ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

তালেবানি উগ্রপন্থিরা রাষ্ট্রের সতীত্ব হরণ করতে চায়

পীর হাবিবুর রহমান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২০
তালেবানি উগ্রপন্থিরা রাষ্ট্রের সতীত্ব হরণ করতে চায়

করোনার অভিশাপমুক্ত হয়নি পৃথিবী এখনো। বিশ্ব অর্থনীতি এখনো জোরেশোরে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

দ্বিতীয় দফা আক্রমণে বিপর্যয়। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার অশনিসংকেত। রোজ সকালে করোনার মৃত্যু সংবাদ শুনে মন বিষণ্ন হয়। রাত আসে বিষাদের চাদরে ঢাকা জীবন দিয়ে যায়। একটা বছর হয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর মন খারাপ। মন ভালো নেই। হৃদয়হীন খরাকবলিত এক পৃথিবী। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছিল যেখানে সেখানে জীবনের গ্যারান্টি নেই। ভ্যাকসিন এসেছে। দেশে দেশে নেওয়া শুরু হয়েছে। মানুষের দমবন্ধ অবস্থা। জীবন নিরানন্দ। জীবন-জীবিকার যুদ্ধে লড়াই করছে পৃথিবী। কারও ভালো লাগুক আর না লাগুক এখানে একজন সাহসী দৃঢ়চেতা প্রজ্ঞাবান নেতৃত্ব আছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা অর্থনীতির কর্মকান্ড চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি শুরু থেকেই সতর্ক কার্যকর ভূমিকা রাখছেন মানুষের ঘরে খাদ্য সহাযতায়। দ্বিতীয় দফা করোনার আঘাতের আগেই সতর্ক করেছেন। চিকিৎসায় আমরা ব্যর্থতা-ভুলভ্রান্তি সমস্যা সংকট মোকাবিলার তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করে এবার লড়ছি। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাড়ানো, শ্রমবাজার রক্ষা, আমদানি-রপ্তানিতে সাফল্য আনতে হবে। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী থেকে শ্রমিক ও কৃষক এ যুদ্ধে অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। যে শিল্পপতি সৃজনশীল, দেশপ্রেমিক দেশে বিশাল বিনিয়োগ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনাও প্যাকেজ প্রণোদনা দিতে ত্বরিত সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে তাদের সহযোগিতা আরও বাড়াতে হবে। শিক্ষাঙ্গন বন্ধ ও অটো পাস নিয়ে আঁতেলরা ভিন্নমত দিলেও এর চেয়ে চমৎকার বিকল্প ছিল না। বিশাল কর্মসংস্থানের সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন, যে কৃষক-শ্রমিক হাড়ভাঙা পরিশ্রমে মাটির মমতায় শরীরের রক্ত পানি করছেন দেশপ্রেমে শ্রমে, তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দান সরকারকে অব্যাহত রাখতে হবে। আর যে বিশ্বাসঘাতক দেশদ্রোহী ব্যাংকের অর্থ ঋণের নামে লুট করে ফিরিয়ে না দিয়ে বিদেশে পাচার করে নির্লজ্জের ভোগবিলাসী জীবন যাপন করছে তাদের যাবতীয় সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নিতে হবে। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশের সম্পদ অর্থ লুটপাট, চুরি-চামারি, ঘুষ-দুর্নীতি যে কোনো মূল্যে রুখতে হবে। দেশের টাকা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার বন্ধ করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর শক্তিশালী অ্যাকশন নিতে না পারলে শেখ হাসিনার সরকারের সব অর্জন ধূসর হবে। করোনার মরণ ছোবলে এবার এদের চরিত্র বদল হবে মনোবিশেষজ্ঞরা ভেবেছিলেন। কিন্তু না, লোভ-লালসার চরিত্রহীন বিশ্বাসঘাতকতার বিকৃত চরিত্র তারা বদলাতে পারেননি। ঘরে-বাইরে প্রতারণা অব্যাহত রেখেছেন। আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতের চেয়ে বেড়েছে। এটা আমাদের গর্বের। আমরা একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তানসহ অনেকের চেয়ে ভালো আছি। এটা মহা আনন্দের। বিজয়ের। আমরা মরতে মরতে জিততে শিখেছি। করোনায়ও তাই। অনেক উন্নত দেশের চেয়েও এখানে মৃত্যুর হার কম। মানসিক শক্তি ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাই পরিশ্রমী জনগণের অর্জন। কিন্তু তাই বলে স্বাস্থ্য খাতের যে সীমাহীন দেউলিয়া, দুর্নীতি, সব ক্ষেত্রে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে যে দুর্নীতির আগ্রাসনের ভয়াবহতা তা বেমালুম ভুলে থাকব বা এড়িয়ে যাব এমনটি হবে না। সব ঘুষখোর, অবৈধ অর্থ-সম্পদের মালিকদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার কঠিন চ্যালেঞ্জ মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা শুরু করেছেন। এখানেও জয়ী হতে হবে। তাঁকে গভীরভাবে জানতে হবে কারা ভয়াবহ দুর্নীতি, ঘুষ, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, অবৈধ অর্থ-সম্পদের মালিক। কারা এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা। কারা এদের সহায়তাকারী, কারা এদের আইনের খড়্গ থেকে রক্ষা করে এটা জানতে হবে। কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কি জানেন ক্যাসিনো বাজিকরের অভিযোগে একসময়ে খালেদা জিয়ার দেহরক্ষী লোকমান ও কলাবাগানের ফিরোজকে গ্রেফতার করা হলেও তাদের জানুয়ারী মাসেই জামিন দেওয়া হয়? দেশে চেহারা দেখে বিচার নাকি অপরাধ দেখে বিচার? অন্যরা একই মামলার আসামি হয়ে জেলে এরা কেন বাইরে? জি কে শামীম, গোল্ড মুনিরের মতো অপরাধীদের ধরেছেন বলে জেনেছি। কিন্তু এদের উত্থানে কারা এ সরকারের আলাদিনের চেরাগ তুলে দিয়েছিল? কারা বেনিফিশিয়ারি? কারা পাপুলের মতোন বিদেশের বহুল আলোচিত অপরাধীকে স্ত্রীসহ সংসদে অর্থের বিনিময়ে এনে রাজনীতির মান-ইজ্জত শেষ করে দেয়? সংসদকে কলুষিত করে।

