একটা সময় ছিল যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য ছিল কেবল ছাত্র আন্দোলনের আলামত। কিন্তু ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট এসে সেই ইতিহাস নতুনভাবে লিখল।
২০২৪ সালের মে মাসে হাইকোর্টের এক রায়ে পুনরায় প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে কোটা পদ্ধতির পুনর্বহাল ঘোষণা দেওয়া হয়। সরকারের এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য উপকারী মনে করা হয়, তেমনি অধিকাংশ সাধারণ ছাত্রের চোখে এটি হয়ে ওঠে এক ধরনের ‘সুবিধাভোগীদের রাজনীতি’। তাদের অভিযোগ—মেধা নয়, পেছনের পরিচয়ই এখানে নিয়োগের ভিত্তি। রাস্তায় নামার আগে একটুও হিংসা ছিল না। শিক্ষার্থী মাত্রই বিশ্বাস করে, কলমই শক্তি। কিন্তু যখন বারবার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ‘কোটার’ কারণে বঞ্চিত হতে হয়, তখন রাস্তাই একমাত্র উপায় হয়ে ওঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুপড়ি ক্যান্টিন—সবখানে একসুরে গর্জে ওঠে ছাত্রসমাজ। ‘সংবিধানে তো সমানাধিকার লেখা আছে!’ এই একটাই যুক্তিতে চেপে বসে তারা। বাস্তবতা কিন্তু আরও নির্মম। শুধু চাকরির কোটা নয়, এটা ছিল নিয়োগব্যবস্থার রাজনৈতিক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। শুরু হয় ইতিহাসের নতুন অধ্যায়।
১৬ জুলাই, রংপুর; একজন ছাত্র, আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তিনি সেদিন কোনো আগ্রাসী ভঙ্গিতে ছিলেন না। বরং তার হাতে ছিল একটি ছোট প্ল্যাকার্ড, যেখানে লেখা: “আমরা চাকরি চাই, মৃত্যুভয় না”। মুহূর্তেই টিয়ারগ্যাস, গুলি, ছত্রভঙ্গের ডাক। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়—আবু সাঈদ এগিয়ে দাঁড়াচ্ছেন এক পিকআপের সামনে, আর ঠিক তখনই গুলির শব্দ। মৃত্যুর সেই দৃশ্য, যেন ১৯৮৯ সালের চীনের তিয়ানানমেন স্কোয়ারের বিখ্যাত ‘ট্যাঙ্ক ম্যান’-এর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। অনেকেই বলেন, আবু সাঈদ হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের ‘ট্যাঙ্ক ম্যান’। সামাজিক মাধ্যমে রাতারাতি ভাইরাল হয় তাঁর ছবি। পরদিন সকালেই দেশের অধিকাংশ ক্যাম্পাসে কালো পতাকা, মৌন মিছিল, শ্রদ্ধা—সব আয়োজন হয় সাঈদের নামে। ছাত্রদের কণ্ঠে ফিরে আসে কবি বিনয় মজুমদারের ধ্বনি—”আমরা তো গুলি খেতেই এসেছি...” রাষ্ট্র তখন ভয় পেতে শুরু করে এই নতুন গর্জন। আবু সাঈদের মৃত্যুই হয় আন্দোলনের মোড় ঘোরানোর প্রধান ট্রিগার।
রাষ্ট্রীয় শত্রু যখন ছাত্র: আন্দোলন যখন ঢাকায় প্রবেশ করে, তখন সেটি কেবল শিক্ষার্থী পর্যায়ে ছিল না, যুক্ত হয় নাগরিক সমাজ, প্রবাসী বাংলাদেশিরাও। জুলাই মাসের মধ্যভাগে গুলি চালানো হয় চট্টগ্রাম, খুলনা এবং বরিশালের ছাত্রদের ওপর। দিন যত এগোয়, পাল্টা নির্দেশ আসে শাসনযন্ত্র থেকে ‘প্রয়োজনে প্রাণঘাতী গুলি ছুড়তে হবে’। ঠিক তখনই একের পর এক শহীদ হয় রাকিব, জুবায়ের, মৌসুমী, নাজিম যারা কোনো রাজনৈতিক দলের ছিল না, বরং শুধু ন্যায়ের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে নামিয়ে এনে ছাত্র পেটানো হয়। হোস্টেল লক করে দেওয়া হয়। ফেসবুক প্রোফাইলের লাল ছবি দেখে শুরু হয় ধরপাকড়। এই প্রজন্মকে ‘অপরাধী’ বানিয়ে ত্রাস সৃষ্টির এক অপচেষ্টা চলে। আর এটাই ছিল রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ভুল। কারণ, ইতিহাস বলে, যখন ছাত্রের রক্ত ঝরে, তখন মাটির নিচে পড়ে না; ছড়িয়ে পড়ে মানুষের চেতনায়।
ইন্টারনেট সাইলেন্স; যোগাযোগ বন্ধে তথ্য নিরোধ: ২০২৪ সালের ১৮-২৮ জুলাই ও ৪-৫ আগস্টে বাংলাদেশ সরকার পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ইন্টারনেট, মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং সামাজিক মাধ্যম—যা আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নজিরবিহীন পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে জনসাধারণ, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীরা কার্যত ‘ডিজিটাল নির্বাসন’-এ নিক্ষিপ্ত হন। যে সময়টি ছিল সর্বোচ্চ তথ্য আদানপ্রদানের প্রয়োজন, ঠিক তখনই তথ্যপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে সরকার মূলত জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়। এই নেটওয়ার্ক নিষেধাজ্ঞা শুধু প্রযুক্তিগতভাবে নয়, মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও একটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়ায়—যা জনমনে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় অসংখ্য নাগরিক নিখোঁজ, আটক বা আঘাতপ্রাপ্ত হলেও তথ্যপ্রবাহের অভাবে তা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ঠাঁই পায়নি। সংবাদপত্রগুলো কাগজ ছাপাতে পারেনি, টেলিভিশন ছিল সরকারের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নির্ভর, এবং অনলাইন নিউজপোর্টাল বন্ধ হয়ে যায় একের পর এক। ফলে, এই ইন্টারনেট-নিরোধ ছিল এক নীরব গণনির্যাতনের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া, যা প্রতিরোধের ভাষা কেড়ে নেয় জনগণের কাছ থেকে।
রক্তক্ষয়ী ৪ আগস্ট। ২০২৫ সালের ৪ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে গণরক্তপাতের দিক থেকে ভয়াবহতম দিন হিসেবে পরিচিতি পায়। সেদিন সারাদেশে একযোগে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ, রাস্তায় নামে লক্ষাধিক মানুষ। শুধুমাত্র ঢাকাতেই নিহত হন প্রায় ৯১ জন, যাদের মধ্যে ছিলেন পুলিশ সদস্যও। সরকারের একগুঁয়ে নির্যাতন, আটক ও গুলি চালানোর বিরুদ্ধে মানুষ রাস্তা অবরোধ করে, প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে এবং স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা মিছিল নিয়ে এগিয়ে আসে। দিনভর সংঘর্ষের পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে সরকার ‘কারফিউ’ জারি করে এবং “শুট-অ্যাট-সাইট” আদেশ জারি হয়—যা অনেককে পাকিস্তান আমলের গণহত্যার কথা মনে করিয়ে দেয়। ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘরছাড়া মানুষ আটকে পড়ে, খাদ্য ও পানি সংকট তৈরি হয়। সামরিক হেলিকপ্টার ও বুলেটপ্রুফ গাড়ি রাজপথে নেমে আসে, যেন রাষ্ট্রের নিজ জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় বাংলাদেশ শিরোনামে উঠে আসে ‘A Government Waging War Against Its Own People’ হিসেবে।
২০২৪ সালের অক্টোবরে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়। তারা শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের ৪৫ জন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’, ‘গণহত্যা’, ‘শিশু হত্যা’ এবং ‘সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগ এনে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপিত হয় সোশ্যাল মিডিয়ার লাইভ ভিডিও, পুলিশ রেডিওর টেপ এবং আক্রান্ত পরিবারের বিবৃতি। আদালতে অভিযোগ ওঠে যে—সরকার ১,২০০ জনের বেশি মানুষকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে। এই ট্রাইব্যুনাল জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সমন্বয়ে গঠিত হয়। এই আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়া একদিকে দেশে আইনের শাসনের বার্তা দেয়, অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী সরকার-সমর্থিত সহিংসতার বিরুদ্ধে নজির স্থাপন করে। শেখ হাসিনা এই সময়ে ভারতীয় অভিবাসন কেন্দ্রে আত্মগোপনে থাকলেও ভারত তাকে সুরক্ষিত অবস্থানে রাখে, যা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে চাপ সৃষ্টি করে।
আন্দোলনের সময়ে ও পরবর্তী দমন-পীড়নে দেশের প্রায় ১১,৭০০ জন নাগরিক আটক হন, যার মধ্যে স্কুল ছাত্র, শিক্ষক, লেখক, চিকিৎসক এবং গার্মেন্টস শ্রমিকও ছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৮৭ বছরের বৃদ্ধা থেকে শুরু করে ১৩ বছরের কিশোর পর্যন্ত ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে ৯২,৪৮৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা, রাষ্ট্রদ্রোহ ও সন্ত্রাসবাদ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। বেশিরভাগ মামলায় অভিযুক্তদের নাম ছিল ‘অজ্ঞাতনামা ৩০-৪০ জন’—যা ছিল আটকের সহজ অস্ত্র। গ্রেপ্তারকৃতদের অনেকেই দিনের পর দিন কোনো অভিযোগ ছাড়াই রিমান্ডে রাখা হয়, আইনজীবী পাননি বা তাদের পরিবারকে জানানো হয়নি। এই বিচারবহির্ভূত আটক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আইনজীবীদের প্রতিবাদ শুরু হয় এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা ‘গণবিচার’ শব্দটি ব্যবহার করতে বাধ্য হন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এটি ছিল রাজনৈতিক বিরোধীদের চুপ করিয়ে দেওয়ার কৌশলগত পদক্ষেপ, যার ফলে বাংলাদেশে আইনের শাসনের ভিত্তি মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
