ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

এক নেতার এক পদ, বেকায়দায় খালেদা

মান্নান মারুফ, সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৩ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৬
এক নেতার এক পদ, বেকায়দায় খালেদা

ঢাকা: দলীয় কাউন্সিলে ‘এক নেতার এক পদ’ এ ঘোষণা দিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন  খালেদা জিয়া। এ নিয়ে দলের অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে মন কষাকষি।

ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন পদবঞ্চিতরা।  খালেদা জিয়াও পড়ছেন বিপাকে। নতুন কমিটির পদপ্রাপ্তদের মধ্যে দুই একজন ছাড়া কেউ তার নির্দেশ মানছে না। নতুন পদ পেলেও পুরনো পদগুলো ছাড়ার কথা চিন্তাও করছেন না তারা।

এ ব্যাপারে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া বার বার তাগাদা দিলেও কোন নেতাই তার কথা আমলে নিচ্ছেন না। নব নির্বাচিত নেতারাও পাত্তা দিচ্ছেন না দলীয় প্রধানের এই নির্দেশ।  

নতুন কমিটিতে এখন পর্যন্ত পদ পাওয়া ৪৩ নেতার মধ্যে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ‍কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যুবদলের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া ও মহাসচিবের  কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।  
 
এদিকে নবনির্বাচিত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, মুজিবুর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, হারুনুর রশীদ ও শাহ লায়ন আসলাম চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ডা. শাহাদাত হোসেন, নজরুল ইসলাম মঞ্জু, অ্যাড. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিলকিস শিরিন, আসাদুল হাবিব দুলু, ইমরান সালেহ প্রিন্স ও শামা ওবায়েদ এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ,শফিকুল ইসলাম বাবুল, মাহবুবুর রহমান শামীম, আবুল হাশেম বক্কর, আব্দুল মমিন তালুকদার, শাহীন শওকত, অলিন্দ ইসলাম অরিক,জয়ন্তু কুমার কুণ্ড,অধ্যাপক আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহবুবুল হক নান্নু, দিলদার হোসেন সেলিম ,কলিম উদ্দিন মিলন, শামসুজ্জামান, জাহাঙ্গীর হোসেন, শরিফুল ইসলাম,ওয়ারেস আহমেদ আলী নেওয়াজ খৈয়ম, সেলিমুজ্জামান সেলিম, মোস্তাক হোসেন ,আব্দুল আউয়াল খানের নাম ঘোষণা করা হলেও তারা তাদের অন্য পদগুলো এখনও ছাড়েনি।  

কেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের নির্দেশ নবনির্বাচিত নেতারা মানছে না জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খোন্দকার মোশররফ হোসেন এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
 
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে একাধিক পদে কেউই থাকবে না। পদত্যাগ করার পর যে পদগুলো খালি হবে ঐ সব পদে কাকে দায়িত্ব দেয়া হবে এ সিদ্ধান্তের কারণেই সময় লাগছে। তবে রোজার পরেই সবাই একটি পদ রেখে বাকি পদ ছেড়ে দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বলেন রিজভী।
 
তবে ‘দপ্তরের দায়িত্ব ছাড়ছেন কবে?’ জানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‘এটা আমার পদ না। আমি দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। পদত্যাগ করারও কিছু নেই। এই পদে বা দায়িত্ব অন্য একজনকে দিলেই আমি সরে যাবো। কাকে দায়িত্ব দিবেন এটা জানেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া’- বলেন রিজভী।
 
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির নব নির্বাচিত যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বাংলানিউজকে বলেন, তিনি যুবদল সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। দলের নেত্রী ও মহাসচিবের কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।
 
দলের প্রধান বার বার নির্দেশ দেয়ার পরও নতুন কমিটিতে পদ পাওয়া নেতারা কেন একাধিক পদ আকড়ে আছেন?  জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এক ব্যক্তি  কেন্দ্রীয় বিএনপিতে, আবার জেলাতে বড় পদে আছেন, অঙ্গসংগঠনেও আছেন, এমনটা হবে না। দলে থাকতে হলে নেত্রীর নির্দেশ মেনে চলতে হবে। না মানলে তাদের বিরুদ্ধে দলই ব্যবস্থা নেবেন’- বলেন আলাল।  
 
নতুন পদ পাওয়া নেতারা এখনও নেত্রীর নির্দেশ না মানায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম।
 
‘কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত। তাও প্রায় তিনমাস হয়ে গেছে। তারপরও পদ আকড়ে ধরে থাকা ঠিক নয়’- যোগ করেন সাবেক ছাত্র নেতা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৬
এমএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।