সব মিলিয়ে আজ গোটা রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা থাকলেও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সংকট শূন্যতা যে বিরাজমান তা সংসদ থেকে মাঠে ময়দানে তাকালেই দেখা যায়। রাজনৈতিক শূন্যতার সুযোগে নানা সময় নানা অপশক্তি সুযোগ নেয়। এ অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দল আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি কারও জানা নেই। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের আদর্শিক রাজনীতির মূল্যবোধের ধারা থেকে যে বিচ্যুতি ঘটেছে ত্যাগীদের সরিয়ে অনুপ্রবেশকারী ঘটানো হয়েছে সেটি পুনরুদ্ধার হয়নি এখনো। এরা জনগণকে আস্থায় নিয়ে গণজাগরণ করতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতিতে ছাত্রলীগের মহাদুর্দিনের পরীক্ষিত নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে জেলায় জেলায় নেতারা কমিটি ভাগাভাগি, বাণিজ্য, পাল্লা ভারী করতে গিয়ে যে সুবিধাবাদীদের এনে ঢুকিয়েছেন তাদের সঙ্গে রাজনীতির নাবালক বাছুররা লোভ-লালসার পথে সর্বনাশ করছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অসুস্থ হলেও মাঠ নেতা-কর্মীদের কথা শুনছেন। সর্বোচ্চ সময় দিচ্ছেন রোজ প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজমরা। সাংগঠনিক সম্পাদকদের অনেকে সময় দিচ্ছেন তাদের ওপর অর্পিত এলাকার কাজে। কমিটি ভেজালমুক্ত করতে টিম কাজ করছে। একসময় আওয়ামী লীগের জেলা সম্মেলনে উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতা পর্ব শেষে খাওয়া-দাওয়ার পর সাবজেক্ট কমিটির বৈঠক হতো। আলোচনার মাধ্যমেই সমঝোতায় কারও মান-অভিমান রেখেও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হতো। কখনো ভোট হতো। তখন রাত শেষে ভোরের ক্লান্তি নিয়ে সবাই ঘরে ফিরতেন। আবেগ-অনুভূতির আওয়ামী লীগে এখন জনসভা থেকেও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। বাকি পূর্ণাঙ্গ কমিটি হতে বছরও লেগে যায়। এ সময় ঘোষিতদের পকেট তালিকায় তাদের চাপরাশিরাও ঢুকে যায়। দলের আদর্শবানরা ছিটকে যায়। আওয়ামী লীগকেই দলকে মূলধারার নেতা-কর্মীর দলে পরিশুদ্ধ করার দায়িত্ব নিতে হবে। এক গাছের ছাল আরেক গাছের ডাল দিয়ে সামরিক শাসকদের দল যেভাবে গঠিত হয় সেভাবে আওয়ামী লীগ গঠিত হতে পারে না। এলাকায় ক্ষমতার জোরে জনপ্রিয়তা আর্জন করলে, মানুষের মন জয় করলে দল লাভবান হয়, আর ক্ষমতার জোরে অর্থনৈতিক বাণিজ্য ও ত্রাসের রাজত্ব বা ক্ষমতার অপব্যবহার করলে চড়া মাশুল দলকেই দিতে হয়। ১১ বছরের টানা শাসনে আওয়ামী লীগ সারা দেশে গণসম্পৃক্ত জনপ্রিয় দলে পরিণত না হলে এটা দলের ব্যর্থতা। কারণ দেশজুড়ে শেখ হাসিনার উন্নয়নের আলো উজ্জ্বলতা নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে, এটি তো দেখা যায়।

