ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

ঘোড়া দিয়ে হালচাষ!

মোমেনুর রশিদ সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২
ঘোড়া দিয়ে হালচাষ!

গাইবান্ধা: যান্ত্রিক ট্রাক্টরের যুগে গরুর হাল চোখে পড়ে না বললেই চলে। সেখানে খোলা প্রান্তরে গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করছেন মোখলেছুর রহমান নামে এক কৃষক।

ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের এ কৃষক।

দীর্ঘকাল ধরে রণক্ষেত্রের পাশাপাশি মালপত্র বহন ও মানুষের বাহনে ঘোড়া ব্যবহৃত হয়ে এলেও কালের পরিক্রমায় তা বিলুপ্তির পথে। কিন্তু ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ বিরল ঘটনা।  

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের পাশে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করতে দেখা যায় মোখলেছুরকে।

মোখলেছুর জানান, বাজারে গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম অনেক কম। বাজারে গরুর দাম বেশি।  তিনি দুই হাজার ৮০০ ও দুই হাজার টাকায় ছয় মাস বয়সী দু’টি বাচ্চা ঘোড়া কিনেছিলেন।  তার একেকটি ঘোড়ার বর্তমান বাজার মূল্য ১০-১৫ হাজার টাকা করে।  ঘোড়া দু’টি দিয়ে টানা ছয় মাস ধরে জমি চাষ করছেন। নিজের জমির পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে অন্যের জমিতেও হালচাষ করছেন তিনি।

মোখলেছুর আরও জানান, গরুর চেয়ে ঘোড়া বেশি হাঁটে-চলে। ফলে একই সময়ে তিনগুন বেশি জমি চাষ করা যায়। একদিনে তিন বিঘা জমিতে হালচাষ করা যায়। প্রতিদিন সকাল ৮টায় শুরু করে বিকেল পর্যন্ত জমি চাষ করে দৈনিক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। প্রতিদিন ঘোড়ার খাদ্য বাবদ খরচ হয় দেড়শ’ থেকে দুইশ’ টাকা। বাকি টাকা দিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবারের মৌলিক চাহিদাগুলো মিটছে। জমি চাষ মৌসুম শেষে ঘোড়া দিয়ে গাড়ি চালান তিনি।

জমির মালিক মহদীপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান মিয়া জানান, ঘোড়া দিয়ে হাল দিলে জমি গভীরভাবে খনন হয়। সেই সঙ্গে মই দেওয়ার সময় জমির উঁচু-নিচু ভালোভাবে সমান হয়। এতে জমিতে পানি ধরে রাখা সহজ হয়। এছাড়া একদিনে অনেক বেশি জমিতে হালচাষ করা যায় বলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়। দুপুর পর্যন্ত তার দুই বিঘা জমিতে হাল ও মই দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে।

মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম মণ্ডল জানান, মোখলেছুর একজন পরিশ্রমী মানুষ। এলাকার চাষিদের কাছে মোখলেছুরের ঘোড়ার হালের বেশ চাহিদা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।