ঢাকা: চোখের চিকিৎসার জন্য আগামী সপ্তাহে লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আগামী শনি, রবি বা সোমবারের যে কোনো একদিন ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে উড়াল দিতে পারেন তিনি।
খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রার প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত কর্মকর্তা ও বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, বিএনপি চেয়ারপারসনের ভিসা প্রসেসিংসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও চিকিৎসকের সিডিউল চূড়ান্ত না হওয়া, বার কাউন্সিল নির্বাচন, মামলায় হাজিরা এবং গৃহ পরিচারিকা কুলসুম বেগমের ভিসা জটিলতার কারণে পিছিয়ে যায় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর।
সূত্রমতে, খালেদা জিয়ার চোখের চিকিৎসার জন্য লন্ডনের ‘মুল ফিল্ড’ হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছ থেকে এরই মধ্যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট জোগাড় করে ফেলেছেন সেখানে অবস্থানরত বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান। গত ২৬ আগস্ট সম্পন্ন হয়েছে বার কাউন্সিল নির্বাচন। ২৭ আগস্ট খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই অনুষ্ঠিত হয়েছে তার বিরুদ্ধে দুদকের করা দুর্নীতি মামলার শুনানি। গৃহ পরিচারিকা কুলসুম বেগমের ভিসা জটিলতাও দূর হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় বুধবার (২ আগস্ট) লন্ডন যেতে চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ পড়ে যাওয়ায় আগামী সপ্তাহে শনি থেকে সোমবারের মধ্যে লন্ডন যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন তিনি। সব কিছু ঠিক থাকলে ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, সব কিছু প্রক্রিয়াধীন আছে। তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। উনি যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাদের জানানো হবে।
এদিকে আগস্টের মাঝামাঝিতে খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরের সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরও হঠাৎ লন্ডনযাত্রা বাতিল করায় চারদিকে গুঞ্জন ওঠে, দলের ভাঙন ঠেকাতে সৌদি আরবের পর লন্ডন সফরও বাতিল করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
তবে এ ব্যাপারে খালেদা জিয়ার প্রতি অনুগত নেতারা বরাবরই বলে আসছিলেন, বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির অভ্যন্তরে কিছু ঝামেলা থাকলেও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে দল ভাঙার মত লোক এই মুহূর্তে বিএনপির রাজনীতিতে নেই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপিতে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা আছে। পদ-পদবির জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাও আছে। পরস্পরের প্রতি ভুল বোঝা-বুঝিও থাকতে পারে। কিন্তু দল ভাঙার মত মনমানসিকতা কারো আছে বলে মনে হয় না। সুতরাং ভাঙন ঠেকানোর জন্য ম্যাডাম লন্ডন সফর বাতিল বা পিছিয়ে দেবেন- এটি ঠিক নয়।
এদিকে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী সপ্তাহের যেদিনই খালেদা জিয়া লন্ডন যান, শুধু চিকিৎসাই তার মূল লক্ষ্য নয় বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র। চিকিৎসার পাশাপাশি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে দল পুনর্গঠন, মধ্যবর্তী নির্বাচন, পরবর্তী আন্দোলনের কৌশলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা এবং সরকার ও বিরোধী দলের গরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা করবেন বিএনপির চেয়ারপারসন। বিশেষ করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার।
এ ছাড়া দীর্ঘদিন পর পুত্রবধূ ডা. জোবায়দা রহমান, নাতনী জায়মা রহমানের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাবেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১,২০১৫
এজেড/জেডএম