ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন

আওয়ামী লীগের তৃণমূলে উৎসবের আমেজ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৫
আওয়ামী লীগের তৃণমূলে উৎসবের আমেজ

ঢাকা: স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে ও দলের প্রতীকে করার সরকারি সিদ্ধান্তের পর তৃণমুল পর্যায়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে।



এদিকে দলীয়ভাবে নির্বাচনের ঘোষণা আসায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী সংখ্যাও বেড়ে গেছে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে মাঠে নেমেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় মনোনয়ন পেতে তারা জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ছোটাছুটি শুরু করেছেন বলেও জানা গেছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় কর্মীদের সঙ্গেও।

গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করতে স্থানীয় সরকার আইন (সংশোধন) অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ফলে আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় পৌরসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে দলীয় প্রতীক ও দলীয় মনোনয়নে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হলে তৃণমুলের নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক মূল্যায়ন বাড়বে বলেও তারা মনে করছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে তৃণমৃলের নেতা-কর্মীরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করায় একটা আলাদা সম্মানবোধ কাজ করছে তাদের মধ্যে। এ কারণে প্রার্থী হওয়ার প্রবণতাও বেড়ে গেছে।  

স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে এবং দলীয় প্রতীকে হওয়ার সিদ্ধান্তের পর তৃণমূলে এর প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে শরিয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মুন্সী বাংলানিউজকে বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের কথা শুনে প্রার্থীদের মধ্যে উৎসাহ বেড়ে গেছে। আগে নির্দলীয় নির্বাচন হতো তার পড়েও দলীয়ভাবেই প্রচার এসে যেত। এখন আইন করায় তা বৈধতা পেলো। অনেকেই এখন প্রার্থী হতে চাচ্ছেন।

পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাজাহান মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে- এ কারণে প্রার্থী সংখ্যা বেড়ে গেছে। অনেকেই প্রার্থী হতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সবাই চেষ্টা করছেন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার। কর্মীদের মধ্যেও উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। তফসিল ঘোষণা হলে উৎসাহ উদ্দীপনা আরও বেড়ে যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে। দলীয়ভাবে এবং দলের প্রতীকে নির্বাচনের সিদ্ধান্তের পর দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। আমাদের কাছে অনেকেই এসে বলছেন প্রার্থিতার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। মনে হচ্ছে তফসিল ঘোষণা করলে প্রার্থীরা লু হাওয়ার মতো ছুটে আসবে। এর ফলে তৃণমূলে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সংখ্যা বেড়ে যাবে। রাজনৈতিক সচেনতাও বাড়বে।

আওয়ামী লীগের বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে নেতা-কর্মীরা নির্বাচনে নেমেছেন। তাদের উৎসাহের যে কি প্রচণ্ড জোয়ার তৈরি হয়েছে সেটা আরও বোঝা যাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজনীতিতে দক্ষ, যোগ্য ও মেধাবীরা মনোনয়নের সুযোগ পাবেন। হঠাৎ করে নেতা হয়ে ওঠা বা ব্যবসায়ীদের মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ বন্ধ হবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হওয়ায় দল গতিশীল হবে। ইতোমধ্যে তৃণমূল নেতাকর্মীরা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের কর্মীদের কাছে যাচ্ছেন। দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন প্রার্থীরা একটা অন্যরকম মর্যাদা অনুভব করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৫
এসকে/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।