ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: হলের রুম দখল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে তিন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া এক কর্মীকে হলের তিন তলা থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অন্যদিকে, কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ায় জিয়া হলের ১০ ছাত্রকে বেধড়ক মারের অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বনী আমিন মোল্লার বিরুদ্ধে।
শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হলে এ দুই পৃথক ঘটনা ঘটে।
এ এফ রহমান হলের সংঘর্ষে আহতরা হলেন- ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও হল শাখা ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক এম এইচ তুষার খান, দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের হুমায়ুন কবির এবং সঙ্গীত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মাহবুবুল বাশার শুভ।
হলসূত্র জানায়, হল শাখা ছাত্রলীগের পাঠচক্র সম্পাদক ও দর্শন বিভাগের মাষ্টার্সের শিক্ষার্থী মাসুদ আলম এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও হল শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ইমরান ছাত্রলীগের হল শাখা কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী। হলের রুম দখল নিয়ে দুইজনের মধ্যে কিছুদিন থেকেই দ্বন্দ্ব চলছে। রুম দখলের জের ধরেই রাত ৩টার দিকে এ দুই গ্রুপের সংঘর্ষ বাধে।
মাসুদ আলম বাংলানিউজকে বলেন, রাত পৌনে ৪টার দিকে ইমরান, মিথুন, সম্রাটসহ আরও কয়েকজন আমার ‘ছোটভাইদের’ বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে এবং তুষার নামে আমার এক ‘ছোটভাইকে’ রড দিয়ে পিটিয়ে তিন তলা থেকে ফেলে দেয়।
এ বিষয়ে ইমরানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, হলের বাইরে মাসুদসহ আরও কয়েকজন আমার ওপর হামলা চালালে আমি হলে ঢুকে যাই। এসময় আমার ছোটভাইরা বেরিয়ে এসে তা প্রতিহত করে।
তুষারকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ব্যাপারে তিনি বলেন, হলে পরিস্থিতি খারাপ দেখে তিনি বাথরুমের দরজা দিয়ে নামতে গেলে পড়ে যায়। তাকে কেউ ফেলে দেয়নি।
অন্যদিকে, হল শাখা সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিনের মদতে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন মাসুদ।
অভিযোগের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রুহুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন গত চার-পাঁচদিন আমি হলেই যায়নি।
তার নিজের কর্মীরা গ্রুপিংয়ে জড়িয়ে পড়ায়, তিনি হলের কোনো ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন না বলেও জানান রুহুল আমিন।
সার্বিক ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে দুই-একদিনের মধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তুষারকে ফেলে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করে তিনি বলেন, আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সে নিজেই বাথরুমের পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়। একথা তুষার নিজে আমার কাছে স্বীকার করেছে।
এদিকে, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তিন নেতার মাজারে ফুল দিতে যাওয়ার কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেরি হওয়ায়, জিয়া হলের শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বনি আমিন মোল্লার বিরুদ্ধে।
আহতদের অভিযোগ, গেস্টরুমে নিয়ে রড দিয়ে বেধড়ক পেটান তিনি। এদের মধ্যে আশিক নামে এক শিক্ষার্থীর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগলে অজ্ঞান হয়ে যান। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে বনি আমিন মোল্লার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৫
এসএ/এসএস