ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

৩শ’ গজের বৃত্তে বিএনপির রাজনীতি, নির্ভর ককটেলে!

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৫
৩শ’ গজের বৃত্তে বিএনপির রাজনীতি, নির্ভর ককটেলে! ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ শহরের নতুনবাজার মোড় এলাকা। সব দোকান-পাট খোলা।

সড়কে অন্য দশ দিনের মতোই চলাচল করছে রিকশা, অটোরিকশাসহ সব ধরনের যান।

নতুনবাজার মোড়ের মাত্র ৩শ’ গজ দূরে হরিকিশোর রায় রোডের ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির কার্যালয়। সেখানে দলীয় নেতাকর্মীদের জটলা। প্রস্তুতি হরতাল সমর্থনে মিছিলের।

সব ঠিকঠাক। দলটির শীর্ষ নেতাদের নেতৃত্বে বের হওয়া মিছিলটি মাত্র ২শ’ গজ পেরিয়ে ঘুরে যাওয়ার সময় পেছন থেকে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলো ককটেল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো আতঙ্ক। পথচারীরা ভয়ে দিলেন দৌড়। পুলিশ ধাওয়া করলো মিছিলকারীদের। মুহুর্তেই ফাঁকা হয়ে গেলো দলীয় কার্যালয়। বুধবার সকাল ১১টার ঘটনা ছিল এমনই।

স্থানীয়রা জানায়, হরতাল বা অবরোধ; সব কর্মসূচিতেই শহরের হরিকিশোর রায় রোডের দলীয় কার্যালয় থেকে নতুনবাজার পায়রা চত্বরে ৩শ’ গজের বৃত্তেই দীর্ঘ দিন যাবত ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয় বিএনপির রাজনীতি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ইচ্ছামাফিক ককটেল বিস্ফোরণের সহিংসতাও।

বিপুল সংখ্যক পুলিশ এসব কর্মসূচিতে মোতায়েন থাকায় হরতালকারীরা বিশৃঙ্খলা ঘটালেই অ্যাকশন পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে কদিন বাদে বাদেই পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। তবুও থামানো যাচ্ছে না, ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক তৈরির ঘটনা।

সূত্র জানায়, গত ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় একই স্থানে পুলিশ ২০ দলের বিক্ষোভ মিছিলে বাঁধা দিলে টানা বিস্ফোরণ ঘটে ৭টি ককটেলের। বিএনপি-পুলিশ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় গোটা নতুনবাজার এলাকায় চরম আতঙ্কের পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ সময় পুলিশ আটক করে ৫ জনকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, চরম আতঙ্কের মধ্য দিয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে। পান থেকে চুন খসলেই ককটেল ফাটে। এমন পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা চলছে। এ বিষয়ে পুলিশের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন।

দলীয় কার্যালয়ের অফিস পিয়ন জুয়েল বাংলানিউজকে বলেন, এই তো ৬ মাস আগেও দলীয় কার্যালয় থেকে শহরের বিদ্যাময়ী স্কুল পর্যন্ত আমাদের মিছিল পৌঁছাতো। এখন ৫শ’ গজ থেকে কমে মিছিল গিয়ে ঠেকেছে মাত্র ২শ’ গজে। দলের শীর্ষ নেতাদের ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের মধ্যকার কোন্দল, বিভাজনের কারণেই ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে মিছিলের আওতা।

সূত্র জানায়, হরতাল কিংবা অবরোধ কর্মসূচির বেশিরভাগ সময়েই বিএনপির নেতাকর্মীদের দলীয় কার্যালয়ে বসে সময় কাটাতে দেখা গেলেও জামায়াত-শিবির বা জোটের অন্য নেতাকর্মীদের সেখানে দেখা যায় না।

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ বাংলানিউজকে বলেন, কৌশলগত কারণে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করছে। পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দলীয় নেতাকর্মীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে সব সময় ঝটিকা মিছিল করে।

তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় আমাদের কোনো নেতাকর্মী ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাননি। তবে দলের মধ্যে লুকায়িত গুপ্তচর আন্দোলন ভণ্ডুল কিংবা দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এ কাজ করে থাকতে পারেন। বিএনপি কখনোই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নয়, নিয়মান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলছে, চলবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।