ঢাকা, শনিবার, ২১ ভাদ্র ১৪৩২, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

রাজনীতি

‘আ. লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পর জাপা থাকার যৌক্তিকতা নেই’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৩৭, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫
‘আ. লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পর জাপা থাকার যৌক্তিকতা নেই’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল

১৫ বছরে আওয়ামী লীগকে স্বৈরাচার হতে সহায়তা করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে।

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ না থাকলে জাতীয় পার্টিও থাকতে পারে না।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেবর) শাহবাগ মোড়ে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত তিন দফা দাবিতে সংহতি সমাবেশে বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন নেতারা।

অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, নুরুল হক নুরুর ওপরে আগেও হামলা হয়েছে, কিন্তু এমন হামলা হয়নি। প্রশ্ন হচ্ছে স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে, এখনও নুরের ওপরে হামলা চালালো কারা!

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন কোনো টালবাহানা চলবে না। মানুষ কোনো টালবাহানা সহ্য করবে না।

তিনি বলেন, নুরুল হক নুরের ওপর হামলার বিচার না হলে আমরা রাজপথে নামবো। আর এ মিছিলের আগ্রভাগে থাকবে বিএনপির নেতাকর্মীরা। আমাদের নেতা তারেক রহমান এসে সেই মিছিলে যোগ দেবে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা চ্যাপ্টার ক্লোজ। দেশে তার যেসব আন্ডা বাচ্চারা আছে তারা মনে করছে শেখ হাসিনা টুপ করে দেশে ঢুকে পড়বে, তা হবে না। জনগণের আন্দোলনের তোড়ে যে স্বৈরাচার বিদায় নেয় সেই স্বৈরাচার বিশ্বে কোনো দেশে কোনো দিন ফিরে আসতে পারেনি। রাজনৈতিকভাবে মৃত ব্যক্তির ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। মৃত ব্যক্তি যদি ফিরে আসতো তাহলে গোরস্থানে গিয়ে মানুষ তার স্বজনের ফিরে আসার আশায় বসে থাকতো, কখন বুঝি তার স্বজন ফিরে আসবে। তেমনি হাসিনাও বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো দিন ফিরবে না।

প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্তকে উদ্ধৃত করে হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। হাসিনা দিল্লিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর পা ধরেছে আর ছাড়বে না। বিষয়টি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে মনে রেখে বাংলাদেশ সম্পর্কে সতর্ক হয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশ অন্য কোনো দেশের প্রেসক্রিপশন চলবে না।

গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, আমরা যারা কথা বলছিলাম তাদের ওপর হামলাকারী পুলিশ বা সেনা বাহিনীর লোক হতে পারে না, তারা আওয়ামী লীগের দোসর। সেনাপ্রধান ও পুলিশ প্রধানকে বলবো, যারা হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় আপনারাও এ দায় এড়াতে পারবেন না।

সরকার নুরুল হক নুরের ওপর হামলার তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, যারা হামলা করেছে ভিডিও ফুটেজ থাকতেও কেন এখন পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। এ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ ছাড়া নুরুল হক নুরের ওপর পুলিশ হামলা করেনি। নুরুল হক নুরের ওপর হামলার দায় নিয়ে নিলর্জ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।

জামায়াতে ইসলামী ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি সফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আজকে এখানে যারা উপস্থিত আছে তারা জাতীয় পাটিকে নিষিদ্ধের দাবি যদি সবাই মন থেকে করে থাকে, যদি বুকের কথা হয়, যদি এখানে জাতীয় পার্টির বিচারের দাবি তুলে বাইরে গিয়ে ভুলে যায় তাহলে জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ হবে না। জাতীয় পার্টির নিষিদ্ধ করতে হলে সবাইকে এক হতে হবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটি আতাউল্লাহ বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম বলে জুলাইয়ে সফল হয়েছিলাম। ঐক্যবদ্ধ ছিলাম বলে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে পেরেছি। আমরা এখন ঐক্যবদ্ধ নই, তাই নুরুল হক নুর মার খায়। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ দাবি তোলার কারণে আজকে নুর মার খাওয়া মানে জাতীয় পার্টকে সঙ্গে নিয়ে ২০১৪ সালের মতো আগামী বছরে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আবারও একটি নির্বাচন হওয়া।

ঢাকা বিশ্ববিদয়ালয়ের অধ্যাপক আবু মুছা বিল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সময় সবাই ঐকমত্য হয়নি, জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতেও হচ্ছে না। এর জন্য দায় শোধ করতে হবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল বলেন, সেদিন আমরা জাতীয় পার্টির অফিসের সামনে দুই জুলাইযোদ্ধা হত্যা মামলার আসামি জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিল করাছিলাম৷ তখন আমাকে সেনাবাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল বলেছিলেন, মব করবেন না। চলে যান। আমি বলেছিলন, জিএম কাদের হত্যা মামলার আসামি তাকে কেন পাহারা দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন এটা আমাদের দেখার বিষয়। এরপর চলে যাই। এরপর পার্টি অফিসের সামনে সংবাদ সম্মেলনের সময় নুরুল হক নুরসহ আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।

ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট মো. আবু তাহের বলেন, নুরের ওপর হামলার বিচার করুন নয়তো পদত্যাগ করুন।

সমাবেশে খেলাফত মজলিশের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনতাসির আলী, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোরশেদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্ট (জাগপা) মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, লেফটেন্যান্ট  কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সংগঠনটির উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবদুল জাহের ও মাহফুজুর রহমান #

জেডএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।