ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপির মুখে সন্ত্রাসের বুলি, ভূতের মুখে রাম রাম: কাদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
বিএনপির মুখে সন্ত্রাসের বুলি, ভূতের মুখে রাম রাম: কাদের ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির মুখে সন্ত্রাসের বুলি, ভূতের মুখে রাম রাম।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়নে এ আলোচনা সভা ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে দেশের রাজনীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছাছে, যেখানে বেশি বেশি নীতির কথা যারা বলে, তারাই দুর্নীতি করে। বেশি গণতন্ত্রের কথা তারাই বলে, যাদের মুখে গণতন্ত্র, অন্তরে স্বৈরাচার। এদের চিহ্নিত করতে হবে।

সন্ত্রাস কত প্রকার ও কী কী, এটা বিএনপির চেয়ে ভালো আর কেউ জানে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখন শহীদ মিনার শান্তিপূর্ণ প্রভাত ফেরির চমৎকার জায়গা। এ শহীদ মিনারে বিএনপি প্রথম রক্ত ঝরিয়েছে। আমাদের মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রমকে শহীদ মিনারে কুপিয়ে পেট কেটে ১৪ ইঞ্চি পর্যন্ত বিশাল গর্ত করা হয়েছিল। তিনি বেঁচে থাকবেন এ ভরসা ছিল না। শহীদ মিনারে যারা রক্ত ঝরিয়েছে, তারা এখন বর্তমান সরকারের আমলে সন্ত্রাসের কথা বলে। যারা এদেশে আগুন সন্ত্রাসের জন্ম দিয়েছে, তারা আজকে সন্ত্রাসের কথা বলে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি কত মানুষ, কত কৃষক, কত শিশুকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে তার হিসেব নেই। রাস্তার পাশের হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলেছে, রাস্তা কেটে ফেলেছে, ভূমি অফিস, বিদ্যুৎ অফিস, বাস, রেল লাইন পুড়িয়েছে, নিরীহ যাত্রী, স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী পুড়িয়েছে। এসব অপকর্ম যারা করেছে, তাদের মুখে সন্ত্রাসের বুলি, ভূতের মুখে রাম রামের মতো।

এ সময় তিনি শিশু-কিশোরদের সন্ত্রাস থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানুষের মতো মানুষ হতে হলে মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে হবে। তবেই তোমরা ভালো মানুষ হতে পারবে।

দেশের রাজনীতিতে আরও চরিত্রবান লোক দরকার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ক্ষমতার মঞ্চে চরিত্রবানরা না থাকলে, চরিত্রহীনদের ক্ষপ্পরে থাকবে দেশ। ভালো মানুষ না থাকলে, খারাপ মানুষরা দেশ চালাবে। মেধাবীরা না এলে, মেধাহীন লোকেরা এমপি-মন্ত্রী হবে। তাতে দেশের কোনো উপকার হবে না।

তিনি বলেন, আজকাল সংগঠন মানেই চাঁদাবাজি। নতুন নতুন দোকান খোলে একটা নাম দেয়, ওই নামে বিশেষ বিশেষ দিনে চাঁদাবাজি করে। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ এর থেকে দূরে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে এ আশা করছি।

অর্থ ছাড়া আজকাল রাজনীতি বড়ই কঠিন মন্তব্য করে তিনি বলেন, শুধু আদর্শ দিয়ে আজকাল রাজনীতি চলে না। এদেশ এখন একজন আদর্শবাদী নেতা শুধু আদর্শের জোরে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জিততে পারেন না। টাকা ছাড়া কর্মীও পাওয়া যায় না। এ অবস্থায় শিশু কিশোরদের একটি সংগঠন গড়ে তোলা খুবই কঠিন কাজ। সেই জায়গায় শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ একটি সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের শিশু-কিশোররাই ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনায় দায়িত্ব পালন করবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি সবসময় বিশ্বাস করি আমার ভাগ্যের চেয়ে বেশি কিছু আমি পাবো না। আমার সময়ের আগেও আমি পাবো না। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে ভাগ্য যেমন লাগে, তেমনি সময়ও লাগে। অস্থির হলে হবে না। ধৈর্য্য ধরতে হবে, লেগে থাকতে হবে। ঝড়ে, জলোচ্ছ্বাসে, অন্ধকারে, দুর্যোগে, বিপদে-আপদে, আঁধারে লেগে থাকতে হবে। যে লেগে থাকতে পারে না, সে কোনো দিনও বড় হতে পারবে না। জীবনে লক্ষ্য ঠিক করে সেদিকে এগিয়ে যেতে হবে।

উপস্থিত শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এ জীবন সংগ্রামে তোমরা কখনো হতাশ হবে না, কখনো নিরাশ হবে না। জীবন একটাই, লড়াই করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। জীবনের অপর নাম হচ্ছে লড়াই, জীবনের অপর নাম হচ্ছে সংগ্রাম, জীবনের অপর নাম হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। যে নদীতে ঢেউ নেই, সেটা নদী নয়। যে সাগরে গর্জন নেই, সেটা সাগর নয়। যে আকাশে মেঘ নেই, সেটা আকাশ নয়। এটাই হচ্ছে চ্যালেঞ্জ, যা অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে পারলেই লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে। মুকুটে যুক্ত হবে সাফল্যের নতুন নতুন পালক।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বলতেন কষ্ট করার জন্য আমার জন্ম হয়েছে। শেখ হাসিনার জীবনও আমরা দেখেছি। কষ্ট করে তিনি আজকে এখানে এসেছেন। সেই ৮১ সাল থেকে আমরা আমাদের নেত্রীকে দেখে আসছি, কী কষ্ট, কী নির্যাতন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি রাজনীতি করে আসছেন। বহুবার তার জীবনের ওপর আঘাত এসেছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জীবন শেখ হাসিনার। এ ঝুঁকিপূর্ণ জীবন নিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশকে আজকে বিশ্বের বিষ্ময় করেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করে এখন তার পরবর্তী লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ।

শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে. এম. শহিদ উল্যার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পন্টু, অতিরিক্ত অ্যাটর্নী জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, তরফদার মো. রুহুল আমিন, নাজমুল হক, সাংগঠনিক সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
এসসি/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।