা।

প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা বড় পাথরের দরজা, স্তম্ভ, খাড়া বাঁধ এবং উচ্চস্তরে আজব শিলা নিয়ে গড়া একটি আশ্চর্য সৌন্দর্যমণ্ডিত অঞ্চল ওজার্ক ও ওইয়াচিতা। প্রচারের অভাবে এ দু’টির চমৎকারিত্বও রয়ে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালেই।

এই পরিসীমার সবচেয়ে অত্যাশ্চর্য অংশ টালিমেনা নামক নাটকীয় অঞ্চল, যা শিখরের একটি চিত্তাকর্ষক সিরিজ ধরে ৫৪ মাইল বিস্তৃত। এ উচ্চভূমিতে অবিশ্বাস্য ভূতাত্ত্বিক বৈচিত্র্য আছে। এখানে বিশাল কচ্ছপের মতো খোল আকৃতির বেলেপাথর ও শিলা পাওয়া যায়।

প্রায় ৪ মিলিয়ন বর্গমাইলের এ পার্বত্য অঞ্চল আসলে একটি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন মালভূমি। ফলে এখানকার শত শত মাইল পাহাড়ি ভূখণ্ড গুটানো অবস্থায় উঠে গেছে।

উচ্চ এ মালভূমির একটি জলপথ ক্রমাগত ভূমিকে খোদাই করে ৯৫ ফুট গভীর গিরিখাদে পরিণত হয়েছে। এটি আরকানসাসের ‘পেটিট জিনস্‌ রাজ্য পার্ক’ নামে পরিচিত, যেখানে পরিষ্কারভাবে শিলা ও মাটির স্তর দেখা যায়। একই বৈশিষ্ট্য উত্তর আরকানসাসের জাতীয় নদী বাফেলোতেও রয়েছে।

কিন্তু তিনটি রাজ্যে বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও জাতীয় পার্ক হিসেবে সংরক্ষিত নয় এগুলো। রাজ্যগুলোর মতামতের ভিত্তিতে ১৯২০ সালে টেলিমেনাকে জাতীয় পার্ক ঘোষণার আইন পাস হয়েছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ ভেটো দেওয়ায় তা আর হয়নি।

ন্যূনতম সরকারি সুরক্ষা না থাকায় এসব অভ্যন্তরীণ পার্বত্য অঞ্চলের বিস্তীর্ণ সমতলভূমি ব্যক্তিগত মালিকানায় ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এ অরক্ষিত অবস্থা সত্ত্বেও সেগুলো তার অবিশ্বাস্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে টিকে আছে। পরিবর্তনের হাত থেকে সুরক্ষা দিয়ে এটির সংরক্ষণেরও সুযোগ রয়েছে।  

অবশেষে এটি পর্বত ও নদী বিস্তৃত সেরা অঞ্চল হিসেবে প্রচারিত এবং একটি জাতীয় পার্ক হিসেবে স্বীকৃত হতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৫২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৬
এএসআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।