ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নাম ২০ দল, সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি-জামায়াত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫
নাম ২০ দল, সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি-জামায়াত

ঢাকা: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় জামায়াত-বিএনপির যৌথ বৈঠকে। বাকি ১৮টি দল এসব বৈঠকের খবরও জানতে পারে না।

মাঝে মধ্যে ২০ দলীয় জোটের যেসব বৈঠক হয়, সেগুলো কেবলই লোক দেখানো। ফরমালিটি রক্ষার জন্য জোট নেতা এসব বৈঠক ডাকেন।   
 
বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটের বেশ কয়েকটি শরিক দলের শীর্ষ নেতার সঙ্গে আলাপ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
 
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট’র আদলে আরেকটি জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
 
এরই প্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল চার দলীয় জোট সম্প্রসারিত করে ১৮ দলীয় জোট গঠন করেন তিনি।
 
বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও খেলাফত মজলিশের সঙ্গে জোটে নতুন করে অন্তুর্ভুক্ত হয় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মুসলীম লীগ, ন্যাপ ভাসানী, ইসলামিক পার্টি, পিপলস লীগ (পিএল) ও ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল)।
 
এর পর বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের একাংশ ও সদ্য প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির একাংশ ১৮ দলীয় জোটে যোগ দিলে তা ২০ দলীয় জোটে পরিণত হয়।
 
সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটকে টেক্কা দিতে চার দলীয় জোটকে ২০ দলীয় জোটে রূপান্তরিত করলেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের বেলায় কেবল জামায়াতের সঙ্গেই শলা-পরামর্শ করে বিএনপি। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। এসব বৈঠকের খবর জোটের অন্য ১৮টি দল জানতেও পারে না।
 
কখনো খালেদা জিয়ার বাসায়, কখনো তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে, কখনোবা ওভার টেলিফোনে এসব বৈঠক হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে জামায়াত-বিএনপির আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ নেতারা বৈঠকে মিলিত হন।
 
গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে কর্মসূচি নির্ধারণের জন্য গত ৩০ আগস্ট গুলশান কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক হয়। খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে শরিক দলের প্রধানরা অংশ নেন। জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মওলানা আব্দুল হালিমও ছিলেন ওই বৈঠকে।  
 
জোটসূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে জামায়াত-বিএনপি ছাড়া বাকি ১৮টি দলের মধ্যে অন্তত ১২টি দল এক দিনের হরতাল দেওয়ার পক্ষে মত দেয়। বাকি ৬টি দল বিক্ষোভ কর্মসূচির কথা বলেন।
 
কিন্তু জামায়াতের প্রতিনিধি মওলানা আব্দুল হালিম কোনো কর্মসূচির কথাই বলেননি। জোট নেতা খালেদা জিয়ার মতো-ই অন্যদের বক্তব্য শুনেছেন তিনি।   
 
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০ দলীয় জোটের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে জামায়াতের এই নীরবতা নতুন নয়। বরাবরই জোটের বৈঠকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তর শক্তি জামায়াত। বৈঠকের আগে অথবা পরে জামায়াতের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন জোট নেতা খালেদা জিয়া। সেই বৈঠকেই নেওয়া হয় সিদ্ধান্ত। পরে তা মিডিয়াকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
 
সম্প্রতি গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ২০ দলের বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় জোটের এক শীর্ষ নেতা বাংলানিউজকে বলেন, জোটের বৈঠকগুলো জাস্ট ফরমালিটি রক্ষার জন্য। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিএনপি-জামায়াত আলাদা বৈঠক করে থাকে। সেখানে অন্য ১৮টি দলের কোনো অংশগ্রহণ থাকে না। ওসব বৈঠকের খবরও আমরা তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারি না।
 
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি বাংলানিউজকে বলেন, জোটের মধ্যে সাংগঠনিক শক্তি ও দলীয় অবস্থানের দিক থেকে বিএনপি-জামায়াত-ই সর্বেসর্বা। সাংগঠনিকভাবে তাদের সমকক্ষ কেউ নেই। তাই যে কোনো ধরনের গণমুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার জোটের পক্ষ থেকে তাদের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়।
 
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, যে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত জোটগতভাবেই হয়। যেহেতু সাংগঠনিকভাবে জামায়াত একটি শক্তিশালী দল, সেহেতু সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের পরামর্শ, মতামত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। এটা অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫
এজেড/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।