যাক, যে কথা বলছিলাম, রাজনৈতিক শূন্যতায় নানা খেলা খেলে অশুভ শক্তি। কি জঘন্ন অপপ্রচার দেশ-বিদেশে থেকে। নোংরামির সর্বোচ্চ চলছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমরা সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২১টি বছর সংগ্রাম করেছি। কত সতীর্থ শহীদ হয়েছে। কত সহস্র নেতা-কর্মী নির্যাতন জেল সহ্য করেছেন। কিন্তু একালের ডিজিটাল যুগের মতোন রাজনৈতিকভাবে অন্ধ ক্রীতদাসরা বিকৃত চিন্তা থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক ব্যক্তি পর্যায়ে যেভাবে কুৎসিত কদর্য মিথ্যাচার করছেন তা ভয়ংকর। এদের বিভিন্ন অন্ধকার শক্তির অর্থের জোগানে এদের প্রতিহিংসার হিংস্র বাড়াবাড়ি রাষ্ট্রকে মোকাবিলা করতে হবে। দমন কতে হবে যে কৌশলেই হোক। গণতন্ত্র যদি কারও চাওয়া থাকে তাহলে আসুন রাজপথে নামুন। জেলের ভয় উপেক্ষা করুন। রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবিলা করতে হয়। এভাবে বিকৃত নোংরা তথ্য মিথ্যাচারের জঘন্য সন্ত্রাসে সমাজকে কলুষিত করা হচ্ছে। এ পথ রুখে দাঁড়াতে হবে। ইউটিউব প্রয়োজনে বন্ধ করতে হবে।

আগেও বলেছি, রাজনৈতিক ক্ষমতার সুযোগে ক্ষমতাসীনদের দুর্বলতায় তালেবানি ধর্ম ব্যবসায়ী উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে জঙ্গি মিছিল- সমাবেশ করে ধর্মের নামে তালেবানি ধর্ম বাজিকররা উসকানিমূলক বক্তৃতা করেছ। ধর্মের নামে ওরা ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছে। ইসলামী আইনে পরিচালিত ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ মুসলিম দেশে দেশে যেখানে ভাস্কর্য রয়েছে সেখানে সুমহান মুক্তিযুদ্ধে লাখ লাখ শহীদ আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে জাতির পিতার ভাস্কর্য ভেঙে ফেলতে উসকানি দেবে, ভাঙবে এটা রাষ্ট্র মেনে নিতে পারে না। আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষ তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক সেনাবাহিনী দিয়ে উগ্রধর্মান্ধ শক্তিকে দমন করেছিলেন। তার কৌশলে ভুল ছিল বলে আজকের তুরস্কে এরদোগানের বর্ণচোরা ইসলামী শাসন। তবু আতাতুর্কের ভাস্কর্যসহ কোনো ভাস্কর্যে হাত দেননি।

