ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শোকে বিহ্বল সন্তানহারা খালেদা

সাজেদা সুইটি, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫
শোকে বিহ্বল সন্তানহারা খালেদা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

ঢাকা: ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
 
গুলশান সূত্র জানায়, ঘটনার আকস্মিকতায় অনেকটাই যেনো নিথর হয়ে পড়েছেন মা খালেদা।


 
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মালয়েশিয়ায় আরাফাত রহমান কোকো’র মৃত্যু হয়। অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। মৃত্যুকালে কোকোর বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।

খালেদা জিয়ার মিডিয়া উইং সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, প্রথমে ভাইয়ের স্ত্রী’র (কোকোর মামী) কাছে দুঃসংবাদটি শোনেন তিনি।
 
গুলশানের অপর সূত্র জানান, খবরটি পেয়ে প্রথমে খালেদা যেন বুঝতে পারছিলেন না কিছু। পরে যখন নিশ্চিত হলেন যে, সন্তান হারিয়েছেন তিনি, মানসিক আঘাতে নিস্তব্ধ হয়ে পড়েন খালেদা।
 
খালেদার শোক-বিহ্বল অবস্থা দেখে উপস্থিত অন্যরা সান্ত্বনা দেওয়ার কথাও যেন প্রথমে ভুলে যান।
 
এদিকে সংবাদটি ছড়িয়ে গেলে মিডিয়াকর্মীদের ভিড় বাড়ে গুলশান কার্যালয়ের সামনে, যেখানে ৩ জানুয়ারি থেকেই রয়েছেন খালেদা। খালেদার ‍অনুমতি নিয়ে প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
 
খালেদার ‍বড় ছেলে তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন। কোকো’র প্রতি তারেকের স্নেহ ও যত্নের খবর সবাই কমবেশি জানেন। তাই এই খবরে তিনিও যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হবেন- তা বলাই বাহুল্য।
 
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর এবং রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আগ পর্যন্ত দুই ছেলেকে ঘিরেই ছিল খালেদার জীবনযাপন। পরে রাজনীতিতে আসেন খালেদা, এক সময় আসেন তারেকও। কোকো সেভাবে কোন পদের অধিকারী না হলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচিত হন নানাভাবে।
 
ওয়ান-ইলেভেনের সময়টিতে ভেঙে যায় জিয়া-পরিবার। তিন সদস্য তিন দেশে বসবাস করেন পরবর্তী সময়ে। খালেদা জিয়া বাংলাদেশে, তারেক লন্ডনে, কোকো মালয়েশিয়ায়।
 
একে অন্যের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতে গোপনীয়তা বজায় রাখেন তারা বিভিন্ন সময়। তারেক যতটা মায়ের দেখা পাচ্ছিলেন, কোকো সেভাবে পাচ্ছিলেন না। তাকে মিডিয়া ও লোকচক্ষুর আড়ালেই বেশিরভাগ সময় কাটাতে হচ্ছিল।
 
মালয়েশিয়ার মন্ত্রীপাড়ায় বাসরত কোকোর নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করেন তারেক। আদরের ছোট ভাইয়ের অবস্থান যেন প্রকাশ না হয়ে পড়ে সেদিকে তার নজর ছিল সবসময়। ভাইকে সময় দিতে তারেক প্রায়ই চিকি‍ৎসার অযুহাতে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে যেতেন।
 
তারেক ছোটবেলা থেকে কোকোর নানা আবদার পূরণ করে আসছিলেন বলে তাদের কাছের মানুষদের কাছ থেকে জানা যায়। মায়ের ব্যস্ততায় ছোট ভাইকে সময় দিতেন তিনি।
 
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচির সংবাদেই চোখ ছিল সবার। এর মাঝে হঠাৎ কোকোর মৃত্যুসংবাদে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে সবদিকে।
 
ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমের মনোযোগ ও আলোচনা এখন জিয়া পরিবারের দুঃসংবাদে।  
 
দুপুরে কোকোর মৃত্যুসংবাদের সত্যতা জানতে বাংলানিউজ থেকে বিভিন্ন জনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছিল। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে.জে. (অব) মাহবুবুর রহমান এই সংবাদে প্রথমেই বলে ওঠেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা) এই খবর কীকরে সহ্য করবেন!’
 
খালেদার উপদেষ্টা আহমেদ আযম খানের প্রতিক্রিয়াও প্রায় একই। তিনিও বলেন, ‘ম্যাডামের অবস্থা চিন্তাই করতে পারছি না। ছেলে হারানোর কষ্ট সইবেন কীকরে!’
 
এই সংবাদে চলতি অবরোধ ও আসন্ন হরতালের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কী হবে- সেই আলোচনাও করছেন কেউ কেউ।  
   
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।