ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পোশাক শিল্প ধ্বংসের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে সরকার: রিজভী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২৩
পোশাক শিল্প ধ্বংসের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে সরকার: রিজভী ফাইল ফটো

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশের তৈরি পোশাক ব্যবসা অন্য দেশের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে।

রোববার (১২ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি বলেন, সরকার অত্যন্ত সুকৌশলে দেশের সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড় খাত পোশাক শিল্প ধ্বংসের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে।

তিনি (শেখ হাসিনা) পুনরায় ’৭৪ এর মতো দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করতে চান, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করতে চান।  

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মালিকরা গত শনিবার সরকারের প্ররোচনায় ১৫০টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। ন্যায্য দাবি আদায়ের বিক্ষোভের দায়ে ১১ হাজার শ্রমিককে অভিযুক্ত করে মামলা করেছে দলদাস পুলিশ সরকারের নির্দেশে। গোটা অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। জনগণ বিশ্বাস করে রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসায় এখন অন্য দেশের হাতে তুলে দিয়ে অবৈধ ক্ষমতার থাকার গ্যারান্টি চায় অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রিজভী বলেন, বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মী শুধু নয়, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, কর্মজীবী এমনকি গার্মেন্টস শ্রমিকরা পর্যন্ত এ ফ্যাসিস্টদের কাছে নিরাপদ নয়। বেতন-ভাতা বাড়ানোর ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের ওপর পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে আজ পর্যন্ত ৪ জন শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে গাজীপুরে গার্মেন্টস কর্মী আঞ্জুয়ারা মো. জামালউদ্দিনকে হত্যা করা হলো? আঞ্জুয়ারা রাষ্ট্র ক্ষমতার ভাগ চায়নি, সে শুধু স্বামী সন্তান নিয়ে একটু সুখে শান্তিতে বেঁচে থাকার দাবি করেছিল, এজন্য তাকে জীবন দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, চারিদিকে শুধু জমাট বাধা কান্নার পাহাড়। প্রতিদিনই সেই কান্নার পাহাড় আরও উঁচু হচ্ছে। ১৫ বছর ধরে সেই কান্নার পাহাড় থেকে চুইয়ে নামছে আর্তনাদ। আর গল গল করে উঠছে ক্রসফায়ারে লোকদের আর গুম হওয়া মানুষের অভিশাপ। রাতে-দিনে তারা (সাদা পোশাকধারীরা) কালোকাচের মাইক্রোবাসে নাৎসী বাহিনীর মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। ছোঁ মেরে তুলে নিচ্ছে গণতন্ত্রকামীদের। তাদের হাত থেকে সাধারণ মানুষও রেহায় পাচ্ছে না। র‌্যাব-পুলিশের নামধারীরা আওয়ামী পুলিশ লীগ আন্দোলনরত বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের না পেলে তাদের বাবা-মা, ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন এবং আত্মীয় স্বজনদেরও ধরে নিয়ে অদৃশ্য করে রাখছে, তুলে নিয়ে গিয়ে অস্বীকার করা হচ্ছে।

এভাবে বিনা পরোয়ানায় তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কোথাও কোথাও জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের মতো জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করছে এ নামধারী আওয়ামী পুলিশ লীগ। কোথাও কোথাও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের না পেয়ে বাথরুম থেকে পানি এনে বাসার সব বিছানায় ঢেলে দিয়েছে তারা। সারা দেশে দলদাস পুলিশ বাহিনী বিনা মামলায় বিনা ওয়ারেন্টে বা গায়েবি মামলায় পাইকারিহারে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করছে। তুলে নিয়ে গিয়ে বন্দি অবস্থায় অনেককে কোমর থেকে পায়ের তালু অবধি হাতুড়িপেটা করে অচল করে দেওয়া হচ্ছে, গুলি করে পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনারা ভোটের অধিকার আদায়ে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের প্রতিপক্ষ হবেন না। গণতন্ত্রকামী মানুষের জোয়ার ঠেকাতে পারবেন না। যেসব সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এখন পুলিশ কর্মকর্তা হয়ে গণতন্ত্রকামীদের হুমকি দিচ্ছেন, সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে ভয় দেখাচ্ছেন তারা গণবিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসুন। অন্যথায় পুলিশের মর্যাদাপূর্ণ ইউনিফর্ম খুলে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে রাজপথে নামুন। দুঃশাসনে পিষ্ট প্রতিবাদী মানুষকে নিশ্চিহ্ন করতে দলীয় ও অবৈধ রাষ্ট্রশক্তির হয়ে বেপরোয়া আচরণ করবেন না। আপনারা কে কি করছেন বাংলাদেশের জনগণ সব হিসাব রাখছে। গণঅভ্যূত্থানে আপনাদেরও পরিণতি কি হবে তা জনগণ নির্ধারণ করে রাখছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩৬৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন মামলায় ১ হাজার ৪৮৫ জনের অধিক নেতাকর্মী।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২৩
টিএ/জেএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।