ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

মরেও যেভাবে বেঁচে ফিরতে পারে টারডিগ্রেড

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৬
মরেও যেভাবে বেঁচে ফিরতে পারে টারডিগ্রেড

টারডিগ্রেড বা পানি ভালুক এক অদ্ভুত প্রাণী, যার পুনর্জন্ম রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আসলে জলে-স্থলের কঠোরতম অঞ্চলেও টিকে থাকার ক্ষমতা থাকায় সর্বংসহা ক্ষুদে মূলত জলজ এই প্রাণীকে পুনঃসঞ্জীবিত করা যেতে পারে।

টারডিগ্রেড বা পানি ভালুক এক অদ্ভুত প্রাণী, যার পুনর্জন্ম রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আসলে জলে-স্থলের কঠোরতম অঞ্চলেও টিকে থাকার ক্ষমতা থাকায় সর্বংসহা ক্ষুদে মূলত জলজ এই প্রাণীকে পুনঃসঞ্জীবিত করা যেতে পারে।

১৯৯৫ সালে শুকনো টারডিগ্রেডকে ৮ বছর পর জীবনে ফিরিয়ে আনার পর বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে না যে, টারডিগ্রেডকে মৃত্যুর পর ফের বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব।

এর কারণ সম্পর্কে উত্তর ক্যারোলিনার চ্যাপেল হিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সট্রিমোফিল গবেষক টমাস বুথবি বলেন, বহুকোষী জলজ প্রাণী ফাইলাম রোটিফেরার মতো মাথার ওপরে থাকা ঝিল্লি এমনিতেই কয়েক দশক বাঁচিয়ে রাখতে পারে টারগ্রিগেডকে। যখন এর অনন্য সেলগুলো শুকিয়ে থাকে, তখন তার ঝিল্লির বিদারণ ঘটে। তার প্রোটিন ও ডিএনএ’র সমষ্টি তাকে বাঁচিয়ে রাখে। ফলে তাদেরকে পরে ফিরিয়ে আনা যায় জীবনে’।

‘এর ডিএনএ শুকিয়ে টুকরো টুকরো করে শুষ্ক তুষের মধ্যে রাখার মাধ্যমেও পুনঃসঞ্জীবিত করা যায়। যেহেতু পানি ভালুক শুকানোর পরও বেঁচে থাকতে পারে, আমাদের মতো কোষ থেকে মারা যাবে না তাদেরকে। প্রতিরোধ ক্ষমতাই জীবনহানি বা ক্ষতি থেকে রক্ষা করে’।

১৯২২ সালে জার্মান বিজ্ঞানী এইচ বাওম্যান গবেষণা করে জানান যে, একটি টারডিগ্রেড যখন শুকিয়ে যায়, সে তার মাথা ও আট পা গুটিয়ে নেয়। সেলগুলোও এমনভাবে স্থবির থাকে, যা মৃত্যুর মতো। তার শরীরের সব জলের স্খলন ঘটে। শুষ্ক তুষের মাঝে টনচেনফরম প্রক্রিয়ায় রাখা হলে এটি কয়েক দশক ধরে টিকে থাকতে পারে।

এ প্রজাতি এখন ‘বড় পিপা’ হিসেবে পরিচিত। তার বিপাকের গতির স্বাভাবিক হার ০.০১ শতাংশ। শুধুমাত্র পানির জল সংস্পর্শে এলেই এ বিপাক ক্রিয়া ফের শুরু হয়ে পুনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠে।


এছাড়া টারডিগ্রেড কিছু নেমাটোড কৃমি ও ব্যাকটেরিয়ার মাঝে বিশুষ্কীকরণের মাধ্যমে বেঁচে থাকতে পারে। তারা ত্রেহালস নামক একটি বিশেষ শর্করা অর্জন করে এ কাজ করে। এক গ্লাসের মতো এই সুগার তাদের কোষের ভেতরে প্রোটিন ও ঝিল্লিসহ মূল উপাদানে সংযুক্ত থাকে। স্থির অবস্থায় এ প্রক্রিয়া তাদেরকে ধ্বংস হয়ে যেতে বাধা দেয়।

এছাড়াও ত্রেহালস কোনো অবশিষ্ট পানির অণুর চারপাশে নিজেই মুড়িয়ে থাকতে পারে। তাদের দ্রুত বিস্তৃত তাপমাত্রা দ্রুত বিস্তৃত পানির অণুর সঙ্গে মিলে তারা কোষ বিদারণ করে।

‘এর অর্থ দাঁড়ায় যে, টারডিগ্রেড জীবিত অন্য ক্ষুদে প্রাণীকে বিশুষ্কীকরণ প্রক্রিয়ায় আবদ্ধ রেখে তারা নিজেরা শুকাতে শুরু করে। অবশ্য এর প্রোটেক্ট্যান্ট তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে শুষ্ক হয়ে বেঁচে থাকতে দেয় না। কিন্তু যখন শুকাতে শুরু করে, তখন তারা অ্যান্টি অক্সিডেন্টগুলো সক্রিয় হয়। এই রাসায়নিক ভিটামিন ‘সি’ ও ‘ই’ এর মতোই, যেটি বিপজ্জনকভাবে প্রতিক্রিয়াশীল রাসায়নিক শুষে নেয়। এ প্রক্রিয়া টারডিগ্রেড কোষকেও ক্ষতিকর রাসায়নিক থেকে রক্ষা করে’- বলেন টমাস বুথবি।

এভাবে শুধু পৃথিবীতেই নয়, মহাশূন্যে বাঁচিয়ে রাখতে বা মৃত্যু ঘটিয়ে ফের পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হয়েছেন প্রাণীবিজ্ঞানীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৬

এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।