ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অন্যান্য দল

ফাহাদ হত্যায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি ড. কামালের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৯
ফাহাদ হত্যায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি ড. কামালের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: মতপ্রকাশের কারণে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করা সংবিধানের ওপর আঘাত মন্তব্য করে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সংবিধানে আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। যে কেউ তার মত প্রকাশ করতেই পারেন। সেজন্য পিটিয়ে কাউকে হত্যা করা জঘন্যতম অপরাধ।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা আকরাম খাঁ হলে গণফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ফাহাদ হত্যার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করে ড. কামাল হোসেন বলেন, তদন্ত করে গভীর হতে সত্যিকারের ঘটনা উদ্ঘাটন করতে হবে।  এটা কোনো দলীয় বক্তব্য নয়। ১৬ কোটি মানুষের একজন হিসেবে আমি এই দাবি জানাচ্ছি।   

এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লেজুড়বৃত্তি ছাত্র রাজনীতি আমরা কোনোদিনই চাই না। তবে স্বাধীন ছাত্র রাজনীতি থাকতে পারে।  

ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, বিচার বিভাগীয় হতে পারে সঙ্গে অন্যরাও থাকতে পারেন।  

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনার দলের সংসদ সদস্য পদত্যাগ করবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।  

এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী।

তিনি  বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী এমন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তারা আজ ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের মতো আচরণ করছে। হলে হলে টর্চার সেল। বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজের হলগুলোতে রয়েছে টর্চার সেল। টার্গেটে থাকা শিক্ষার্থীকে টর্চার করার আগে দেওয়া হয় বিরাধী কোনো সংগঠনের তকমা। এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, রাজনৈতিক ভণ্ডামি ও কৌশলী প্রতারণা।

‘সার্বিকভাবে বিশ্লেষণ করলে দেশ আজ ধ্বংসের মুখোমুখি। জনগণের মালিকানা জোরপূর্বক ছিনতাই করে ক্ষমতা দখলের কারণে আজ গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকুও মুছে যেতে বসেছে। সুশাসন ও জবাবদিহিতা নেই। শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার লক্ষে রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক ন্যূনতম ব্যবস্থার পরিবর্তে কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা যেখানে কেন্দ্রীভূত দুর্নীতির মহাউৎসব সেখানে দৃশ্যমান। বর্তমান ভিন্নমত দমন, মিথ্যা মামলা, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা, সভা-সমাবেশ করতে দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা-নিষেধ, নিবর্তণমূলক আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরির মাধ্যমে সরকার প্রকাশ্যে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছে। এমনকি ভোট দেওয়ার অধিকার ধ্বংস সাধন করা হয়েছে। এই ধরনের রাষ্ট্র সমাজ ব্যবস্থায় লুটপাট, ধর্ষণ, কালো টাকা, অর্থ পাচারকারীদের রমরমা হবে এটাই স্বাভাবিক। সরকারি হত্ৰছায়ায় গুটিকয়েক চক্র ব্যাংক লুট করছে, টেন্ডারবাজি করছে, আর্থিক ভাগাভাগি নিয়ে খুন-খারাবি চালাচ্ছে। দেশে আজ ক্যাসিনো সংস্কৃতি। মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। সর্বত্রই চলছে অনিয়ম,  উচ্ছৃঙ্খলতা এবং ব্যাপক দুর্নীতি।

তিনি আরও বলেন, এ অবস্থা থেকে দেশবাসী পরিত্রাণ পেতে চায়। আসুন, দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত, ভণ্ড, গণবিরোধী ও কর্তৃত্ববাদী শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করি। দেশে কার্যকর গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাপিয়ে পড়ি।  

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সায়ীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজবাহ উদ্দিন, মহসীন রশিদ, মোকাববির খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিন আহমেদ আফসারি, মোস্তাক আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারি হামিম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা,  অক্টোবর ১০ ,  ২০১৯
এমএইচ/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অন্যান্য দল এর সর্বশেষ