ঢাকা: বর্তমানে গণতন্ত্র শুধু শেরে বাংলা নগর ও সংসদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এর বাইরে কোনো গণতন্ত্র নেই বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূত, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে জাপার কার্যালয়ের সামনে গণঅনশন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান এরশাদ। দেশের বর্তমান
জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির প্রতিবাদে গণঅনশন আয়োজন করে দলটি। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশনের নেতৃত্ব দেন এরশাদ।
এরশাদ বলেন, যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাহলে জাতীয় পার্টিই পারবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে। কোনো রাজনৈতিক দল পারবে না।
সাধারণ মানুষ শান্তি চায় উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, সারাদেশে আজ আগুন জ্বলছে, সাধারণ মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। দেশের মানুষ এর প্রতিকার চায়।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পার্টি কখনো মানুষ হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তাই ক্ষমতায় থাকাকালীন রাজনীতির কারণে কোনো সাধারণ মানুষ নিহত হননি। কিন্ত এখন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে জ্বালিয়ে মারা হচ্ছে।
এরশাদ বলেন, যারা দেশের মালিক, তাদের হত্যা করে দু’দল রাজনীতি করছে। এই হত্যাকাণ্ডের রাজনীতিকে না বলুন, না বলুন।
প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, দুই দল আগুন জ্বালিয়েছে। তারা আগুন নেভাতে পারবে না। আমরা নেভাব।
গণঅনশনের সংহতি প্রকাশ করে নিরাপদ সড়ক চাই’র চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রশ্ন, ক্ষমতার জন্য জিম্বি করে সাধারণ মানুষকে জ্বালিয়ে মারা এটা কেমন রাজনীতি?
তিনি বলেন, নিজেদের সুবিধামতো আমাদের পুড়িয়ে হত্যা করবেন এই অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে। এই অপরাজনীতি বন্ধ করুন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে ভালোবেসে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তাহলে আপনারা কেন পারবেন না?
জাপার নেতা ও শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বিশেষ অভিযান চালিয়ে এই ধ্বংসাত্মক জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন বন্ধ করা প্রয়োজন। সরকার যদি হরতাল-অবরোধ বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নেয় তাহলে জাতীয় পার্টি সহযোগিতা করবে।
অনশনে উপস্থিত পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল রহমান বলেন, গণতন্ত্রের জন্য সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের আমলে একটি মানুষও পুড়িয়ে মারা হয়নি। অথচ আজ আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। এটা কি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন?
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিদেশে নিরাপদে রেখে পড়ালেখা করানো হচ্ছে কিন্ত আজ সাধারণ মানুষের সন্তানদের শিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি গনমানুষের পার্টি। জাতীয় পার্টি যা বলে সেটা গণ মানুষের দাবি। আজ সারাদেশে আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়ানো করে সাধারণ মানুষ হত্যা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি দেশে ১৬ কোটি মানুষের চাহিদার সঙ্গে এক হয়ে এর প্রতিবাদ করছে।
অনশনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। সেখানে আরও ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফদ্দিন আহমেদ মিলন, এসএম ফয়সল চিস্তী, আবুল কালাম, এসএম মান্নান, উপদেষ্টা শফিক হায়দার, ব্যারিস্টার শামীম পাটোয়ারি, অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক, সালাউদ্দিন আহমেদ এমপি, অ্যাডভোকেট আলতাব হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৫