এখানে ধর্ম ব্যবসায়ীদের পূর্বসূরিরা বিজ্ঞানের অর্জনকে জীবনে ধারণ করতে একদিন ধর্মের দোহাই দিয়ে হারাম করেছে। এদের পূর্বসূরিরা মহান ভাষা আন্দোলন থেকে সাংস্কৃতিক গণজাগরণের বিরুদ্ধে ছিল। এখানে তারা স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাই করেনি, একাত্তরে হানাদার বাহিনীর দোসর হয়েছে। এরা গণহত্যা করেছে। মা-বোনদের ধরে নিয়ে পাকবাহিনীর মনোরঞ্জন, বিকৃত যৌনলালসা নিবৃত্ত করতে গণধর্ষণে সাহায্য করেছে। শিশু হত্যা করেছে। ওরা ইসলামের নামে এমন ধর্ম ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। অথচ সেই স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে লড়েছে আমাদের নারীরা। এই ধর্মজীবীরা সেদিন নারীর সাহস ও দেশপ্রেম দেখাতে পারেনি। তারা পাকিস্তানকে তাদের আত্মায় ধারণ করেছে। হেফাজতের মামুনুল হক, বাবুনগরীসহ উগ্র মোল্লাতন্ত্রের এই শক্তি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেবে বলেছে। কি উগ্র হুঙ্কার! মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির একটি অংশের মানুষ প্রতিবাদী হচ্ছে। মামুনুল হক কুষ্টিয়ার ভাস্কর্য ভাঙাকে দুঃখজনক বলেছে। কোথায় কোন চাপ খেয়ে এখন বলছে এমন বক্তব্য সে কোথাও দেয়নি। মিথ্যাচার ধর্মের বাণিজ্য এদের কর্ম। একটা আরেকটাকে ওয়াজে কাফের বলে। সর্বশক্তিমান আল্লাহই জানেন এদের শেষ বিচারে পরিণতি কী হবে। গরম উগ্রতায় পরিবেশ অশান্ত করে পানি ঘোলা করতে চায়। অন্ধকার শক্তির হয়ে খেলে। মিজানুর রহমান আজহারী সাঈদীর পর জামায়াতের প্রোডাক্ট। আওয়ামী লীগের অনেকেও তার হেলিকপ্টারের ভাড়া জুগিয়েছেন। ব্যয়বহুল ওয়াজেও যেতেন অনেকে। অনেকে মুক্তিযুদ্ধের গান গেয়ে স্ট্যাটাস দেন নির্লজ্জের মতো তার হয়ে। মোটা অর্থ, মূল্যবান পোশাকে সাঈদীর আদর্শ পুত্র ওয়াজে গিয়ে বলে ঘরে ঘরে আল্লামা সাঈদী দাও। লেখার পর অবশেষে দেশত্যাগ। মামুনুল হক, বাবুনগরীদের কামাল আতাতুর্কের মতো শেষ করে দাও বলছি না। শেখ হাসিনা পারিবারিকভাবে যেমন ধর্মপ্রাণ আল্লাহভীরু তেমনি রাজনৈতিকভাবে অসাম্প্রদায়িক। তিনি ভারসাম্য নীতি রক্ষা করছেন। শান্তি-সম্প্রীতি উন্নয়ন তাঁর নীতি। কিন্তু রাষ্ট্রকে উগ্র তালেবানি এই ধর্ম ব্যবসায়ীদের দমন-পীড়ন না করে যারা ধর্মের নামে উগ্রতা ছড়ায় সংঘাত-সংঘর্ষ বাধাতে চায় তাদের অনেককেই দেশত্যাগ এবং আইনের আওতায় এনে রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধের দায়ে শাস্তিদান অপরিহার্য। এদের ছাড়া যায় না। এরা একাত্তর সালে মা-বোনের সতীত্ব হরণ করেছে। এখন রাষ্ট্রের সতীত্ব হরণ করতে চায়। বঙ্গবন্ধু দেশের প্রতীক। দেশের আত্মা। এই উগ্র তালেবানি শক্তি রাষ্ট্রের আদর্শকে আক্রমণ করেছে। এদের ক্ষমা নেই। এরা নারীর অগ্রযাত্রা স্তব্ধ করতে চায়। নারীর ক্ষমতায়ন এরা মানে না। গা জ্বলে, নারীদের পোশাককে ধর্ষণের জন্য দায়ী করে আর মাদরাসায় তারা চালায় আল্লাহর আরশ কাঁপানো ছাত্রছাত্রীদের বলাৎকার, ধর্ষণ। কোরআন শপথ করিয়ে সিরিজ ধর্ষণ করে ইমাম। এরা আলেমের শত্রু। এরা ইসলাম ও মুসলমানের শত্রু। এরা জালেম। বর্বর। মাদরাসায় তদন্ত দরকার। মোল্লাদের আয়-ব্যয় দেখা দরকার। ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ। পশ্চিমা দুনিয়ায় ধূমপানের জায়গা নাই হয়ে যাচ্ছে। পুরুষরা ছেড়েই দিয়েছে। মেয়েরা কিছু আসক্ত। সম্প্রতি এক প্রেমিক যুগল ঢাকায় বসে আছে। তরুণী সিগারেট টানছে। এক বাহাদুর দলবল নিয়ে মেয়েটিকে অপমান করে তুলে দিয়েছে। রাস্তায় পুরুষ যখন টানে প্রতিবাদ করে না। কোনো বুকের পাটা নেই। তরুণীর সঙ্গে প্রেমিকসহ হিংসার আগুনে অপমানে মজা। আমাদের সমাজ ও মূল্যবোধ রক্ষণশীলতা রীতিনীতি শালীনতা একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে হারিয়েছে মায়া-মমতা। আমরা সবখানেই নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছি। মধ্যবিত্তের ভাঙন অশুভ হচ্ছে। আধুনিকতার নামে মর্যাদাহীন বিকৃত সস্তা পথে হাঁটছি।

লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।