নাটোর: শেষ ধাপে শনিবার (০৪ জুন) ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গুরুদাসপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৪৮টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মাহবুবুল কবির বাংলানিউজকে জানান, উপজেলায় মোট ৬৪টি কেন্দ্র রয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ বাংলানিউজকে জানান, প্রার্থীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও কেন্দ্র দখলের মানসিকতার কারণে প্রত্যেকটি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার নাজিরপুর, বিঘাঘাট, মশিন্দা, ধারাবারিষা ও চাপিলা ইউনিয়নগুলোতে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা হেভিওয়েট। তাদের সবারই নিজ নিজ এলাকায় আধিপত্য রয়েছে।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে নাজিরপুর ইউনিয়নে আইয়ুব আলী (নৌকা), ফিরোজ আহমেদ (ধানের শীষ), শওকত রানা লাবু (ঘোড়া), আব্দুস সামাদ (হাতপাখা) নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিয়াঘাট ইউনিয়নে মোজাম্মেল হক (নৌকা), শাহজাহান আলী (ধানের শীষ), মিজানুর রহমান সুজা (ঘোড়া) ও সরোয়ার হোসেন (হাতপাখা)।
খুবজীপুর ইউনিয়নে মনিরুল ইসলাম দোলন (নৌকা), মহসিন আলী (আনারস), দোরাপ আলী সরকার (ধানের শীষ) ও মো. নিজাম উদ্দিন (মোটরসাইকেল)।
মশিন্দা ইউনিয়নে মোস্তাফিজুর রহমান (নৌকা), আব্দুল বারী (ঘোড়া), আবুল কালাম আজাদ (ধানের শীষ), আফজাল ফকির (চশমা), ফরিদুল ইসলাম (আনারস), নজরুল ইসলাম (মশাল) ও খালেদ মাহমুদ হিরো (হাতুড়ি)।
ধারাবারিষা ইউনিয়নে আব্দুল মতিন (নৌকা), মন্ডল মেহেদী হাসান (ঘোড়া), মনিরুজ্জামান হেনা (ধানের শীষ) ও সাইফুল ইসলাম (আনারস) এবং চাপিলা ইউনিয়নে আলাল উদ্দিন ভুট্ট (নৌকা), আবু জাফর মিয়া (আনারস), জাফর ইকবাল নয়ন (ধানের শীষ) ও মো. মহিউদ্দীন (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া নাজিরপুর ইউনিয়নে সাধারণ আসনে ৪৪ জন ও সংরক্ষিত আসনে ১৩ জন, বিয়াঘাটে সাধারণ আসনে ৪৮ জন ও সংরক্ষিত আসনে ১২ জন, খুবজীপুরে সাধারণ আসনে ৩১ জন ও সংরক্ষিত আসনে ৮ জন, মশিন্দায় সাধারণ আসনে ৪৬ জন ও সংরক্ষিত আসনে ১২ জন, ধারাবারিষায় সাধারণ আসনে ৩৪ জন ও সংরক্ষিত আসনে ১৩ জন, চাপিলায় সাধারণ আসনে ৪১ জন ও সংরক্ষিত আসনে ১২ জনসহ মোট ২৪৪ জন সাধারণ প্রার্থী।
অপরদিকে সংরক্ষিত আসনে ৭০ জন প্রার্থী এবারের নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। প্রত্যেক ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থী ছাড়াও একটি ইউনিয়নে জাসদ, দু’টি ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও একটি ইউনিয়নে ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনিত প্রার্থী তাদের দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারী দলের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও অন্যান্য দলে একক প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে তিনজন রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে।
এরমধ্যে নাজিরপুর ও চাপিলা ইউনিয়নের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান, বিয়াঘাট ও খুবজীপুর ইউনিয়নের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম এবং মশিন্দা ও ধারাবারিষা ইউনিয়নের জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসার মাহবুবুল কবিরকে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৪জুন) সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪ পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে উপজেলার ৬৪টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। মোট এক লাখ ৩০ হাজার ৯২২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলীপ কুমার দাস বাংলানিউজকে জানান, ৪০ থেকে ৫০টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে রেখেছেন। তবে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে। পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবিসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য ভোট চলাকালে টহল দেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৬
এমজেডআর/জেডএস