ঢাকা: ভেতরে ভেতরে জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। সব কিছু ঠিক থাকলে সামনের শুষ্ক মৌসুমে বৃহৎ পরিসরেই জাতীয় কাউন্সিল করতে চায় দলটি।
কেন্দ্রীয় বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা এবং তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিল। প্রায় একই সময় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
এর ৩ বছর পর ২০১৩ সালে নির্ধারিত সময়েই আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি তাদের জাতীয় কাউন্সিল সেরে ফেলে।
কিন্তু নানা জটিলতায় ২০১৩ ও ২০১৪ সালে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও জাতীয় কাউন্সিল করতে ব্যর্থ হয় বিএনপি।
সূত্রমতে, গত ৬ জানুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯২ দিন অনির্দিষ্টকালের অবরোধ পালনের পর গুলশান কার্যালয় থেকে বেরিয়ে এসে দল পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
সে কারণেই গত ৫ মাস বেশ কয়েকটি জাতীয় ইস্যু সামনে এলেও দল বা জোটগত কোনো আন্দোলন কর্মসূচির কথা চিন্তা করেননি তিনি। এমনকি সর্বশেষ গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরও বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত জুন-জুলাই ও আগস্ট মাসে দেওয়া সব বক্তৃতায় খালেদা জিয়া বার বার বলেছেন দল পুনর্গঠনের কথা। ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানেও দল পুনর্গঠনের পর আন্দোলনে নামার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০ আগস্ট দলের যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহানকে দিয়ে ৭৫টি সাংগঠনিক জেলায় চিঠি পাঠিয়েছেন খালেদা জিয়া। ওই চিঠিতে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী শুষ্ক মৌসুমে জাতীয় কাউন্সিল করতে চান বলেই চলতি সেপ্টেম্বরেই তৃণমূল পুনর্গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মাঝা-মাঝি তৃনমূল বিএনপি পুনর্গঠন হলে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরেই জাতীয় কাউন্সিল করবেন খালেদা জিয়া।
বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী- প্রতি উপজেলা, থানা, পৌরসভা, জেলা, মহানগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত দুই জন নারী সদস্য, জাতীয় নির্বাহী ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সংসদীয় দলের সদস্যরা দলের জাতীয় কাউন্সিলে কাউন্সিলর হিসেবে ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা পাবেন।
সূত্রমতে, এসব দিক বিবেচনায় রেখেই ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই উপজেলা, থানা, পৌরসভা, মহানগরে কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া। এই নির্দেশের মধ্যেই নিহিত রয়েছে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে কাউন্সিল করার তাগিদ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেহেরপুর জেলা বিএনপি সভাপতি মো. আমজাদ হোসেন, পাবনা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার সুলতান মাহমুদ এবং সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোকসেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় কাউন্সিলের ব্যাপারে সরাসরি আমাদের কিছু বলা হয়নি। তবে তৃণমূল পুনর্গঠনে সময় বেঁধে দেওয়ায় আমরা অনুমান করছি, সামনের শুষ্ক মৌসুমেই জাতীয় কাউন্সিল করতে চান ম্যাডাম (খালেদা জিয়া)- সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার সর্বশেষ ও চূড়ান্ত ধাপ জাতীয় কাউন্সিল। আপনারা জানেন এরই মধ্যে সাংগঠনিক জেলাগুলোতে চিঠি দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি পুনর্গঠনের জন্য। ওগুলো হয়ে গেলেই আমরা জাতীয় কাউন্সিল করব। তবে জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৫
এজেড/জেডএম