নতুন রাজনৈতিক প্রকল্প, ছাত্রদের লড়াই থেকে রাজনৈতিক দল: আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। রাজপথে তাদের প্রাণের বিনিময়ে গড়ে ওঠে রাজনৈতিক চেতনার নতুন ধারা। এই তরুণেরা ফেসবুক ও টেলিগ্রাম গ্রুপে শুরু করে একটি ঐক্যবদ্ধ দল গঠনের আলোচনা। এরপরই গঠিত হয় ‘ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি-এনসিপি), যার মূলমন্ত্র: ‘আমরা জনগণের জন্য, দল নয়, দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন’। দলে ছিল হিন্দু, মুসলিম, উপজাতি, নারী ও প্রতিবন্ধী কোটার প্রতিনিধিত্ব। এ দল গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা, নির্বাচনে প্রো-রিপ্রেজেন্টেশন পদ্ধতি এবং মানবাধিকার সংরক্ষণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। সিএসপি মডেলে দল পরিচালিত হয়—কেন্দ্রীয় নেতা নয়, বরং অঞ্চলভিত্তিক সমন্বয় কমিটি ও সুশীল সমাজের সঙ্গে মিলিয়ে একটি সমান্তরাল কাঠামো তৈরি হয়। এরাই প্রস্তাব করে অস্থায়ী সরকারের রোডম্যাপ-যা সরকার গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। “ছাত্ররা দল করে না, তারা দিশা তৈরি করে”—এই বাক্যটি আন্দোলনের মূল স্লোগানে রূপ নেয়।
আন্দোলনের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আসে যখন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ইউএনএইচআরসি একযোগে বিশেষ রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানে সরাসরি উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, বিশেষত আইসিসিপিআর (International Covenant on Civil and Political Rights)। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা ও ব্যবসায়িক শাস্তির কথা ঘোষণা করা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি’ আইনের আওতায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আন্তর্জাতিক ক্রমবর্ধমান চাপের কারণে জাতিসংঘ একটি বিশেষ ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পাঠায়। এসব পদক্ষেপ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দেশের সংবিধান পর্যালোচনার দাবিও আন্তর্জাতিক মহল থেকে উঠে আসে, যার প্রেক্ষিতে একটি নতুন সংবিধান পর্যালোচনামূলক কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় অস্থায়ী সরকার।
কেন এটি সফল বিপ্লব? যদিও এই বিপ্লবের তাৎক্ষণিক ফলাফল হিসেবে কোন টেকসই আর্থিক সংস্কার দেখা যায়নি, রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি গড়ে দেয়। দীর্ঘদিনের একদলীয় শাসনের পতন, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের রাষ্ট্রে অংশগ্রহণ—এই তিনটি অর্জন এই আন্দোলনকে ‘সফল বিপ্লব’ হিসেবে চিহ্নিত করে। শেখ হাসিনার দেশত্যাগ, তথ্য ফাঁস, গণবিচার, এবং জনগণ কর্তৃক বিকল্প রাজনৈতিক কাঠামো গঠনের সুনির্দিষ্ট সূচনা—এই সবই ইঙ্গিত দেয় ভবিষ্যতের এক সম্ভাবনাময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার। এ আন্দোলন বুঝিয়ে দেয়, পরিবর্তন রক্ত দিয়ে কিনতে হয়, কিন্তু তার মূল্য অনন্ত হয় না যদি নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা থাকে জনগণের হাতে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলন—এই সাংকেতিক নামটির মধ্যেই আজ ভবিষ্যতের ইশতেহার লেখা আছে।
এ কেবল কোটা নয়, এ এক জাতিগত জেগে ওঠা! জুলাই-আগস্ট বিপ্লব যেন ছাত্রের রক্তে কাঁপলো ‘দুর্গ’! খণ্ড খণ্ড নয়, একাত্ম লড়াই। কোটা থেকে কোন্দল নয়, জেগে উঠল এক নতুন বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার প্রস্থানের মধ্য দিয়ে একটি অধ্যায় শেষ হলেও, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের নতুন গল্প এখনও শুরু হয়নি। ইউনুসের নেতৃত্ব, অস্থায়ী সরকার, ছাত্রদের ‘ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি’-সবই সূচনা, ফলাফল নয়। চোখ হারানো তরুণেরা এখন সমাজ বদলাতে চায়, চেতনায় নেতৃত্ব চায়, আর ‘তথ্যবিহীন’ যুগের পর চায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা। ইতিহাস হয়তো বলবে—এই আন্দোলন তৎকালীন বাস্তবতা পাল্টায়নি, কিন্তু পাল্টে দিয়েছিল ভবিষ্যতের সংজ্ঞা। এখন প্রশ্ন একটাই-এই আলোর স্ফুলিঙ্গ, আগুন হবে তো?
লেখক: মীর আব্দুল আলীম, সাংবাদিক ও সমাজ গবেষক; মহাসচিব, কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।
এমজেএফ