ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘সংকটের’ সুযোগ কাজে লাগাতে চায় জাপা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৫
‘সংকটের’ সুযোগ কাজে লাগাতে চায় জাপা ছবি: দীপু মালাকার / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ‘চলমান সংকটের কারণে’ দেশে পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতারা। এ পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগাতে চায় জাপা।

এজন্য তৃণমূলে শক্তি সঞ্চার ও যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যানসহ নীতিনির্ধারক নেতারা।

তারা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা শুন্যের কোঠায়। বিএনপির রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে, সাংগঠনিক শক্তিও নেই। এ দু’দলকে মানুষ আর চায় না। তৃণমূলে যোগ্য প্রার্থী দিতে পারলে জাপা-ই আগামীতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাবে।

রোববার (১১ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে ‘রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা’য় অতিথিদের বক্তব্যে এমন চিত্রই উঠে এসেছে।
 
পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন- জাপা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

আরও বক্তব্য রাখেন- দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জি এম কাদের, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রেসিডেয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসিচব রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।

দেশে জাহেলিয়াত শাসন চলছে মন্তব্য করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, মানুষ এ শাসন থেকে মুক্তি চায়। মানুষ শঙ্কিত। অনিশ্চিত তাদের ভবিষ্যৎ। দু’জন বিদেশি হত্যা হয়েছে। যার কারণে রেড অ্যালার্টও জারি করা হয়েছে। এটা কলঙ্কজনক। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। বিদেশিদের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র নেই। যেটা আছে, সেটাও প্রাণহীন গণতন্ত্র। প্রশাসনে এত দলীয়করণ আর কখনো হয়নি। প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। এর মধ্যদিয়ে মেধাশুন্য জাতি তৈরি করছি আমরা। হজে যারা গেছে, অনেক কষ্ট-ভোগান্তি সহ্য করতে হয়েছে।

দেশে আইনের শাসন নেই মন্তব্য করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, জীবনের নিরাপত্তা নাই। অদ্ভূত দেশ। অদ্ভুত শাসন। মানুষ সত্যিকারার্থে মুক্তি চায়। মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা তাদের মুক্তি দিতে না পারলে আল্লাহর কাছে দায়ী থাকবো। সংগঠন শক্তিশালী করো। আমি বলছি, বেঁচে থাকলে আমরাই ক্ষমতায় যাবো। নিজেরা সচেষ্ট হলে, দল শক্তিশালী হলে কোনো বাধাই বাধা না। সবাই অপেক্ষা করছে, তৃণমূলে যোগ্য প্রার্থী দিতে পারলে নির্বাচনে জয়লাভ ব্যাপার না।

সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা এখন শুন্যের কোঠায়, মানুষ তাদের চায় না। সবাই অপেক্ষা করছে, আওয়ামী লীগ কখন বিদায় নেবে। এটা বড় সুযোগ। আমাদের এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। না হলে আমরাও অস্তিত্ব সংকটে পড়বো।

তিনি বলেন, দেশের বাইরে অনেক সম্মান পেয়েছি। বাংলাদেশের মানুষও আমাদের সম্মান করেছে। কিন্তু কোনো সরকারই আমাদের মূল্যায়ন করেনি। কারও কাছে আমরা সম্মান পাইনি। আমাদের বন্ধু কেউ না। দুর্বলের সঙ্গে কেউ হাত মেলায় না। আমাদের বন্ধু আমরাই। তোমরা শক্তি সঞ্চয় করো, সংগঠনকে শক্তিশালী করো। সবাই আমাদের পেছনে ঘুরবে।

এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, রাজনৈতিক ইতিহাস আমাদের একটা সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সেটা পরিবর্তনের সুযোগ। মানুষ এখন আর আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে চায় না। দলকে শক্তিশালী করতে পারলে ‍আগামীতে আমরাই ক্ষমতায় আসবো। এজন্য রংপুর অঞ্চলের সবক’টি আসন আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আমরা খুব শিগগিরই পাঁচটি জেলার সম্মেলন করবো। দলকে আরও শক্তিশালী করে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করবো।

তিনি বলেন, উড়াল সেতু-পদ্মা সেতুসহ অনেক কিছু হয়েছে। কিন্তু মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। বিদেশিরাও নিরাপদ নয়। সত্যিকারার্থে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হলে প্রশাসনকে দলের বাইরে আসতে হবে।

সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদের বলেন, দেশে যে অস্থিতিশীল অবস্থা, এর মধ্যে একটা পরিবর্তন হবে। এতে কারও উত্থান হবে, কারও পতন। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল বিলীনও হবে। ওই সময়টা কাজে লাগাতে হবে।

** সবাই জাপার পেছনে ঘুরবে

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৫
এসইউজে/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।