ঢাকা: গুলশানসহ সম্প্রতিকালে দেশের সব জঙ্গি হামলার সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট।
বুধবার (১৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম কওমী মাদ্রাসার কিছু সংখ্যক ছাত্রকে জামায়াত ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু সর্বনাশী হামলা করাবে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণ-যুবকদের দিয়ে। তাদের (জামায়াত) ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রস্থল হলো লন্ডন। দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া চৌধুরী মঈন উদ্দিনের কিছু অন্ধ অনুসারী লন্ডনে বসে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করবে। বাস্তবে সেটিই ঘটেছে।
গত ৪০ বছরের মধ্যে একদিনের জন্যও স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থামায় নাই উল্লেখ করে মিছবাহুর রহমান বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের বছর দু’য়েক পর এই ব্যারিস্টার রাজ্জাক ও চৌধুরী মঈন উদ্দিন রাজাকারকূল শিরোমণি গোলাম আযমের নির্দেশে আরাকান থেকে বাংলাদেশে হামলা চালাবার পরিকল্পনা করেছিল। এই হামলার উদ্দেশে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী জামায়াত নেতারা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে গভীর আতাত গড়ে তোলে।
তিনি বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, জঙ্গি হামলা আন্তর্জাতিক কোনো কারণে নয়, বরং জামায়াতে ইসলামীর সুদীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীনতাবিরোধী মুসলীম লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো বাংলাদেশকে মেনে নিয়েছিল, কিন্তু জামায়াত একদিনের জন্য বাংলাদেশকে মেনে নেয়নি।
বাংলাদেশে সব জঙ্গি সংগঠনের মাদার অর্গানাইজেশন জামায়াত উল্লেখ করে মিছবাহুর রহমান বলেন, যে সমস্ত তরুণ ধরা পড়ছে, তাদেরকে জেএমবি, হিজবুত তাহরীর অথবা আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্ত এদের সবার মাদার অর্গানাইজেশন যে জামায়াত, সে কথা বলা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে একমাত্র জামায়াতই তথাকথিত আন্তর্জাতিক ইসলামী সংগঠন সৌদি আরবের আল ইকওয়ান, মিশরের ইকওয়ানুল মুসলিমীন, সিরিয়ার মুসলীম ব্রাদারহুড এবং আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মনিরুজ্জামান রাব্বানী, অতিরিক্ত মহাসচিব ফিরোজ আহমেদ আতিক, দলের সিনিয়র নেতা মওলানা মাহদুম হোসেন, মওলানা কাজী মাসুদুর রহমান ও মওলানা আসাদুল্লাহ তাহের সিদ্দিকী।
কর্মসূচি
দেশের মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৩০ জুলাই ঢাকায় ছাত্র শিক্ষক সমাবেশ, ১ আগস্ট ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন, ৬ আগস্ট ঢাকায় মা’ সমাবেশ ও ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মহাসম্মেলন। এর আগে ১৬ জুলাই থেকে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়রম্যানসহ শীর্ষ নেতারা সারাদেশ সফর করে বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদের খতিবদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৬
এজেড/এসএইচ