সিলেট: সিলেটে রিজেন্ট পার্ক, রিসোর্টে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় ছাত্রদলের ছয় নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে রিসোর্ট মালিক ভাটাটিয়া হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে এসএমপির মোগলাবাজার থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন- সালেহ আহমদ, আলা উদ্দিন ফারাবি, সানোয়ার বখত রাহিন, হুসাইন আহমদ, কবির আহমদ ও সুমন আহমদ। এর মধ্যে আবু সালেহ দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং অন্যরাও ছাত্রদলের নেতা-কর্মী বলে জানা গেছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ সময় তিনি বলেন, এখনও আসামিদের কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে জড়িতদের গ্রেপ্তারের সাঁড়াশি অভিযান চালাবে পুলিশ।
গত ১৯ জানুয়ারি বিকেলে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার উপজেলার সিলাম এলাকায় অবস্থিত রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্ট থেকে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা ১৬ তরুণ-তরুণীকে আটক করে। এরপর আটজনকে ১০ লাখ টাকা কাবিন ধার্য করে বিয়ে দেন এলাকাবাসী। এছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক অপর আটজনকে অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। আইন লঙ্ঘন করে অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়া বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। এই ইস্যুতে রিজেন্ট পার্ক, রিসোর্টে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়।
মামলার বাদী রিজেন্ট পার্কের ভাড়াটে পরিচালক হেলাল উদ্দিন বলেন, দুর্বৃত্তরা হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়ে রিসোর্টে অনেক ক্ষতিসাধন করেছে। যে ভবনে আগুন দিয়েছে সেটির ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে পারিনি। তবে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকার ক্ষতির ধারণা করছেন তিনি। আমি ন্যায় বিচার চাই, পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের গ্রেপ্তার করুক।
ঘটনার পর স্থানীয়রা দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে আসছিল। যে কারণে জনতা রিসোর্টের বিভিন্ন কক্ষ থেকে ১৬ জন তরুণ-তরুণীকে আটক করেন। এ সময় তাদের অভিভাবকদের খবর দেওয়া হয়। পরে কথিত প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্ক আটজন ছেলে-মেয়েকে প্রকাশ্যে কাজী ডেকে অভিভাবকদের সম্মতিতে বিয়ে পড়িয়ে দেওয়া হয়। আর অপ্রাপ্ত বয়স্ক আট তরুণ-তরুণীকে অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়। বিয়ে পড়াতে কাবিনে ১০ লাখ টাকা করে ধার্য করেন জনতা। এছাড়া কাজির বিয়ে পড়ানোর টাকাও জনতা চাঁদা তুলে পরিশোধ করেন।
ঘটনার সময় জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তাজরুল ইসলাম তাজুলও উপস্থিত ছিলেন। যদিও তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মোবাইলফোনে মালিকপক্ষের কল পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান।
তবে মালিক পক্ষের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদলের একটি গ্রুপ চাঁদা দাবি করে আসছিল। সেই আক্রোশ থেকে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার পাঁচদিনের মাথায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৫
এনইউ/এসআরএস