ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

কেন আমরা চার পা থেকে দুই পায়ে হাঁটতে শুরু করি

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬
কেন আমরা চার পা থেকে দুই পায়ে হাঁটতে শুরু করি ছবি: সংগৃহীত

৩৬ লাখ ৬০ হাজার বছর আগে হোমো অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস্ প্রজাতি থেকে মানুষ দ্বিপদ প্রাণীতে বিবর্তিত হয় ও দুই পায়ে হাঁটতে শুরু করে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

৩৬ লাখ ৬০ হাজার বছর আগে হোমো অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস্ প্রজাতি থেকে মানুষ দ্বিপদ প্রাণীতে বিবর্তিত হয় ও দুই পায়ে হাঁটতে শুরু করে বলে প্রমাণিত হয়েছে। চার পায়ে হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরার জীবন পরিত্যাগের পর এ ধারা প্রায় অবিকৃতভাবে বজায় রেখেছি আমরা আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্সরাও।

 
 
স্থায়ীভাবে উঠে দাঁড়িয়ে স্পর্শ, অন্বেষণ, কুড়ানো, নিক্ষেপ এবং শিখতে পারার নতুন সুযোগ খুলে যায় আমাদের প্রাগৈতিহাসিক পূর্বপুরুষদের জন্য। এটাও স্পষ্ট যে, আমাদের প্রজাতির সংজ্ঞার অন্যতম বিশেষ বৈশিষ্ট্যও হচ্ছে, দুই পায়ে হাঁটা। কিন্তু কেন চার পায়ে হাঁটার বৈশিষ্ট্য থেকে দুই পাকে বেছে নেওয়া হলো, তার কারণ নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েই গেছে।
আমাদের নিকটতম ‘মানব’ পূর্বসুরীদের সাধারণ পূর্বপুরুষ শিম্পাঞ্জি থেকে আমরা ৬০ লাখ থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ বছর আগে ভাগ হয়ে গিয়েছিলাম। এই প্রাণীটি সে সময় বনবহুল আফ্রিকার গাছের উঁচু ডালে বসবাস করতো।

আমাদের পূর্বপুরুষেরা চার পা থেকে দুই পায়ে নেমে আসে কিছু মৌলিক শারীরিক পরিবর্তনের মাধ্যমে। শ্রোণীচক্র লম্বা ও সামনের অংশে ফ্ল্যাট হয়ে যায়। অনেক খাটো হয় তারা, পাশাপাশি পেশি সংকুচিত-প্রসারিত করার ক্ষমতা জন্মে। দুই পায়ে হাঁটার ক্ষেত্রে বাটি আকৃতির নিতম্ব ভালো সুবিধা দেয়।

তাই লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের নেতৃস্থানীয় নৃ-বিজ্ঞানী ক্রিস স্ট্রিংগার বলেন, শিকারের অস্ত্র বহন ও চালানোর জন্য হাতকে মুক্ত করার প্রয়োজন থেকেই ঋজু হয়ে দুই পায়ে হাঁটার বৈশিষ্ট্যে বিবর্তিত হয় প্রাচীন মানুষ। হাঁটার দূরত্বে বিভিন্ন কাজ করতে সহনশীলতা অর্জন এবং পরিশেষে এ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি আমাদের পূর্বপুরুষদের বড় মস্তিষ্ক অর্জন ও সারা পৃথিবীর নেতৃত্ব দখলেও সহায়ক হয়েছে’।
দীর্ঘকাল স্থায়ী ও প্রভাবশালী অন্য তত্ত্বে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রক্রিয়াও এর একটি মূল কারণ। লাখ লাখ বছর আগে আফ্রিকার সুবিশাল সাভানা বন ও তৃণভূমির কিছু কিছু কমে যেতে থাকে। ফলে আমাদের পূর্বপুরুষেরা ধীরে ধীরে তাদের আবাসস্থল এ বনভূমি থেকে সামনের দিকে সরতে শুরু করে।
গাছ বিরল হওয়ায় আরও একটি স্থায়ী অনুভূতি তৈরি করে তাদের মনে। শিকারি ও শিকার পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনে বেশি দীর্ঘ ঘাস দেখতে উদগ্রিব হয় তারা। বেঁচে থাকা ও শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের আকাঙ্খায় এটি তাদের জিনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই শুধু সংক্ষেপে দাঁড়িয়ে থেকে স্থায়ীভাবে ঋজু ভঙ্গিতে চলার কল্পনা বাসা বাঁধে মনে। সঠিক প্রাকৃতিক পরিবেশ নির্বাচন করে কিভাবে সহজে ধীরে ধীরে স্থানান্তরিত হওয়া যায়, সে ধারণার বাস্তবায়নে দুই পায়ে হাঁটাকেই বেছে নেয় তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।