ঢাকা: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী ও চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং দুর্নীতি ও খুনিদের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন জরুরি।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রদের প্রতি আদর্শবান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তোমরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলোর আচরণ থেকে শিক্ষা নাও, যারা সন্ত্রাসী, খুনি ও চাঁদাবাজির মতো অপকর্মে জড়িত। তাদের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তোমরা এমন একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠা করো যা ইসলাম চায়।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ছেলেরা ৩৪ বছরে কোনো বদনাম অর্জন করেনি, যা আল্লাহর বিশেষ রহমত। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই সংগঠনের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে এবং দেশ থেকে খুনিদের উৎখাত করা সম্ভব হবে।
বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতির সমালোচনা করে মুফতী রেজাউল করীম বলেন, গত বছর জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে অনেক শিক্ষার্থী জীবন দিয়েছে, পঙ্গু হয়েছে এবং চোখ হারিয়েছে একটি সুন্দর দেশ পাবার জন্য। প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতি কালো টাকার দৌরাত্ম্য, পেশিশক্তি এবং ভোট জালিয়াতির সুযোগ করে দেয়, যা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার এবং চাঁদাবাজির জন্ম দেয়। তাই এই নির্বাচন পদ্ধতি আর বাংলার জমিনে দেখতে চাই না।
পিআর পদ্ধতির পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি চালু হলে একটি সুষম সংসদ তৈরি হবে। বিশ্বের ৯১টি দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে এবং কোনো দেশই এটিকে বাতিল করেনি। বরং নতুন নতুন দেশ এই পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে।
তিনি বলেন, দেশের সিংহভাগ রাজনৈতিক দলই পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চায়, কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এর বিরোধিতা করছে। তাই সরকারের প্রতি গণভোটের আহ্বান জানাচ্ছি, জনগণের কাছে মত জানতে চাওয়া হোক-তারা কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়।
সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) পরিচালিত এক জরিপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেখা গেছে, ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কয়েকটি মৌলিক দাবি জানিয়ে রেজাউল করীম বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের দৃশ্যমান বিচার করতে হবে। সব শেষে একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ইএসএস/এসআইএস