ঢাকা, শনিবার, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ০২ আগস্ট ২০২৫, ০৭ সফর ১৪৪৭

মুক্তমত

অভিমত

দীর্ঘ মেয়াদে লক্ষ্য বাজার ও পণ্যের বহুমুখীকরণ

ফজলুল হক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:৫২, আগস্ট ২, ২০২৫
দীর্ঘ মেয়াদে লক্ষ্য বাজার ও পণ্যের বহুমুখীকরণ ফজলুল হক

বাংলাদেশি পোশাকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে দেশের রপ্তানি খাতের জন্য বড় ধরনের সুসংবাদ।

এই হার যদি আরো বেশি থাকত,  তাহলে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিকারকরা বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারত না।

পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া।

এই দেশগুলোর ওপরও প্রায় একই হারে ১৯ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এখন আমরা একটি তুলনামূলকভাবে সমান প্রতিযোগিতার অবস্থানে রয়েছি।

অন্যদিকে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যচুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি।

ভারত আমাদের অন্যতম প্রধান প্রতিযোগী। ফলে এই শুল্ক হার আমাদের জন্য বাড়তি সুবিধা নিয়ে আসতে পারে।

চীনের ক্ষেত্রে এখনো শুল্কের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। যদি তাদের ওপর শুল্ক বাড়ানো হয়, তাহলে বাংলাদেশের জন্য আরো সুযোগ তৈরি হবে।

যদি শুল্ক কমে, তাহলে প্রতিযোগিতা তীব্রতর হবে. যা রপ্তানিকারকদের জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ মূলত কম দামের বা বেসিক পোশাক রপ্তানি করে থাকে। এসব পণ্য অত্যন্ত মূল্য সংবেদনশীল। এ ধরনের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ হলেও শেষ পর্যন্ত ভোক্তা পর্যায়ে দাম না-ও বাড়তে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিক্রি কমে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চায় না।

তারা বরং বাড়তি শুল্কের একটি অংশ নিজেরা বহন করে এবং বাকিটা সরবরাহকারীদের ওপর চাপিয়ে দেয়। অতীতে শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধির সময়ও এমন দর-কষাকষি আমরা দেখেছি।

এই বাস্তবতায় মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের ওপর পোশাকের দাম কমানোর চাপ তৈরি করতে পারে। এমনকি যেসব ক্রয়াদেশ এর মধ্যে আমাদের হাতে রয়েছে, সেগুলোর দাম পুনরায় নির্ধারণের কথাও তুলতে পারে তারা। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সম্মিলিতভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। চাপ মোকাবেলার জন্য সংহত কৌশল প্রয়োজন।

সরকারের উচিত বেসরকারি খাতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আলোচনা করে বিষয়টি মোকাবেলায় কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করা। দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত বাজার ও পণ্যের বহুমুখীকরণ। ইউরোপ ও এশিয়ার উদীয়মান বাজারগুলোতে নজর দেওয়া সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।

লেখক: সাবেক সভাপতি, বিকেএমইএ

সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।