বরিশাল: চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, দেশে বর্তমানে কঠিন অবস্থা চলছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র চলছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ঐতিহাসিক চরমোনাইর বার্ষিক মাহফিলে আয়োজিত ওলামা ও সুধী সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে আপনারা মায়ের কোলের মতো আছেন। কিন্তু কেউ কেউ দেশে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য আপনাদের ব্যবহার করছে, আপনারা সতর্ক থাকুন।
তিনি ওলামা সম্মেলনে আগত ওলামায়ে কিরাম ও জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধ স্বপ্নের স্বদেশ বিনির্মাণে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
ওলামা সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, চরমোনাই মাহফিল ১০০ বছর অতিক্রম করেছে। ঐক্যের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবো ইন শা আল্লাহ। আমরা কুরআনী শাসন চাই। এজন্য আমরা সকলে মিলে এক হয়ে কাজ করবো।
খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ বলেন, ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হবো।
বাংলাদেশ ফরায়েজী জামায়াতের আমির হাজী শরীয়তুল্লাহর উত্তরসূরী বাহাদুরপুরের পীর হাফেজ মাওলানা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান বলেন, এদেশের আলেম ওলামা ৮৮ বা ৯৮ সালের বন্যার পানিতে ভেসে আসেনি। সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি করছি।
বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন হাফেজ মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদী বলেন, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বড় নেয়ামত। ৯০ ভাগ মুসলমানের সংবিধানে মূলনীতি হবে কুফরি মতবাদ এটা মেনে নেওয়া যায় না। ইসলাম মানুষের জান-মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা দেয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ৫ আগস্ট পরিবর্তন হলেও পরাজিতরা ষড়যন্ত্র করছে। তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে উঠে পড়ে লেগেছে। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত চিন্ময় দাস দেশকে অস্থিতিশীল করতে অপচেষ্টা করছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কেন বিবৃতি দেব? ভারতীয় মিডিয়াগুলো অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশে ভারতের মিডিয়াকে নিষিদ্ধ করেছে। দেশের পক্ষে ও বিরুদ্ধে কে এটা এখন পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। আমরা ইসলামী রাজনৈতিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী বলেন, ইসকন নামক সন্ত্রাসী সংগঠন দিয়ে দেশে গৃহযুদ্ধ লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। চরমোনাই পীর সাহেব ও আল্লামা মামুনুল হক সাহেব একসাথে বসেছেন এবং হাতে হাত রেখে একত্রে পথ চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন, ইসলামী বক্তা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক, গণ অধিকার পরিষদ সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, হাফেজ্জি হুজুরের জামাতা ও খলিফা কমলনগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আল্লামা খালিদ সাইফুল্লাহ (পীর সাহেব কমল নগর), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা নেছার উদ্দীন, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী এবং মুফতী দেলোয়ার হোসাইন সাকীর যৌথ সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন কুরিগ্রাম আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মাদ নূর বক্স, ইসলামী আন্দোলন কাতার কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুল হালিম, মাগুরার শত্রুজিৎপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ওসমান গনী মুছাপুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র শাখা সভাপতি মাওলানা বজলুর রহমান খান, হালিশহর বাইতুল করীম মাদরাসার শাইখুল হাদীস মাওলানা কাসেম বাবুনগরী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২৪
এমএস/এমজে