ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘গায়েবি আওয়াজের অপেক্ষায় বিএনপি!’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৬
‘গায়েবি আওয়াজের অপেক্ষায় বিএনপি!’

ঢাকা: জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিতেই দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে বিএনপির। সবকিছুতেই পিছিয়ে পড়া দলটি এ ইস্যুতে কবে নাগাদ কর্মূসচি নিয়ে মাঠে নামবে- তা কেউ বলতে পারছেন না।

কর্মসূচির ধরন নিয়েও নেতাকর্মীরা রয়েছেন অন্ধকারে। তাদের কেউ কেউ রসিকতার ছলে বলছেন, ‘গায়েবি আওয়াজের অপেক্ষায় রয়েছে বিএনপি’।
 
গত ০১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলার পর ০৩ জুলাই গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন খালেদা জিয়া। এর ৯ দিন পর ১৩ জুলাই ২০ দলীয় জোট ও বিএনপির শীর্ষ নেতা এবং ১৪ জুলাই বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
 
ঘটনার পর এরই মধ্যে পার হয়ে গেছে ২০ দিন। সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল, গণজাগরণ মঞ্চ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচি পালন করেছেন।
 
কিন্তু এ ইস্যুতে এখন পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি পালন করেনি বিএনপি। একটি সংবাদ সম্মেলন আর তিনটি বৈঠক করেই নীরব রয়েছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্রিটেনের হাউস অব লর্ডসের আমন্ত্রণে এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন।
 
সূত্রমতে, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্য আগে? নাকি জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচি আগে?- এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি খালেদা জিয়া। তাছাড়া জাতীয় ঐক্য হলে সেটি বিএনপির জাতীয় ঐক্য, নাকি ২০ দলীয় জোটের নেতৃ্ত্বে জাতীয় ঐক্য- তা নিয়েও দোটানায় রয়েছেন তিনি।
 
খালেদা জিয়ার এমন কালক্ষেপণে ২০ দলীয় জোটের শরিকরাও রয়েছে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে। জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আলাদা কর্মসূচি দিতে পারছে না তারা। আবার এতো বড় একটা জাতীয় ইস্যুতে নীরবও থাকতে পারছে না। এরই মধ্যে জোটের শরিক খেলাফত মজলিস নিজেদের মতো করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে, ঘোষণা দিয়েছে ওলামা-মাশায়েখ সমাবেশের।
 
জোটের আরেক শরিক বাংলাদেশ ন্যাপ জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে দেশের সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দেবে তারা। তবে জোটগত শৃঙ্খলা অক্ষুণ্ন রাখতে বড় ধরনের কর্মসূচি আপাতত দিচ্ছে না দলটি।
 
কিন্তু বিএনপির এই কালক্ষেপণে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতীতেও এমন অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যু এসেছে- যেগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে নিতে নতুন ইস্যু এসে সামনে দাঁড়িয়েছে।
 
তারা বলছ্নে, ২০১২ সালে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলের আগ্রাসন শুরু হলে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু বিএনপি যেদিন আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে ঢাকার রাজপথে কালো পতাকা মিছিল করে, তার কয়েকদিন আগেই জাতিসংঘের মধ্যস্ততায় ফিলিস্তিনের ওপর হামলা বন্ধ করে ইসরাইল।
 
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারও দেখা যাবে, গুলশান হামলার প্রতিবাদে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি মাঠ নামতে নামতে আরেকটি নতুন ইস্যু এসে হাজির হবে। তখন এই ইস্যুতে কর্মসূচি পালনের আর কোনো যৌক্তিকতা থাকবে না।
 
কেউ কেউ আবার বলছেন, ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে মানুষের মধ্যে যে কৌতুহল ও আগ্রহ থাকে, একটা সময় পর সেটি আর থাকে না। গুলশান ও শোলাকিয়ার ঘটনায় আরো ১৫/২০ পর কোনো কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি মাঠে নামলে সে কর্মসূচির ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো কৌতুহল বা আগ্রহ থাকবে না।

 
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘এরই মধ্যে জোট ও দলের শীর্ষ নেতা এবং বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন খালেদা জিয়া। তারা সবাই ম্যাডামকে দায়িত্ব দিয়েছেন কর্মসূচির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে। আরো কারো সঙ্গে কোনো পরামর্শ করার থাকলে সেটি করে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তিনি’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৬
এজেড/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।