ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

বিশ্বের সবচেয়ে স্মার্ট মাছ!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
বিশ্বের সবচেয়ে স্মার্ট মাছ! বিশ্বের সবচেয়ে স্মার্ট মাছ!

সমুদ্রের কঠিন জীবনে অবিরাম সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয় মাছেদেরকে। এ সংগ্রামই কিছু আশ্চর্যজনক জ্ঞান ও দক্ষতা গড়ে দিয়েছে, যেগুলো তাদের স্মার্টনেসকেই প্রকাশ করে।

টিকে থাকতে মহাসাগরের মাছেরা নিজেদের বাচ্চা এমনকি সঙ্গিনীর ছাড়া ডিম পর্যন্ত খেয়ে ফেলে। কিন্তু পূর্ব আফ্রিকান কিল্লিড মাছের মাঝে সন্তানদের খাওয়ার প্রবণতা নেই, এমনকি ভ্রুণ অবস্থায়ও।



একটি নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, এই সতর্ক মাছটি ক্ষুদ্র ভ্রূণ অবস্থায়ও শুধুমাত্র চোখ দেখে স্বজন-স্বজাতি ও অপরিচিতকে চিনতে সক্ষম। অন্য প্রজাতির মাছ এমনকি মানুষের মুখোমুখি হওয়ার সময় বদলে যায় তাদের মুখের রং। প্রথমবারের মতো একটি মাছের মাঝে প্রাপ্তবয়স্ক ও ভ্রূণ অবস্থায় এ ক্ষমতা দেখা গেছে।
বিশ্বের সবচেয়ে স্মার্ট মাছ!গবেষক দলের নেতা প্যাট্রিসিয়া রাইট বলেন, ‘মাত্র সাত সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হওয়া ক্ষুদ্র ম্যানগ্রোভ মাছ কিল্লিডের নিজেদের সন্তান ও অপরিচিতদের মুখ চেনার অসাধারণ ক্ষমতা আছে, যেটি ভ্রুণ অবস্থায়ই গড়ে ওঠে’।

‘অনেক বেশি সংবেদনশীল এই ক্ষমতা অন্য প্রজাতির মাছের সঙ্গে কিল্লিডের একটি সূক্ষ্ম পার্থক্য তৈরি করে দিয়েছে। ফলে আমাদের কাছে তাকে চমৎকার স্মার্ট মাছ বলে মনে হয়েছে’।

গবেষণা বলছে, যখন আরেকটি মাছ আসে, তখন আগন্তুকের সামনে কিল্লিড মাছ রংয়ের নকশা দিয়ে একটি মুখভঙ্গি প্রকাশ করে জানায় যে, এটি তার বন্ধু বা অপরিচিত।  

এভাবেই মাছটি বিভিন্নজনকে শনাক্তে মুখের রঙের ভিন্ন ভিন্ন নিদর্শন ব্যবহার করে।

জাপানি চাল ও মেডাক, স্লেন্ডার হার্ডিহেড, সামুদ্রিক গোল্ডি, স্যাডেলব্যাক ক্লাউনফিসসহ বেশ কিছু মাছেরও মুখের অভিব্যক্তি দিয়ে বা প্রসারিত-সংকুচিত করে পরিচিত-অপরিচিতদের সম্ভাষণ জানানোর দক্ষতা রয়েছে। কিন্তু কিল্লিডের মুখ দেখিয়ে স্বীকৃতির দক্ষতা অনন্য।
বিশ্বের সবচেয়ে স্মার্ট মাছ!মানুষের মতোই মুখ প্রসারিত বা রং পরিবর্তনে এই মাছগুলোর নির্দিষ্ট মস্তিষ্ক অঞ্চলও রয়েছে বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।

বিজ্ঞানীরা আরও মনে করেন, সামাজিক আচরণ উন্নত জ্ঞানীয় দক্ষতার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হতে পারে। লেক টাঙ্গনিক হ্রদের বাসিন্দা কিল্লিড অত্যন্ত সামাজিক প্রজাতি হওয়ায় অসামাজিক প্রজাতির তুলনায় উচ্চতর নানা জ্ঞানীয় দক্ষতা অর্জন করেছে। এসব দক্ষতা তাদেরকে পরিচিত-অপরিচিত প্রজাতির সঙ্গে শক্তি, দ্বন্দ্ব ও সমস্যা সমাধানের অবিশ্বাস্য কৃতিত্বের পাশাপাশি তাদের মস্তিষ্কের স্থাপত্যের প্রভাবগুলোর ওপরও প্রভাব ফেলেছে। অন্য বেশ কয়েকটি মাছ প্রজাতির মতো তারাও বৃহৎ গোষ্ঠীতে থাকা যে শিকারিকে মোকাবেলা ও শত্রু তাড়ানোর ভালো উপায়, সেটি জানে।
বিশ্বের সবচেয়ে স্মার্ট মাছ!
লক্ষাধিক পর্যন্ত মাছ তাই একত্রিত থেকে একে অন্যের সঙ্গে সহযোগিতামূলক উন্নত আচরণ প্রদর্শন, গণনা ও সার্বজনীন পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে খুব ভালো স্থানিক জ্ঞান ও স্থানান্তর ক্ষমতাও অর্জন করেছে। সমস্ত শক্তি ও একসঙ্গে কাজের ক্ষমতা ব্যবহার করে তারা নিজের ওজন পর্যন্ত কোনো অপ্রয়োজনীয় বস্তুকে ১০ মিটার দূরত্বে ১০ বারও ধাক্কা দিতে সক্ষম।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।