ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

যে গ্রহের তাপে লোহাও গলে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১৭
যে গ্রহের তাপে লোহাও গলে! সংগৃহীত ছবি

পৃথিবীর বাইরে প্রথমবারের মতো দেখা মিলেছে এক উত্তপ্ত গ্রহের। গ্রহটি পৃথিবী থেকে ৯শ’ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে। 

এর বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা ২ হাজার ৫’শ ডিগ্রি সেলসিয়াস! বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রহটি এতই উত্তপ্ত যে এটি লোহাকে গলিয়ে দিতে পারে। জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহের বায়ুমণ্ডলে স্ট্রাটোস্ফিয়ার স্তরের অস্তিত্ব এই প্রথম পাওয়া গেল। স্তরটির উপরিভাগে তাপামাত্রা সবসময় উচ্চমাত্রায় বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর আগে বিগত দশকগুলোর গবেষণায় এরকম গ্রহের সন্ধান মিলতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছিল।  

‘ডব্লিউএএসপি-১২১বি’ নামের বিশাল আকৃতির এ গ্রহটি ‘হট জুপিটার’ নামে পরিচিতি। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র হাবল স্পেস টেলিস্কোপে এটি ধরা পড়ে।  

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যারিলেন্ডের অধ্যাপক ড্রেইক ডেমিং বলেন, যখন দূরের কোনো কিছু নিয়ে আমরা কাজ করতে যায়, তখন সৌরজগতের গ্রহের মতো করে এদের বোঝা যায় না। দূরবর্তী কোনো গ্রহ খুঁজে বের করতে বিশেষ কৌশলের আশ্রয় নিতে হয়।  

তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে এই গ্রহটি এতটাই উত্তপ্ত যে এটি জলীয়বাষ্প তৈরির অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে।  

স্ট্রাটোস্ফিয়ার নিয়ে গবেষণা করতে বিজ্ঞানীরা স্পেকট্রোস্কোপির সহায়তা নিয়েছেন। এর মাধ্যমে বিভিন্ন আলোক তরঙ্গমালায় কিভাবে গ্রহগুলোর উজ্জ্বলতা পরিবর্তিত হয় তা বিশ্লেষণ করে দেখা হয়।  

তাপমাত্রা শীতল থাকলে জলীয়বাষ্প আলোকে গ্রহের গভীরে প্রবেশ করতে দেয় না। অন্যদিকে উচ্চ তাপমাত্রায় পানির অণুগুলো উত্তপ্ত হতে থাকে।  

‘ডব্লিউএএসপি-১২১বি’ গ্রহটি শক্তি হারানোর সময় বায়ুমণ্ডলে আর কোনো বিকিরণ ঘটায় না। কিন্তু এটা থেকে চুম্বকীয় আলোক বিকিরণ হয়, যা খালি চোখে মানুষ দেখতে পারে না।  

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এক্সারের গবেষক টম ইভানস বলেন, তত্ত্বীয় মডেল এটা বলে যে, স্ট্রাটোস্ফিয়ার পৃথিবীর বাইরের অতি-উত্ত‍াপ গ্রহণের জন্য বিশেষায়িত। বায়ুমণ্ডলের বস্তু ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার কারণে এমনটা ঘটে।   

জার্নাল নেচারের প্রকাশিত গবেষণার প্রধান লেখক ইভানস আরও বলেন, যখন আমরা হাবল টেলিস্কোপের মাধ্যমে গ্রহটির সন্ধান পায় তখন উত্তপ্ত জলবায়ু কণার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এটিই সংকেত দেয় যে গ্রহটিতে স্ট্রাটোস্ফিয়ারের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে।  

পৃথিবীর বাইরের এ গ্রহটির কক্ষপথে প্রতি ১.৩ দিন পরই নক্ষত্রের দেখা মেলে। দুটি বস্তুই তখন এতো কাছাকাছি আসে যে মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে এড়িয়ে তারাটি গ্রহে গ্রাস হয়ে যায়। কাছাকাছি আসার পর এ গ্রাস হওয়াটাই প্রমাণ করে যে গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে ২ হাজার ৫’শ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রয়েছে। এ তাপে গ্যাসে গলিত লোহার অস্তিত্বই কেবল থাকতে পারে।  

ইউনিভার্সিটি অব এক্সারের আরেক গবেষক ফেলো হান্নাহ ওয়েইকফোর্ড বলেন, বায়ুমণ্ডলের গবেষণায় অতি-উত্তপ্ত এই গ্রহটি মানদণ্ড হিসেবে কাজ করবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৭
জিওয়াই/আরআর


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।