সাভার (ঢাকা): ‘আমার লক্ষ্যই ছিলো পেট্রোল বোমা ছুড়ে চলন্ত বাসের সব যাত্রীকে হত্যা করা। ভেবেছিলোম এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হবে।
এ পর্যন্ত চারটি বাসে পেট্রোল বোমা ছোড়ার পর ধামরাইতে গ্রেফতার শিবিরকর্মী মঞ্জুরুল মওলা সাংবাদিকদের কাছে বলছিলেন এসব কথা।
এসময় তার সামনের টেবিলে থরে থরে সাজানো ছিলো বোমা তৈরির নানা উপকরণ ও জিহাদী বই।
‘আমাকে মেরে ফেলতে পারেন, ক্রসফায়ারে দিতে পারেন, কিন্তু আমি আমার বড় ভাইদের নাম বলতে পারবো না। এটা বলা হলে আমার পরিবারের সদস্যরা জীবিত থাকবে না। ’
কারা বোমা ছোড়ার জন্যে পাঠিয়েছে- এ প্রশ্নের জবাবে এ কথাই বলছিলেন মঞ্জুরুল মওলা।
গ্রেফতারের পর শনিবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে ধামরাই থানায় স্থানীয় শরিফবাগ মাদ্রাসা শিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল মওলাকে আনা হয় সাংবাদিকদের সামনে। সেখানেই পুলিশের উপস্থিতিতে এ কথা বলছিলেন মঞ্জুরুল। তবে তার চোখেমুখে ছিলো না কোনো ভয়, উদ্বেগের চিহ্ন।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করে শরিফবাগ মাদ্রাসা থেকে। ওই মাদ্রাসার ফাজিল শ্রেণির শিক্ষার্থী তিনি।
তার বাবা জামাল উদ্দিন ওই মাদ্রাসারই সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে।
ওসি ফিরোজ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মঞ্জুরুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি তার সঙ্গে বেশকিছু জুনিয়র ছেলে গাড়ি পোড়ানোর কাজে যুক্ত।
গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাদ্রাসার পাশের এক বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু জিহাদী বই, লিফলেট, বোমা তৈরির উপকরণ জব্দ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে ধামরাইতে নাশকতাসহ গাড়ি ভাঙচুর ও পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ মারার কাজে জড়িত রয়েছে স্থানীয় শিবিরের সভাপতিসহ ২০ দলের নেতাকর্মীরা।
মঞ্জুরুল আমাদের কাছে স্বীকার করেছে এ পর্যন্ত চারটি গাড়ি পুড়িয়েছেন তিনি। চারটি ঘটনাতেই সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। কোনোটিতে নিজে পেট্রোল বোমা ছুড়েছেন, কোনটির তেল কিনেছেন আবার কোনোটির বা সামনে-পেছনে পুলিশের উপস্থিতির বিষয়টি মনিটরিং করেছেন।
আমরা চারটি মামলাতেই গ্রেফতার দেখিয়ে তার রিমান্ড চাওয়া হবে বলেও জানান ওসি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৫