ঢাকা: এলেন সরকারের দেওয়া গাড়িতে। যে গাড়ির তেলও সরকারই সরবরাহ করে।
তিনি আর কেউ নন। খোদ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত জাতীয় পার্টির ক্ষমতাধর চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
তিনি বললেন, সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। কেউ নিরাপদ না। না শিশু, না বিদেশিরা। এমনকি মায়ের পেটের শিশুও নিরাপদ না।
সোমবার (৫ অক্টোবর) বনানীস্থ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই সরকারকে তুলোধুনা করেন এরশাদ। অথচ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে তিনি ব্যবহার করেন সিলভার কালারের (ঢাকা মেট্রো ঘ ১৩-৮৪৭৬) পাজেরো জিপ। গাড়িতে ঠিকই জাতীয় পতাকা ছিল। গাড়িটি প্রধানমন্ত্রীর দূত হিসেবে তার (এরশাদ) ব্যবহারের জন্য দিয়েছে সরকার।
সঙ্গত কারণেই সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন ওঠে, আপনিতো সরকারের অংশ, তাহলে এর দায়তো আপনার উপরও বর্তায়। আর আজকে সরকারের দেওয়া গাড়িতে করেই সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন, এমন প্রশ্নে কিছুটা থতমত খান সাবেক এই স্বৈরশাসক। কয়েক সেকেন্ড সামলে নিয়ে বলেন, প্রশ্নটি আমার জন্য খুবই সেনসেটিভ। আমি এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারব না।
পাশে বসে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, আমরা সরকারের কোনো ব্যর্থতার দায় নেব না। অনেক দেশেই বিরোধীদল থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হওয়ার নজির রয়েছে।
এরপর এরশাদ বলেন, প্রকৃত বিরোধীদল হতে হলে সরকার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা যথা সময়েই সরকার থেকে বের হব। আমিও বেরিয়ে আসব। জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরাও বেরিয়ে আসবে। তবে এখনও বেরিয়ে আসার সময় হয়নি।
তিনি আরও বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। বর্তমান সরকার এ সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনেও ব্যর্থ হয়েছে। সরকার মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
তবে সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিনস অব দ্য আর্থ’ ও ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ পাওয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান এরশাদ।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা ও তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ ব্যাপক সফলতা অর্জন করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি হিসেবে তার এ পুরস্কার পাওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে খুশি।
এরশাদ আরও বলেন, সন্ত্রাস, দলীয়করণ, টেন্ডারবাজি ও সুশাসনের অভাবে প্রধানমন্ত্রীর এ সমস্ত অর্জন ম্লান হয়ে যাচ্ছে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মাতাল হয়ে গুলি চালিয়ে শিশুকে আহত করেছে। কেন এমন হচ্ছে? কারণ তারা জানে, তাদের শাস্তি হবে না। বিচারহীনতার কারণেই অপরাধ বাড়ছে, বলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
এ সময় সাংবাদিকরা বলাবলি করছিলেন, ‘বেতনটা হালাল করলেন চাচা’। আরেকজন বলে উঠলেন, ‘কি চমৎকার রাজনীতি। চাচাই আছেন সবচেয়ে বেশি মজায়। যার খাচ্ছেন, তাকেই একহাত নিচ্ছেন। কিন্তু কেউ কিছু বলছেন না। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৫
এসআই/আরএম