বায়তুল মোকাররম থেকে: শুরু হয়েছে আরাফাত রহমান কোকোর জানাজা। মঙ্গলবার বাদ আসর বিকেল সোয়া ৫টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে শুরু হয় কোকোর জানাজা।
জানাজায় অংশ নেন বিএনপি-জামায়াত ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজার হাজার মানুষ। মসজিদে জায়গা না পেয়ে অসংখ্য মানুষ কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন বায়তুল মোকাররম সংলগ্ন রাস্তাগুলোতে।
বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেট দিয়ে প্রবেশ করে কোকোর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি।
জানাজা শেষে কিছুক্ষণের মধ্যেই কোকোর মরদেহ অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে বনানী কবরস্থানের উদ্দেশে।
জানাজাকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট, দক্ষিণ গেট, স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকা ও জুয়েলার্স মার্কেট এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ-ৠাব। এসব এলাকায় প্রিজন ভ্যান থেকে শুরু করে রায়টকার, এপিসি ও জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়।
জানাজায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না ঘটে সেজন্য বায়তুল মোকাররমের উত্তর ও দক্ষিণ গেটের দোকানপাট ও হকার ব্যবসায়ীদেরও তুলে দেওয়া হয়। বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও ৠাব সদস্য মোতায়েন করা হয় জুয়েলার্স মার্কেট, জিপিও ও পল্টন মোড় এলাকাতেও।
এর আগে জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেট থেকে বাংলানিউজের সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট মান্নান মারুফ জানান, জানাজা উপলক্ষ্যে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট থেকে পশ্চিম দিকে জিরো পয়েন্ট, পূর্ব দিকে স্টেডিয়াম মার্কেট ও এলাকা এবং দক্ষিণ-দক্ষিণ দিকে গুলিস্তান সিনেমা হল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে নেতাকর্মী ও উৎসুক জনতার ভিড়।
উত্তর গেট থেকে স্টাফ করেসপন্ডেন্ট নুরুল আমিন জানান, নেতাকর্মী ও উৎসুক জনতার ভিড় উত্তর গেট থেকে পশ্চিম দিকে পুরানা পল্টন মোড় ও তৎসংলগ্ন এলাকা এবং পূর্ব দিকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
শনিবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় মালয়েশিয়ায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দম্পতির কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকো। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে কোকোর মরদেহ।
পরিবারের পক্ষ থেকে কোকোর মরদেহ বুঝে নেন কোকোর চাচাতো ভাই মাহবুব আল আমিন ডিউ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন খালেদা জিয়া মনোনীত বিএনপির পাঁচ নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী।
বিমানবন্দরে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এমএ মান্নান, মীর মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন ও সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন।
বেলা সোয়া ১২টার দিকে তার মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স বিমানবন্দর থেকে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। দুপুর দেড়টার দিকে কোকোর মরদেহ গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে পৌঁছায়। কার্যালয়ের নিচতলার কনফারেন্স রুমে তার মরদেহ রাখা হয়। এ সময় মা খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
বেলা পৌনে ৩টার দিকে কোকোর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে বায়তুল মোকাররমের উদ্দেশে ছেড়ে আসে।
বায়তুল মোকাররমে নামাজে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে কোকোকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৫
** কোকোর মরদেহ বায়তুল মোকাররমে
** বায়তুল মোকাররমের পথে কোকোর মরদেহ
** জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা, বায়তুল মোকারমে কড়া নিরাপত্তা
** মায়ের কাছে কোকোর মরদেহ
** সারাদেশে কোকোর গায়েবানা জানাজা