ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অন্যান্য দল

শুক্রবার দুপুরে সিপিবি কংগ্রেসের উদ্বোধন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
শুক্রবার দুপুরে সিপিবি কংগ্রেসের উদ্বোধন

ঢাকা: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) একাদশ কংগ্রেসের উদ্বোধন হবে শুক্রবার দুপুর ২টায়। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিপিবির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক দলের অতিথি নেতাদের উপস্থিতিতে চার দিনব্যাপী এ কংগ্রেসের উদ্বোধনী সেশন শুরু হচ্ছে।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর, ডেলিগেটসহ শ্রমিক, কৃষক, ছাত্রসহ সারা দেশ থেকে আসা বিভিন্নি শেশি-পেশার পার্টি কর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে ব্যাপক মানুষের গণজমায়েতের প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। উদ্বোধনী সমাবেশ শেষে একটি লাল পতাকা মিছিল বের হবে।

কংগ্রেসের দ্বিতীয় দিন শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে গুলিস্তানের কাজী বশির মিলনায়তনে (মহানগর নাট্যমঞ্চ) রুদ্ধদ্বার সাংগঠনিক অধিবেশন শুরু হবে এবং চলবে ৩১ অক্টোবর বিকেল পর্যন্ত।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নিখিল ভারত কমিউনিস্ট পার্টির উত্তরাধিকারী সংগঠন। ১৯২৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর কানপুরে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে (কংগ্রেস) নিখিল ভারত কমিউনিস্ট পার্টি গঠিত হয়।

জন্মলগ্ন থেকেই ভারতে ব্রিটিশ সরকারের দমন নীতির শিকার কমিউনিস্ট পার্টি বেশির ভাগ সময়েই গোপনে কাজ করেছে। ১৯৩৪ সালে কমিউনিস্ট পার্টিকে প্রথম নিষিদ্ধ করা হয়। চল্লিশের দশকে পার্টি সমগ্র ভারতে শ্রমিক আন্দোলন সংগঠিত করে। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৬ পর্যন্ত কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে ভারতবর্ষজুড়ে সংগঠিত হয় তেভাগা, নানকা, টঙ্ক, তেলেঙ্গনা, কেরালায় পুন্নাপা ভায়ালা আন্দোলন ও কায়ুর আন্দোলনের মতো ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলন।
 
ভারত ভাগের পর ১৯৪৭ সালে ঢাকায় ৭ সদস্যের একটি আঞ্চলিক কমিটি গঠন করা হয়। পরের বছর কলকাতায় অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অংশ নেওয়া কাউন্সিলররা ৬ মার্চ পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন। একই দিনে পূর্ববঙ্গের কাউন্সিলরা পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক কমিটি গঠন করেন।

১৯৪৯ সাল থেকে ৫০ সাল পর্যন্ত মুসলিম লীগ সরকার কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে দমন-নির্যাতন চালাতে থাকে। ৫২-র ভাষা আন্দোলনে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি বিশেষ ভূমিকা রাখে। ’৫৪ সালের নির্বাচনে কমিউনিস্ট পার্টি যুক্তফ্রন্টকে সমর্থন দেয়। প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে কমিউনিস্ট পার্টি মনোনীত ৭ প্রার্থীর মধ্যে ৪ জন নির্বাচিত হন। ওই বছর কমিউনিস্ট পার্টি আবার নিষিদ্ধ হয়।

৬৯এর গণঅভ্যুত্থানে কমিউনিস্ট পার্টি সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টি গুরত্বপূর্ণ ভ‍ূমিকা পালন করে। কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়নের সরাসরি পরিচালনায় একটি বিশেষ গেরিলা বাহিনী পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পার্টির নতুন নাম হয়- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। কমরেড মণি সিংহের নেতৃত্বে স্বাধীন দেশে পার্টি নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ করে রাস্তায় নামে কমিউনিস্ট পার্টি। ওই সময় পার্টির নেতা-কর্মীরা সামরিক সরকারের কঠোর নিপীড়নের শিকার হন। পার্টির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা গ্রেপ্তার হন। ১৯৭৭ সালের অক্টোবর মাসে কমিউনিস্ট পার্টি ফের নিষিদ্ধ হয়। পরের বছর সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়।
 
১৯৯৩ সালে পার্টি অভ্যন্তরীণ সংকটে পড়ে এবং পার্টির ভেতর থেকেই সিপিবিকে বিলুপ্ত করার চেষ্টা চালানো হয়। ওই সময় সিপিবির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ পর্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ নেতা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়। এক পর্যায়ে প‍ার্টি বিলোপের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় ওই নেতারা সিপিবি ত্যাগ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অন্যান্য দল এর সর্বশেষ